রাজশাহীতে প্রতিবন্ধিভাতা নিতে ব্যাংকে উপচেপরা ভীড়, মানছেনা কেউ স্বাস্থ্যবিধি


নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতিদিন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। এছাড়াও মৃত্যুর মিছিল কম নয়। এ অবস্থায় সরকারের পক্ষ থেকে জনগণকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে।

সেইসাথে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে বাহিরে চলাচল করতে বলা হয়েছে। এই নিয়ম মানার জন্য আইনশৃংখলা বাহিনী ও প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রতিনিয়ত তারা জনগণকে সচেতন করে যাচ্ছেন।

রাস্তায় মাইকিং করছেন। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করছেন। তাদের পক্ষ থেকে মাস্ক বিতরণও করা হচ্ছে। কিন্তু জনগণ সরকারের এই বিধি নিষেধকে প্রতিনিয়ত অমান্য করে চলছে। ফলে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।

রাজশাহী শহরের প্রতিদিন বাড়ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। গতকাল শনিবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) ল্যাবে আরও ৪৯ জনের নমুনায় করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে।

গতকাল শনিবার (১৮ জুলাই) এ ল্যাবে ১৮১ জনের নমুনা পরীক্ষায় হয়। নতুন আক্রান্ত ৪৯ জনের মধ্যে রাজশাহীর ৩৯ জন নাটোরের ১০ জন। রামেকের উপাধ্যক্ষ ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. বুলবুল হাসান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, রাজশাহীর নতুন ৩৯ জন করোনা আক্রান্ত রোগীর মধ্যে ৩২ জনের বাড়ি মহানগরীতে।

রাজশাহীতে নতুন ৩৯ জন শনাক্ত হওয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২ হাজার ৭৮ জনে দাঁড়াল। এরমধ্যে মধ্যে ১ হাজার ৬৪৪ জন মহানগরীর বাসিন্দা। অথচ বিগত ঈদ-উল ফিতরের সময়তেও এই মহানগরীতে ছিলনা কোন করোনা রোগি। এই সামান্য ব্যবধানে এই অবস্থা। জনগণ যদি এখনো সচেতন না হয় তাহলে কি অবস্থা দাঁড়াবে একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই জানেন।

রাজশাহী মহানগরীর করোনার এই চিত্রের মধ্যেও আজ রোববার (১৯ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লক্ষ্মীপুর গ্রেটার রোডের সোনালী ব্যাংকে কোন রকম স্বাস্থ্যবিধি না মেনে প্রতিবন্ধি ও তাদের অভিভাবকদের ভাতা উত্তোলন করতে দেখা যায়।

বেশীরভাগ মানুষের মুখে নেই মাস্ক। সেখানে পুলিশের পক্ষ থেকে বার বার সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে লাইনে দাঁড়ানোর জন্য বলা হলেও কার্যত এই ব্যক্তিদের তা মানতে দেখা যায়নি। এক জনের শরীরের সাথে লাগয়াভাবে আরেক জনকে দাঁড়িয়ে দেখা দেখা যায়। এই সকল লোকের মধ্যে এক ইঞ্চি ব্যবধানও দেখা যায়নি।

এই নিয়ে জানতে চাইলে ডিউটিরত এক পুলিশ সদস্য বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, ১ থেকে১০নম্বর ওয়ার্ডের সকল প্রতিবন্ধি একসাথে এই ব্যাংকে টাকা উত্তোলন করতে আসায় এই অবস্থ্রা সৃষ্টি হয়েছে।

ভাতা নিতে আসা অভিভাবক চম্পা, রোকেয়া, আবেদা, আব্দুল খালেক, জয়নাল, শরিফুল ও সখিনাসহ আরো অনেকে বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, ১-১০ ওয়ার্ডের সকল প্রতিবন্ধিকে একদিনে একসাথে একই ব্যাংকে টাকা সিতে বলায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে প্রতিটি ওয়ার্ডে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের যেয়ে কিংবা মোবাইলের মাধ্যমে তাদের ভাতার টাকা প্রদান করার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ করেন কার্ডধারী ও তাদের অভিভাবকগণ।

এ নিয়ে ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুজ্জামান টুকু বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, এই ভয়াবহ অবস্থায় একটি ব্যাংকে সবাইকে ডেকে একসাথে ভাতা প্রদান করা কোন ভাবেই উচিৎ নয়। বর্তমানে করোনার কারনে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি রয়েছে। জনগণকে করোনার কবল থেকে রক্ষা করতে ব্যাংক কর্মকর্তাদের এসির মধ্যে থেকে বেড়িয়ে এসে বিভিন্ন স্কুল এবং কিংবা ফাঁকা মাঠে গিয়ে শুধু প্রতিবন্ধি ভাতা নয় সকল প্রকার ভাতা প্রদান করার কথা বলেন তিনি।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মোঃ ফজলুল করিম (বাবলু) রাজশাহী।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.