রাজশাহীতে পুরোদমে আলু উত্তোলনের শুরু, করোনা ভাইরাসের কারণে আতংকিত কৃষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: আলু চাষের জন্য রাজশাহীর সুনাম রয়েছে। দেশের মোট চাহিদার সিংহ ভাগ আলু উত্তরাঞ্চলের কৃষকরা সরবরাহ করে থাকে। এখন আলু উত্তোলনের সময় তাই  জেলার আলুচাষিরা পুরোদমে জমি থেকে আলু তোলা শুরু করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত দাম ভাল পেয়ে কৃষকরা খুশি হলেও সারা বিশ্বে করোনাভাইরাসের কারণে আলুর দাম শেষ পর্যন্ত থাকবে কি না তা নিয়ে দুচিন্তায় রয়েছেন বলে গণমাধ্যমকে কৃষকরা জানান। চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় জেলায় আলুর পর্যাপ্ত আবাদ হয়েছে এবং ফলনও ভাল হবে বলে আশা করছেন কৃষকরা।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার রাজশাহী জেলায় আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৫ হাজার ৫৪৮ হেক্টর জমিতে। বর্তমান বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ১১ থেকে ১৩ টাকা কেজি পর্যন্ত। কৃষকেরা জানান, এরকম বাজার থাকলে আলু চাষিদের লোকসান হবেনা, কিছুটা হলেও লাভ হবে। তবে কৃষকেরা জানান, করোনার কারণে বাজারে আলুর দাম কমে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। আলুর উৎপাদনও অনেক বেড়েছে প্রতি বিঘায় ৫০ থেকে ৬০ বস্তা (৮৫ কেজির বস্তা) ফলন হচ্ছে।

রাজশাহী জেলার মাঠে মাঠে এখন আলু তোলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। ইতোমধ্যে রাজশাহীর হিমাগারগুলো আলু সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। আলুচাষিরা জানান, প্রতিবিঘা আলুতে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে আর বর্তমানে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকায় আলু বিক্রি হচ্ছে।

পবা উপজেলার বায়ার আলুচাষি আবদুর রাজ্জাক বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, তিনি প্রায় ১৫ বছর থেকে আলু চাষ করেন এবারও তিনি তানোর উপজেলার চান্দুড়িয়ায় প্রায় ৩০০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। গত বছর আলুতে কিছুটা লোকসান হয়েছে তবে এবার দাম এরকম থাকলে লাভ হবে বলে তিনি জানান।

তানোরের চাপড়ার আলুচাষি হিরো, লালপুর গ্রামের নাজিমুদ্দিন বাবু, বিলশহর গ্রামের মিজানুর রহমান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, এবার আলুর জমিতে তুলনামূলক রোগবালাই কম হয়েছে, ফলনও ভাল হচ্ছে। এরকম দাম থাকলে এবার আলুতে লোকসান হবেনা। তবে তারা এও বলেন সারা বিশ্বে করোনার প্রভাবে আলুর দাম কমে গেলে আলুতে কৃষকদের লোকসান হবে।

এদিকে রাজশাহী হিমাগার মালিক সমিতির সভাপতি আবু বাক্কার আলী বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, মোট উৎপাদনকৃত আলুর ৩০ ভাগ সংরক্ষণ হয়ে থাকে হিমাগারে। রাজশাহী জেলায় মোট ২৮টি হিমাগার রয়েছে এরমধ্যে তানোর উপজেলায় রয়েছে ৫টি। প্রতিটি হিমাগারে প্রায় ১৫ হাজার টন আলু সংরক্ষণ হয়ে থাকে। সে হিসাব অনুয়ায়ী মোট সোয়া ৪ লাখ টন আলু সংরক্ষণ করা যায়। তিনি আরো জানান, ৫৫ কেজির বস্তায় ভাড়া নেয়া হয়ে থাকে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা ।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামছুল হক বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, রাজশাহীর মাটি আলু চাষের জন্য উপযোগী। তিনি জানান, তাদের কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকেদের পাশে থেকে তাদের বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা করেছেন। এ বছর রোগবালাই কম হয়েছে, ফলনও ভাল হচ্ছে। আলু তোলার পরে ওই জমিতে কৃষকেরা বোরো ধান এবং ভুট্টা চাষ করতে পারবেন এতে খরচ কম হবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মোঃ মাইনুর রহমান (মিন্টু) রাজশাহী।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.