লকডাউন উপক্ষো করে ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে হাজার মানুষের ঢল

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: নেই স্বাস্থ্যবিধি নেই করোনার ভয় মানছেনা কেউ লকডাউন। সব কিছু উপেক্ষা করে ব্রহ্মপুত্রের উপর মানুষের ঢল নেমেছে। লাখো মানুষের পদচারনায় মুখোরিত চিলমারীর ব্রহ্মপুত্রের ডানতীর।
ঈদের আনন্দসহ এলাকার সৌর্ন্দয্য উপভোগ করতে কুড়িগ্রামের চিলমারীসহ আশপাশের উপজেলার ও বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঈদের দিন থেকে বিনোদন প্রেমী হাজারো মানুষ ভিড় করছেন চিলমারী ব্রহ্মপুত্র নদের ডানতীর রক্ষা প্রকল্প, চিলমারী নদী বন্দরসহ বিভিন্ন বিনোদনের তীর গুলোতে।
বিনোদন প্রেমীদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো ডানতীর ও নদী বন্দর এলাকা। শুধু ঈদের দিনটিতেই নয় প্রতিদিনেই হাজার হাজার নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী ও শিশু-কিশোরসহ সব বয়সেরই বিনোদন প্রেমী দর্শনার্থীদের পদচারণায় ও মিলন মেলায় মুখরিত ও প্রাঞ্জলিত হয়ে উঠেছে ব্রহ্মপুত্র ডানতীর এবং আশপাশের এলাকা।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ঈদের দিন থেকে আজ পর্যন্ত অন্তত কয়েক লক্ষ বিনোদন প্রেমীর ভিড়ে পুরো ডানতীর এলাকা মুখরিত হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন এই এলাকায় বিভিন্ন জেলা উপজেলার হাজার হাজার দর্শনার্থীদের পদভারে এর আশে পাশের এলাকাও মুখরিত থাকছে। ডনতীর রক্ষা প্রকল্প উপজেলার চিত্র বদলে দিয়েছে আর ফিরে আসতে শুরু করেছে সেই চিলমারীর বন্দরের ঐতিহ্য। ক্রমেই পরিচিতি লাভ করছে ব্রহ্মপুত্রের বিনোদন পার্ক হিসেবে।
আগত দর্শনার্থী ও ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য গড়ে উঠেছে ভাসমান কয়েকটি দোকান। উপজেলার সকল স্তরের মানুষসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষের মতে, ব্রহ্মপুত্র নদের ডানতীরে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠার অপার সম্ভাবনা রয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা, পাবলিক টয়লেট, যাত্রী ছাউনি নির্মাণসহ বিভিন্ন বিষয়ে পদপে নেওয়া প্রয়োজন।
নিরাপত্তা জনিত কারণে দূর থেকে আসা লোকজন কিছুটা সমস্যা মনে করলেও হাজার হাজার দর্শনার্থীর আগমনে আশেপাশের এলাকায় উপচে পড়া ভিড় ল্য করা গেছে। দর্শনার্থীরা ডানতীর এলাকায় একটি পার্কসহ পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার দাবি জানান।
এব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত আলী সরকার বীর বিক্রম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, চিলমারী উপজেলা বৃটিশ আমল থেকে নানা কারণে গুরত্বপূর্ণ। সে সময় গড়ে ওঠে নদীবন্দর। মারওয়ারি ব্যবসায়ীরা এ নদীবন্দর হয়ে তাদের পণ্য আনা-নেয়া করতেন। শীতে ঝাঁকে ঝাঁকে বিভিন্ন প্রজাতির পাখী এই এলাকাকে প্রাকৃতিক ভাবে অতুলনীয় করে তোলে।
জেলেরা দলে দলে মৎস্য শিকারে ব্যস্ত থাকে, ভ্রমন পিপাসুদের জন্য তা বাড়তি আনন্দ দেয়। এখানে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠলে আবারও প্রাণ ফিরে পাবে বন্দর এবং সরকারও এ এলাকা থেকে আয় করতে পারবে। সাবেক এমপি গোলাম হাবিব বলেন, চিলমারী বন্দরের ঐতিহ্য বহু প্রাচীন।
বৃটিশ ভারতে ব্রহ্মপুত্র নদ বেয়ে কোলকাতা হ‘তে পন্য ও যাত্রীবাহী জাহাজ সমূহ চিলমারী অতিক্রম করে অবিভক্ত আসামের নদী বন্দরে গিয়ে পৌঁছাত, চিলমারী বন্দর ছিল ঐ সমস্ত জাহাজের চেকিং বন্দর। বিখ্যাত পল্লী সংগীতের সম্রাট আব্বাছ উদ্দিন চিলমারীকে তার গানের মাধ্যমে পূর্ব ও পশ্চিম বঙ্গে চিলমারী নামটিকে পরিচিত করে গেছেন।
এছাড়াও জানা যায় এখানকার বালুরাশির মধ্যে মূল্যবান পদার্থ আছে, যা বানিজ্যিক ভাবে আহরন যোগ্য। পর্যটন বিভাগ এই এলাকায় ভ্রমন পিয়াসুদের জন্য অতি সহজেই ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে। চিলমারীকে একটি পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুললে ভ্রমন পিয়াসু অসংখ্য নর-নারী, কিশোর তরুন তরুনিরা চিত্ত বিনোদনের সুযোগ লাভ করবে।
এদিকে স্বাস্থ্যবিধি বা লকডাউন উপেক্ষা করে লোকজনের ঢল নামায়, এদিকে যেমন আনন্দ দিচ্ছে উপরদিকে করেনাসহ বিভিন্ন ভয়ভীতির আতঙ্ক বিরাজ করছে এলাকাবাসীর মাঝে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি মো. হাফিজুর রহমান হৃদয়। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.