রাজশাহী প্রেসক্লাব সভাপতির বাড়িতে হামলা-লুটপাট ১১ দিনেও মালামাল উদ্ধার-গ্রেপ্তার নেই, ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে স্মারকলিপি


নিজস্ব প্রতিবেদক: আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক) ফাউন্ডেশন, রাজশাহীর প্রধান উপদেষ্টা ও রাজশাহী প্রেসক্লাব সভাপতি সাইদুর রহমানের বাড়ি দখলের চেষ্টা, হামলা ও লুটপাটের ঘটনার ১১ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করে নি।

আজ সোমবার বিকেল ৪টার দিকে আইনানুগত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে মহানগর পুলিশ কমিশনার বরবারে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

এ সময় আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক) ফাউন্ডেশন, রাজশাহীর প্রধান উপদেষ্টা, রাজশাহী প্রেসক্লাব সভাপতি সাইদুর রহমান, সেক্টর কামান্ডার ফোরাম মহানগর শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান আলী বরজাহান, রাজশাহী প্রেসক্লাব ও জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদ সাধারণ সম্পাদক আসলাম-উদ-দৌলা, দৈনিক উপাচার পত্রিকার সম্পাদক ড. আবু ইউসুফ সেলিম, শিক্ষা স্কুল এ- কলেজ অধ্যক্ষ ইব্রাহিম হোসেন, সিনিয়র সাংবাদিক জিএম হাসান-ই-সালাম বাবুল, জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হক দুখুসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবন্দ উপস্থিত ছিলেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, গত ৩-১০-২০১৯ ইং বৃহস্পতিবার সকাল আনুমানিক ৯টার সময় আমার বাসার মালিক আব্দুর রাজ্জাক, (পিতা:মৃত রহমতুল্লাহ, সাং: ফুদকিপাড়া, থানা: বোয়ালিয়া, রাজশাহী মহানগর, রাজশাহী) ২০/২৫জন সন্ত্রাসী নিয়ে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানাধীন ফুদকি পাড়া, বালুরঘাট এলাকার হোল্ডিং নম্বর-১১৬ বাসায় এসে দরজার তালা ভেঙ্গে ঘরের ভেতরে জোরপূর্বক অনুপ্রবেশ করে।

তিনি সন্ত্রাসীদের নিয়ে প্রবেশ করে প্রথমেই মোবাইল ফোন কেড়ে নেন। এরপর সন্ত্রাসীরা প্রেসক্লাব সভাপতিকে আটকিয়ে রেখে ঘরের আসবাবপত্র দোতলা থেকে রাস্তায় ফেলে দেয় এবং আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক) অফিসের দুই রুমের আসবাবপত্র, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, লুটপাট করে নেয়।

সন্ত্রাসীরা আলমারীতে গচ্ছিত রাখা নগদ ২ লক্ষ টাকা চুরি করে নেয়। আলমারীতে রাখা আমেরিকান তিনটি দামি সেন্ট (এ্যারামিস) চুরি করে নেয়। সব মিলিয়ে চুরি সহ ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা। দু’ঘন্টা ধরে সন্ত্রাসীরা তান্ডব চালাতে থাকে। এ সময় প্রেসক্লাব সভাপতির মোবাইল বন্ধ পাওয়ার কারনে রাজশাহী প্রেসক্লাবের কর্মচারী হানিফ দ্রুত বাসায় আসে এবং দেখতে পায় যে বাড়ির মালিক আব্দুর রাজ্জাক ও তার ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা লুটপাট চালাচ্ছে। বাসার মালামাল দোতলা থেকে রাস্তায় ফেলে দিচ্ছে।

হানিফ দ্রত রাজশাহী প্রেসক্লাব সদস্যদের ও বোয়ালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জকে এই সন্ত্রাসী হামলা ও লুটপাটের বিষয়টি জানায়। বোয়ালিয়া থানা থেকে বাসায় পুলিশের ২/৩ মিনিটের মধ্যে আসা সম্ভব কিন্তু বোয়ালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ খবর পাওয়ার ৪০ মিনিট পর পুলিশ পাঠান। ঘটনাস্থলে এসে মালোপাড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ ইফতেখার আলম বাড়ির মালিক সন্ত্রাসীদের পক্ষে অবস্থান নেন এবং প্রেসক্লাব সভাপতিকে বাসা থেকে উচ্ছেদের অপচেষ্টা চালান।

এ সময় ইফতেখার আলমকে জানানো হয় যে,“বাড়ির মালিকের সাথে আদালতে রেন্ট কন্ট্রোল মামলা চলছে। মামলা নম্বর (১৬/২০১৯)। আদালতের নির্দেশে কোর্টে বাড়ি ভাড়া জমা দেয়া হয়।” জবাবে ইফতেখার চার্জ করে বলেন, “রেন্ট কন্ট্রোল মামলা বুঝিঁ না, আপনি বাড়ি ছেড়ে দেন।” এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকসহ লোকজন প্রতিবাদ করলে ইফতেখার আলম তাদের সাথেও দুর্ব্যবহার করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। ঘটনার পরপরই রাজশাহী বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি অভিযোগ পাঠালেও বোয়ালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ নিবারন চন্দ্র বর্মণ রহস্যজনককারনে এখন পর্যন্ত অভিযোগ এন্ট্রি করেন নি বা সন্ত্রাসীদের কাউকেই গ্রেফতারের উদ্যগনেন নি।

এমনকি লুট হয়ে যাওয়া টাকা ও মালামালগুলো উদ্ধার করেননি। পুরো ঘটনায় মনে হয়েছে যে, বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নিবারন চন্দ্র বর্মণ ও মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইফতেখারকে ম্যানেজ করেই বাড়ির মালিক আব্দুর রাজ্জাক এই সন্ত্রাসী হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে। ঘটনার পরেরদিন ৪ অক্টোবর শুক্রবার সন্ধ্যায় মালোপাড়া পুলিশ ফাঁরির ইনচার্জ ইফতেখার আলম রাজশাহী প্রেসক্লাবে এসে প্রেসক্লাব সভাপতিকে এক গায়েবী ডিআইজির নাম বলে হুমকি দেয় যে,“বাড়ি ছেড়ে না দিলে আপনার ক্ষতি হবে।”

স্মারকলিপিতে ঘটনার সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও লুট হয়ে যাওয়া মালামাল উদ্ধারের পাশাপাশি বোয়ালিয়া থানা ওসি ও মালোপাড়া ফাড়ির ইনচার্জের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।

সংবাদ প্রেরক সাইদুর রহমান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.