রংপুর-৩ উপ-নির্বাচন প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বি লাঙ্গল ও ধানের শীষের প্রচারণায় তুঙ্গে, মাইক ভাঙচুরের অভিযোগ বিএনপি প্রার্থীর

রংপুর ব্যুরো: জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রেসিডেন্ট মরহুম পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এর মৃত্যুতে শূন্য হওয়া রংপুর-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে প্রচারণার তৃতীয় দিনে লাঙ্গল এবং ধানের শীষ প্রতিকের প্রার্থী ব্যপক প্রচারণা চালিয়েছেন। অন্যদিকে মাইক ভাংচুর করার অভিযোগ দেয়ার পরেও রিটার্নিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ তুলেছেন বিএনপি প্রার্থী রিটা রহমান।

জাতীয় পার্টির প্রার্থী এরশাদ পুত্র রাহগীর আল মাহী এরশাদ ওরফে সাদ এরশাদ বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর মডার্ন মোড় থেকে প্রচারণা শুরু করে বিকেলে পার্কে মোড়, চকবাজার, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাসহ আশেপাশের এলাকায় ব্যপক গনসংযোগ করেন।

আজ বিকেলে পার্কের মোড়ে গনসংযোগের সময় জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাদ এরশাদ জানান, আমি যখন গনসংযোগে বের হচ্ছি। তখন শত শত মানুষ আমার পাশে আসছেন। আমি আভিভূত। সবাই এরশাদের পুত্র বলে আমাকে চাওয়াচাওয়ি করছেন। আমার আব্বা যে এত জনপ্রিয় মানুষ ছিলেন, তা আমি ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করলে বুঝতে পারতাম না। তিনি বলেন, আব্বা সব সময় বক্তৃতা এবং ঘরোয়া আলোচনায় বলতেন, রংপুরবাসির কাছে আমি ঋণি। আজ প্রচারণায় এসে বুঝলাম, আসলেই রংপুরবাসি আব্বাকে ভালোবাসা দিয়ে ঋণি করে রেখেছেন। আমিও রংপুরবাসির কাছে ভালোবাসায় ঋণি হয়ে থাকতে চাই।

অন্যদিকে বিএনপি প্রার্থী রিটা রহমান বৃহস্পতিবার সকালে রংপুর সরকারী কলেজ থেকে প্রচারণা শুরু মেডিক্যাল মোড়, মেডিক্যাল পুর্বগেট, ধাপ, ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ছাড়াও ধাপের বিভিন্ন এলাকায় গনসংযোগ করেন।

বিকেলে তিনি জানান, বুধবার রাত ৮ টার দিকে আমার ধানের শীষ প্রচারণা মাইক ভাঙচুর করে লাঙ্গল প্রতিকের সমর্থকরা। বিষয়টি আমি রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং দায়িত্বরত ২ জন কর্মকর্তাকে জানাই। এরমধ্যে একজন উল্টো আমাকেই প্রশ্ন করেন আপনি আমার নম্বর কোথায় পেলেন। বিষয়টি খুব বেদনাদায়ক। অথচ অভিযোগ জানাতে চারজন কর্মকর্তার মোবাইল নম্বর আমাদের রিটার্নিং কর্মকর্তাই দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা আচরণবিধি বেধে প্রচারণা চালালেও লাঙ্গণ প্রতিকের প্রার্থী মোটরসাইকেল শোডাউন করে প্রচারণা চালাচ্ছেন। বিষয়টি আমরা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। কিন্তু কোন ফল পাওয়া যায়নি। এরমাধ্যমে প্রমাণিত হয়, নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেস্টা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাফিউল ইসলাম শাফী বিটিসি নিউজকে জানান, জাতীয় পার্টির কোন নেতাকর্মী সমর্থক এবং ভোটার মাইক ভাঙচুরের সাথে জড়িত নয়। তারা কখনই এ ধরনের কাজ করে নাই, করবেও না। আমরা বিকেলে রিটার্নিং কর্মকর্তার সাথে বৈঠক করেছি। এখানেও এ ধরনের কোন অভিযোগ আমরা শুনিনি। আচরণবিধি মেনেই প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

এছাড়াও অপর চার প্রার্থী এরশাদের ভাতিজা স্বতন্ত্র মোটরগাড়ি প্রতিকের প্রার্থী হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ এনপিপি’র আম প্রতিকের শফিউল আলম, মাছ প্রতিকের গণফ্রটর কাজী মাঃ শহীদুল্লাহ এবং খলাফত মজলিসের দেয়াল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী তৌহিদুর রহমান মন্ডল বিভিন্ন এলাকায় গনসংযোগ করেন।

প্রসঙ্গত: গত ১৪ জুলাই রংপুর সদর ৩ আসনের এমপি জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বিরোধী দলীয় নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর ১৬ জুলাই আসনটি শুন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আগামী ৫ অক্টোবর এই আসনে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। রংপুর সদর উপজেলা এবং রংপুর সিটি করপোরেশনের ৯ থেকে ৩৩ নম্বর এলাকা নিয়ে গঠিত রংপুর-৩ আসনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৪১ হাজার ৬৭৩ জন। এই আসনে ভোটকেন্দ্র ১৩০টি, ভোটকক্ষ ৯১০টি।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর রংপুর ব্যুরো প্রধান সরকার মাজহারুল মান্নান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.