রাজশাহীতে কাউন্সিলর’র কার্যালয়ে রাতের আধাঁরে জানালা ভেঙে রহস্যজনক চুরি 

বিশেষ প্রতিনিধি: রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) এর এক ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ের জানালা ভেঙে চুরির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার (০৫ আগস্ট) দিবাগত রাতে নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ে এই চুরির ঘটনাটি ঘটেছে। চোর অফিসের একটি কম্পিউটার নিয়ে গেছে, এছাড়া চোর আর কোন কিছুই নেয়নি।
এর আগে চলতি বছরের গত (২৯ জুলাই) রাতে এই কার্যালয়ের একটি জানালা এবং শৌচাগারের একটি ভেন্টিলেটর ভেঙে ফেলে। তবে শব্দে দোতলায় থাকা বাড়ির মালিকের ঘুম ভেঙে যায়। তিনি উঠলে নিচতলা থেকে চোর কৌশলে পালিয়ে যায়। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই কার্যালয়টিতে চুরির ঘটনা ঘটল। কাউন্সিলর মাহাতাব হোসেন চৌধুরী এই চুরির ঘটনাকে রহস্যজনক বলে জানিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার (০৬ আগস্ট) সকালে সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায়, কার্যালয়টির যে ঘরে কাউন্সিলর বসেন চোরেরা প্রথমে সেই ঘরের জানালা ভাঙ্গে, এরপর ভেতরে ঢোকে। তারপর চোরেরা এই ঘরের দরজা ভেঙে সাধারণ শাখায় যায়। সেখান থেকে একটি কম্পিউটারের মনিটর ও সিপিইউ নিয়ে যায়।
তবে কাউন্সিলরের বসার ঘরেই একটি কম্পিউটার ছিল। শো-কেসে সাজানো ছিল দামি দামি শো-পিস। ছিল এসি, টেবিল ফ্যানসহ আরও নানা জিনিস। এই ঘর থেকে কিছুই নেয়া হয়নি। সাধারণ শাখার ঘরটি থেকেও অন্য কোন জিনিস নেয়া হয়নি। শুধু একটি কম্পিউটারই নেয়া হয়েছে।
কাউন্সিলর মাহাতাব হোসেন চৌধুরী বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, চুরির ঘটনাটি খুবই রহস্যজনক। প্রথম দিন ব্যর্থ হওয়ায় পরে আবার চেষ্টা করে চোর সফল হয়েছে। চোরের টার্গেট ছিল শুধু অফিসের কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটারটি, শুধু সেটিই নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আমার ঘরেই একটি কম্পিউটার ছিল। চাইলে চোর সেটিই নিয়ে যেতে পারত। দরজা ভেঙে কষ্ট করে আরেক ঘরে যাওয়া লাগত না।
মাহাতাব হোসেন চৌধুরী বলেন, ২৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকাটি একসময় মাদকের আখড়া ছিল। সবার তালিকা করে তাদের বুঝিয়ে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করানোর মাধ্যমে মাদকের বিস্তার কিছুটা কমানো হয়েছিল। এখন আবার মাদকের বিস্তার বেড়েছে। মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকাটি ওই কম্পিউটারেই ছিল। অফিসের গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টও ছিল। সেই কম্পিউটারটিই নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি ধারণা করছেন, তালিকা গায়েব করতে মাদক ব্যবসায়ীরাই এই চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে। এছাড়া তাকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যেও চুরির ঘটনাটি ঘটতে পারে।
কাউন্সিলর আরও বলেন, একই রাতে তার কার্যালয়সহ এ ওয়ার্ডের আরও দুটি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছে। মাদকের টাকা সংগ্রহ করতে মাদকসেবীরা এসব চুরিতে জড়িয়ে পড়ছে। পুলিশের সামনেই এখন মাদকের কেনাবেচা হয়, পুলিশ কিছু বলে না। আমরা দেখলেও ভয়ে কিছু বলতে পারি না। কারণ: তাদের সঙ্গে পুলিশ আছে। এ অবস্থা চলতে পারে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগরীর বোয়ালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নিবারন চন্দ্র বর্মন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, কাউন্সিলরের কার্যালয়ে চুরির ঘটনায় ওয়ার্ড সচিব মশিউর রহমান বাদী হয়ে একটি অভিযোগ করেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। চোরকে ধরে কম্পিউটার উদ্ধারের জোর চেষ্টা চলছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি রুহুল আমীন খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.