রাজশাহীতে কাউন্সিলরের সহযোগীতায় জমি দখলের অভিযোগ ডাক্তারের বিরুদ্ধে!

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মহানগরীতে কাউন্সিলরের সহযোগীতায় জমি দখলের অভিযোগ ওঠেছে এক ডাক্তারের বিরুদ্ধে। সোমবার মহানগীর শাহমখদুম থানাধিন বড় বনগ্রাম শেখ পাড়া এলাকায় এ দখল কার্যক্রম চলাতে দেখা যায়।
সোমবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডাম ট্রাকের প্রায় ১০ ট্রাক ভরাট ফেলা হয়েছে জমিটিতে। এছাড়াও সিমানা প্রাচিরের জন্য ঢালাই পিলার নিমার্নের লক্ষ্যে জমি খুড়ে একধিক স্থানে গর্ত করা হয়েছে।
সরেজমিনে কথা হয় দায়িত্বে থাকা শাহীনের সাথে। তিনি বলেন, আমি এবং মোঃ সাহাদত আলী শাহু (কাউন্সিলর) এই কাজের সাথে সংযুক্ত।
তিনি আরও বলেন, ২০১৯ সালে হাবিবুল্লাহ্ আল ইমরানের সাথে ফয়সালা করা জন্য ঢাকায় গিয়ে সাক্ষাৎ করেছি। কিন্তু সে অপোষ মিমাংসা করেন নি।
ভূক্তভোগী জমির মালিক হাবিবুল্লাহ্ আল ইমরান (৪৯)। তিনি পেশায় একজন ফ্যাশন ডিজাইনার।
জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত প্রতিচ্ছবি অংকন ও সংরক্ষণের মহাতী প্রয়াসে স্বীকৃতি স্বরুপ মেধাসম্পদ সুরক্ষা সম্মননা পুরুস্কার লাভ করেন ২০২০ সালে। তিনি নিজে বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত প্রতিচ্ছবির একমাত্র কপিরাইট হোল্ডার।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারে সাস্কৃতিক মন্ত্রানালয় থেকে তিনি জাতীয় সনদ প্রাপ্ত হয়েছেন।
তিনি রাজশাহী মহানগীর চন্দ্রিমা থানার পদ্মা আবাসিক এলাকার মৃত ইমরান আলীর ছেলে।
ভূক্তভোগী জমির মালিক হাবিবুল্লাহ্ আল ইমরান জানান, ১৯৬৪ সালে আমার দাদা মৃত পাতান আলী শাহ্ ও তার ভাই আসগর আলী শাহ্ বড় বনগ্রাম মৌজায় ২.৬৯ একর (৮ বিঘা ৩ কাঠা) জমি ক্রয় করেন। এরপর ১৯৭৭ সালে আমার দাদা মারা গেলে পৈত্রিক সূত্রে ওই জমির মালিকানা লাভ করেন আমার পিতা মৃত ইমরান আলী। এরপর আমার বাবা ১৯৯৭ সালে পরলোক গমন করেন। সেই থেকে পৈত্রিক সূত্রে আমি এবং আমার ভাই আব্দুল্লাহ আল ইমরান (৫১) ও আমার বড় বোন ইয়াসমিন সুলতানা (৫৩) মোট ৪বিঘা ১কাঠা অর্থাৎ (১.৩৪৫০ একর) জমির মালিকানা লাভ করি। এরপর আমার দুই ভাই ও এক বোন মিলে জমিটি ওয়ারিশ সূত্রে বন্টন করে সহকারী কমিশনার ভূমি অফিসে নামজারি করে নিজ নিজ নামে খারিজ করি। আমরা নিয়মিত খাজনা পরিশোধও করে আসছি। শাহীন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি এসে ছিলেন আমার জমির (৪৪৩২ দাগ) পাওয়ার নিতে। কোন আপোষ বা মিমাংসার জন্য নহে।
এ ব্যপারে জানতে মুঠোফেনে ফোনে দেয়া হলে (কাউন্সিলর) মোঃ সাহাদত আলী শাহু ফোন রিসিভ করেননি। ফলে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায় নি।
সম্প্রতী, ডাক্তার এনামুল হক একই জমিতে নিজ নামে খারিজ দেখিয়ে মালিকানা দাবি করছেন। বর্তমানে জমিটির উপর ইমারত নির্মানের লক্ষ্যে ভরাট ফেলছেন। কিন্তু রাজশাহী জেলা প্রশাসকের হুকুম দখল শাখা এল.এ কেস নং-১/২০০২-২০০৩, হুকুম দখল মামলায় সরকার আরএস-৩০২৭ নং দাগের ৯ শতাংশ (৬ কাঠার একটু কম) জমি অধিগ্রহণ করেন।
অধিগ্রহণ করা জমিটি নওদাঁপাড়া বাস টার্মিনাল হতে ভদ্রা মোড় পর্যন্ত মহাসড়ক হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। সেই রাস্তার মধ্যে মূলত ডা. এনামুল হকের জমি রয়েছে বলে দাবি করেন হাবিবুল্লাহ্ আল ইমরান।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে ডা. এনামুক হক বলেন, ২০১৭ সালে তহমিনা ও আনোয়ারা নামের দুই নারীর কাছ থেকে (২২.১০) ১৩ কাঠা জমি ক্রয় করি। তবে আমার জমিটি মহাসড়কের জন্য সরকার অধিগ্রহণ করে নাই। আমার জমিতে কোন প্রকার ত্রুটি নাই। আমি ইতিমধ্যেই আরডিএ’ কতৃক প্ল্যান পাস করেছি। সেখানে একটি চক্ষু হাসপাতাল নির্মান করা হবে। সেই লক্ষেই ভরাট ফেলা দিয়ে কার্যক্রম শুরু করেছি। আমার জমিতে কোন ওয়ারিশ থাকলে দ্বিধা করবো না জমির অংশ ছেড়ে দেব।
তিনি আরও বলেন, ওই জমির ওয়ারিদের সাথে বসতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরিবেশ না থাকায় বসিনি। চক্ষু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার জন্য সকল শ্রেণী পেশার মানুষের কাছে সহযোগী কামনা করেন তিনি।
এ ব্যপারে রাসিক (১৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর) মোঃ সাহাদত আলী শাহু’র দারস্থ হয়েছিলাম। তিনি আমার জমির সম্পর্ণ কাগজপত্র দেখেছেন। বলেছেন, আপনার কাগজপত্রে কোন সমস্যা নাই, কাজ শুরু করে দেন। তার নিদের্শেই কাজ শুরু করেছি। কাজের দেখভাল ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী সাপ্লাই দিচ্ছে শাহীন।
মঙ্গলবার সকালে ভুক্তভোগীর আবেদনের পেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত (এডিএম) ডা. এনামুলের হকের বিরুদ্ধে ১৪৫ ধারা জারি করেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো.মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.