রথীশ চন্দ্র ভৌমিক হত্যাকান্ডের প্রধান আসামী কামরুলের আত্মহত্যা

 

রংপুর ব্যুরো: স্ত্রীর পরকীয়ার জেরে খুন হওয়া জাপানি নাগরিক হোসিও কোনি ও মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলার সরকার পক্ষের প্রধান কৌসলী, রংপুর বিশেষ জজ আদালতের বিশেষ পিপি এবং জেলা আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকোট রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনা হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামী কারাগারে বন্দি স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার দীপা ভৌমিকের পরকিয়া প্রেমিক কামরুল ইসলাম কারাগারে বিছানার চাদর রশি বানিয়ে জানালায় পেচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

পরে তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর আগে গত ১৪ এপ্রিল এই মামলার অন্যতম আসামী এ্যডভাকেট বাবু সোনার অফিস সহকারী মিলন মোহন্ত (৩০) একই হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন অবস্থান মারা গিয়েছিলেন।

রংপুর কারাগারের জেলার আমজাদ হোসেন কারাগারের অন্যান্য বন্দির কাছে শোনা তথ্যের রেফারেন্স দিয়ে জানান, এ্যডভোকেট বাবু সোনা হত্যা মামলার প্রধান আসামী তার স্ত্রীর পরকিয়া প্রেমিক কামরুল ইসলাম বেশ কিছু দিন থেকে নামাজ পড়া শুরু করেছে। শুক্রবার রাতের কোন এক সময় সকলের অগোচরে বিছানার চাদর রশি বানিয়ে গলায় পেচিয়ে জানালার সাথে ঝুলিয়ে সে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।

এরই মধ্যে তাহাজ্জুদের নামাজ শেষে জানালার পাশে তাকে হেলান দেয়া অবস্থায় দেখে ভোর ৫ টার দিকে ফজরের নামাজের সময় অন্যান্যরা তাকে ওজুর জন্য ডাকতে যায়। ডাকাডাকিতে উত্তর না পাওয়ায় অন্যান্য আসামীরা তার শরীর ছুলে সে জানালার পাশে লুটিয়ে পড়ে। এসময় তাকে গলায় চাদর পেচানো অবস্থায় অন্যান্য হাজতিরা গেটের দিকে ৫ টা ১০ মিনিটে নিয়ে আসে। আমি সাথে সাথেই তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠাই। সেখানে ভোর ৫ টা ৩০ মিনিটে সে মারা যায়। লাশ ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. অজয় রায় জানান, হাসপাতালে ভর্তি করার কিছ্ক্ষুণ পরেই কামরুল মারা যায়। কি কারণে মারা গেছে তা ময়না তদন্তের রিপোর্টে বুঝা যাবে। ময়না তদন্তের জন্য কামরুলের লাশ পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত: গত ২৯ মার্চ রাত ১০ টার দিকে রংপুর মহানগরীর তাজহাট বাবু পাড়ায় এ্যডভোকেট রথীশ চন্দ্র ভৌমিককে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে গলায় ওড়না পেচিয়ে হত্যা করে স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার দীপা ভৌমিক ও তার প্রেমিক কামরুল ইসলামও তার সহযোগি মিলন মোহন্ত। এরপর রথীশের বিছানায় দীপা ও কামরুল রাত কাটায়। তারা পরের দিন ৩০ মার্চ সকাল ১১ টার মধ্যে দিনের আলোতে বাড়ির আলমিরাতে লাশ ভর্তি করে বাইরে বের করে গুমের উদ্দেশ্যে মাটি খুড়ে পুতে রাখে।

এ ঘটনায় রথীশের ছোট ভাই সুশান্ত ভৌমিক একটি হত্যা মামলা করেন। এদিকে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে জঙ্গি, দেবোত্তর সম্পত্বিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বাবু সোনা নিখোঁজের নাটক সাজিয়ে বিভিন্ন প্রপাগা-া চালায় দীপা ভৌমিক ও প্রেমিক কামরুল ইসলাম। ৫ দিন পর দীপা ভৌমিকে র‌্যাব তুলে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি বাবু সোনাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।

এক পর্যায়ে তার দেখিয়ে দেয়া নগরীর তাজহাট মোল্লাপাড়ার পরিত্যাক্ত বাড়ির দরজা জানালা বিহীন রুমের মাটির নীচে বস্তাবন্দি অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে। ২৬ মার্চ কামরুল ও দীপা নিজ স্কুলের দুই শিক্ষার্থী রোকন ও সবুজকে দিয়ে কামরুলের বড় ভাই খাদেমুল ইসলামের পরিত্যক্ত বাড়ির দরজা জানালা বিহীন ঘরের মেঝে খুরে গর্ত করে রেখেছিল।

এ ঘটনায় বাবু সোনার ছোটভাই সাংবাদিক সুশান্ত ভৌমিক থানায় হত্যা মামলা করেন। এই মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেয় স্ত্রী দীপা ভৌমিক ও কামরুল ইসলাম।#

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর রংপুর ব্যুরো প্রধান সরকার মাজহারুল মান্নান।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.