রাণীনগরে ইরি-বোরো ধান কাটা শুরু

 

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। গত সপ্তাহ জুড়ে বৈরি আবহাওয়া ও বৃষ্টিপাতের কারণে উঠতি পাকা ধান নিয়ে কৃষকরা বিপাকে থাকলেও মেঘলা আকাশের কারণে রোদের অভাবে মাঠপর্যায়ের কৃষকরা শম্ভব গতিতে বোরো ধান কাটা মাড়াই শুরু করেছে। দাম ও ফলন ভাল হওয়ায় কৃষকরা বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছে। তবে পুরোদমে কাটা মাড়াই শুরু হতে আর কয়েক দিন সময় লাগবে।

গত শনিবার সকালে কালবৈশাখী ঝড় আর বৃষ্টিপাত হওয়ায় উঠতি পাকা ধান পড়ে যাওয়ায় ধান কাটা শ্রমিকদের নির্ধারিত দরের ছেয়ে প্রতি বিঘায় কিছু বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে কৃষকদের। ঝড় বৃষ্টির কারণে পাকা ধান নিয়ে কৃষকরা কিছুটা শংকায় থাকলেও শ্রমিক সংকট আরোও তা ভেবে তুলছে। প্রতি বছর এই সময় দেশের দক্ষিণ ও উওরাঞ্চল বিশেষ করে ভেরামারা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, পোড়াদহ,চিলাহাটি,ডোমার সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ধান কাটা শ্রমিক আসলেও চলতি মৌসুমে ধান কাটা শ্রমিক এখনো আসতে শুরু করেনি। ফলে ধারাণা করা হচ্ছে চলতি ইরি-বোরো পাকা ধান কাটা মৌসুমে শ্রমিক সংকটের আশংকা রয়েছে।

উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে দিগন্ত জুড়ে পাকা ধানের সোনালী রঙের ঝিলিক ছটাচ্ছে। যতদূর চোখ যায় শুধু পাকা ধানের সোনালী রঙের চোখ ধাঁধানো দৃশ্য। মাঠ জুড়ে পাকা ধান বলে দিচ্ছে গ্রামবাংলার কৃষকের মাথার ঘাম পায়ে ফেলা ইরি-বোরো ধান চাষের দৃশ্য। চলতি মৌসুমে ইরি-বোরো ধানের ভাল ফলনের বুকভরা আশা করছে কৃষকরা। বাজারে নতুন ধানের আমদানি হওয়ায় টুকটাক কেনা-বেচা শুরু হলেও দর ভাল থাকাই কৃষকরা খুশি। জিরা জাতের সুরু ধান মান ভেদে ৮ শ’ ৭০ টাকা পর্যন্ত হাটে-বাজারে বেচা-কেনা হচ্ছে।
রাণীনগর কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে ৮টি ইউনিয়নে ১৮ হাজার ৪ শ’ ২৫ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সঠিক সময়ে চারা লাগানো, নিবিড় পরিচর্যা, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, যথা সময়ে সেচ দেওয়া, সার সংকট না থাকায় উপজেলার কৃষকরা জিরাশাইল, খাটো-১০, স্বর্ণা-৫ জাতের ধান চাষ করেছে। নতুন ধান কাটার শুরুতেই বিঘা প্রতি ২০/২২ মন হারে ধান উৎপাদন হচ্ছে। নওগাঁর ছোট যমুনা নদী বেষ্টিত নিম্নাঞ্চল হওয়ায় উর্বরা পলি মাটির জমিতে ইরি-বোরো ধান ব্যাপক আকারে চাষ হয়েছে। এছাড়াও বিল মুনসুর, বিল চৌর, সিম্বা, খাগড়া, আতাইকুলা, গোনা, রক্তদহ বিল, একডালা, কালীগ্রাম, রাতোয়াল, ভাটকৈ মাঠে সরজমিনে ঘুড়ে দেখা গেছে পাকা ধানের সোনালী রং।

উপজেলার সিম্বা গ্রামের কৃষক মো: ময়নুল ইসলাম জানান, আমি এবছর ১৩ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছি। কৃষি বিভাগের পরামর্শ যথা সময়ে ভাল পরিচর্যা করায় আমার জমিতে ধান ভাল হয়েছে। ইতিমধ্যেই ধান কাটা শুরু করেছি ফলন ভালই হচ্ছে।
উপজেলার আবাদপুকুর হাটের ধান ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন জানান, রবিবার হাটবার হলেও তেমন ধান আমদানি শুরু হয়নি। তবে টুকটাক বেচা-কেনা হয়েছে, জিরা জাতের ধান প্রতিমন মান ভেদে ৮ শ’ ৫০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রয় হচ্ছে। দুই চার দিনের মধ্যে পুরোদমে ধান আমদানি হবে বলে আশা করছি।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.