রাঙ্গামাটি ভ্রমন নিয়ে কিছু কথা, পথে পথে এক নতুন  অভিজ্ঞতা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:  রাঙ্গামাটির রিজার্ভ বাজার লঞ্চ ঘাট থেকেই শুরু হয় আমাদের রাঙ্গামাটি ভ্রমণ। সেখানে আগে থেকেই ইঞ্জিন চালিত নৌকা ভাড়া করা ছিল। বেশ ভালই ছিল।
গন্তব্য,ঝুলন্ত ব্রিজ, রাজবন বিহার এবং চাকমা রাজবাড়ি। সময়ের অভাবে সেদিন এ জায়গাই ঘোরা সম্ভব ছিল। কারণ যাত্রা শুরু করতে আমাদের অনেক দেরী হয়ে যায় এবং বলা হয়েছিল সন্ধ্যার আগে ফিরে আসতে হবে।
আনুমানিক সকাল ১১টার দিকে আমাদের নৌকা কাপ্তাই লেকের উপর দিয়ে ভাসতে শুরু করে। প্রথমেই যে বিষয়টি আমাদের বিরক্ত করে তুলেছিল, সেটি ছিল ইঞ্জিনের ভটভট শব্দ। কান একদম ঝালা-পালা। নৌকা যখন আস্তে আস্তে বাজার ছেড়ে লেকের জলের বুকে যাচ্ছিল, ততোক্ষণে ঐ শব্দ আমাদের সহ্য হয়ে গেছে।
কারণ চারিপাশে বিশাল জলরাশি, খোলা আকাশ আর সুউচ্চ পাহাড়সারি মন্ত্রমুগ্ধের মতো আমাদেরকে তাদের কাছে টেনে নিয়ে গিয়েছিল। আমরা হারিয়ে গিয়েছিলাম প্রকৃতির মাঝে।
নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যরে এক অপার লীলাভূমি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা। এখানে পাহাড়ের পাদদেশে আঁকাবাঁকা সড়ক ও কোল ঘেঁষে ঘুমিয়ে আছে শান্ত জলের হ্রদ। সীমানার ওপারে নীল আকাশ মিতালী করে হ্রদের সাথে, চুমু খায় পাহাড়ের বুকে। এখানে চলে পাহাড় নদী আর হ্রদের এক অপূর্ব মিলনমেলা। চারিপাশ আঁকা যেন জল রংয়ের ছবি।
রাঙ্গামাটিতে ভ্রমন করার জন্য রয়েছে অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান। এর মধ্যে কাপ্তাই লেক, পর্যটন মোটেল, ডিসি বাংলো, ঝুলন্ত ব্রিজ, পেদা টিংটিং, সুবলং ঝর্না, রাজবাড়ি, রাজবন বিহার, উপজাতীয় জাদুঘর, কাপ্তাই হাইড্রো ইলেক্ট্রিক প্রজেক্ট, কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
এরমধ্যে রাঙ্গামাটি লেকের নীল সবুজ পানি, ঝুলন্ত ব্রিজ, সুবলং ছোট ও বড় ঝর্না ও রাজবন বিহার দেখার উদ্দেশ্যে দুই দিনের ভ্রমন যাত্রা।
প্রথম দিন ১৩ আগষ্ট মঙ্গলবার রাত ১২ টায় রাঙ্গামাটির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু আমরা চারজনের প্রথমে চলে গেলাম ঝুলন্ত ব্রিজ কিন্তু পানির কারনে সেটাকে আর ঝুলন্ত দেখা যাচ্ছে না। পানি ব্রিজ থেকে একটু নিচে। ঝুলন্ত ব্রিজ এর অইখানে কিছু স্ট্রিমার আছে আর ওরা প্যাকেজ আকারে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাবে।

আমরা ২৯৫০টাকার প্যাকেজ টা নিয়ে শুরু করে দিলাম স্ট্রিমারে যাত্রা। অসম্ভব সুন্দর এক দৃশ্য আর অসাধারন এক অনুভূতি। সব মিলিয়ে কিছুক্ষনের জন্য হারিয়ে গেছিলাম এক অপুরুপ সোন্দর্যের দেশে।

প্রথমেই নামলাম সুবলং ঝর্নায়।উপরে কেউ উঠছে না আবার কয়েক জন নিষেধ করতেছে কিন্তু কে শুনে কার কথা, জায়গা আছে তাই দেরি না করে উঠে গেলাম উপরে ( জায়গা পিচ্ছিল ছিল তবে উপরের দিকে পিচ্ছিল না। ) গোসল করলাম ঝর্নার পানিতে আহ কি যে ভাল লাগতেছিল ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।

পথ দেখানোর পর এবার সবাই উঠা শুরু করে দিল। কিছুক্ষন উপভোগ করার পর নেমে গেলাম আর স্ট্রিমারে রওনা শুরু করে দিলাম ওমনেই শুরু হলো বৃষ্টি , ভিজা কাপড় এ বসে গেলাম স্ট্রিমারের সামনে আর উপভোগ করতে লাগলাম বৃষ্টির পানি।

অদুরেই দেখতে পাচ্ছি সাদা মেঘ পাহাডের সাথে লেগে আছে, কপাল খারাপ ওইখানে যেতে পারলাম না । না হয় মেঘের রাজ্য থেকে ও ঘুরে আসতে পারতাম।

৫ঘন্টা ঘুরার কথা থাকলে ও আমরা ৩ ঘন্টা ঘুরেই চলে আসলাম। এদিকে আবার রাত হলে ফিরতে অসুবিধার মধ্যে পড়তে হবে। তাই দেরী না করে আবার রাঙ্গামাটির উদ্দেশ্য রওনা হয়ে গেলাম।

পরের দিন সকাল কাপ্তাই লেক দেখে বাসার উদ্দেশ্য রওনা হলাম । এই ছিল আমাদের ভ্রমন কাহিনীর সংক্ষিপ্ত বিবরণ।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর হবিগঞ্জ প্রতিনিধি মোঃ জুনাইদ চৌধুরী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.