লালমনিরহাটে‘ফ্রেন্ডশিপ সোস্যাল ওয়ার্ক’ সংগঠনের সদস্যদের উদ্যোগে ৪ শত ফিট বাঁশের সাঁকো নির্মান

লালমনিরহাট প্রতিনিধি:  লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নে ‘ফ্রেন্ডশিপ সোস্যাল ওয়ার্ক’ নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা নিজ উদ্যোগে ৪ শত ফিট বাঁশের সাঁকো তৈরী করছেন। স্থানীয় ওই সংগঠনটির সদস্যরা বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে বাঁশ সংগ্রহ করে সাঁকো নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।
 সাঁকো তৈরীর এ উদ্যোগ দেখে অনেকেই ‘ফ্রেন্ডশিপ সোস্যাল ওয়াকর্’ নামে সংগঠনটির পাশে দাঁড়িয়েছে। এ সাঁকোটি নির্মাণের ফলে তিন গ্রামের ৬/৭ হাজার লোকজনের চলাচলের দুর্ভোগ কমে যাবে।
ওই সংগঠনের সভাপতি ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নুরনবী জানান, গড্ডিমারী ইউনিয়নের মধ্য গড্ডিমারী গ্রামে একটি ব্রীজ ২০১৫ সালের বন্যায় ভেঙ্গে যায়।
 ফলে সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের সাথে গড্ডিমারী ইউনিয়নের যোগাযোগের একটি পথ বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৭ সালের বন্যায় ভাঙ্গা ব্রীজটির দুই পাশে প্রায় সাড়ে ৩ শত ফিট রাস্তাও ভেঙ্গে যায়। ফলে মিলনবাজার আবুল হোসেন আহম্মেদ মাদ্রাসা, গড্ডিমারী দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়, মধ্য গড্ডিমারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ ৩ গ্রামের লোকজনকে গড্ডিমারী মেডিকেল মোড় হয়ে ঘুরে চলা চল করতে হচ্ছে। এলাকাবাসীর দুর্ভোগ দেখেই আমাদের এ বাঁশের সাঁকো তৈরীর পরিকল্পনা।
ওই সংগঠনের সম্পাদক জিয়াউর রহমান বিটিসি নিউজকে জানান, ভাঙ্গা ব্রীজ ও রাস্তায় একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করা হলেও গত ৪ বছরেও তা নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। ফলে আমরা নিজ উদ্যোগে ৪ শত ফিট বাঁশের সাকো নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহন করি।
 সংগঠনের সদস্যরা বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে ঘুরে ইতোমধ্যে সাড়ে ৩ শতাধিক বাঁশ সংগ্রহ করেছে। ওই বাঁশ দিয়ে শুরু করা হয়েছে সাঁকো নির্মাণের কাজ। সাঁকোটি নির্মাণ কাজ শেষ করতে আরো কয়েক দিন সময় লাগবে এবং দুই শতাধিক বাঁশের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি সাঁকো নির্মাণের জন্য দক্ষ শ্রমিক প্রয়োজন। তাই শ্রমিক নিতে আর্থিক সংকটও দেখা দিয়েছে।
ওই এলাকার জাবেদ আলী, রফিকুল ইসলাম বিটিসি নিউজকে জানান, ব্রীজ ও রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ায় আমাদের গড্ডিমারী মেডিকেল মোড় ঘুরে বড়খাতা হাট ও মিলনবাজার যেতে হয়। সাঁকোটি নির্মাণ হলে দুরত্ব কমে যাবে এবং সময়ও কম লাগবে।
মিলনবাজার আবুল হোসেন আহম্মেদ মাদ্রাসার শিক্ষার্থী রোকসানা আক্তার, সফিকুল ইসলাম, মোশারফ হোসেন বলেন, ব্রীজ ও রাস্তাটি ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে গত ৪ বছর ধরে ৫ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে মাদ্রাসায় যেতে হচ্ছে। এলাকার বড় ভাইরা আমাদের কষ্ট দেখে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করছেন।
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেন কলেজের অধ্যক্ষ আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বিটিসি নিউজকে বলেন, এলাকার লোকজনের দুর্ভোগ দেখে ফ্রেন্ডশিপ সোস্যাল ওয়ার্ক’র সদস্যরা ৪ শত ফিট বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করছেন। এ সাঁকো নির্মাণের ফলে ওই এলাকার প্রায় ৬/৭ হাজার লোকজনের চলাচলের দুভোর্গ কমে যাবে। তাদের এ কাজে অনেকেই সহযোগিতা করছেন।
গড্ডিমারী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ আতিয়ার রহমান বিটিসি নিউজকে জানান, ওই স্থানে ব্রীজ নির্মানের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আপাতত স্থানীয় ছেলেরা একটি বাঁশের সাঁকো তৈরী করেছেন যা প্রশংসিত।
হাতীবান্ধার ইউএনও সামিউল আমিন বিটিসি নিউজকে জানান, প্রতি বছর বন্যায় তিস্তা নদী তীরবর্তী অনেক ব্রীজ ও রাস্তা ভেঙ্গে যায়। স্থানীয় ভাবে এলাকার লোকজন বাঁশের সাঁকো নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে বিষয়টি আমি জানতে পেয়েছি। তাদের সহযোগিতার প্রয়োজন হলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর লালমনিরহাট প্রতিনিধি হাসানুজ্জামান হাসান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.