রংপুরে ফণীর প্রভাবে ঠান্ডা বাতাস আধাপাকা ধান কাটছে কৃষক


রংপুর ব্যুরো: ঘুর্নিঝড় ফনির প্রভাবে রংপুর বিভাগে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির সাথে চলছে ঠান্ডা বাতাস। গত ২৪ ঘন্টায় ২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বাতাসের আদ্রতা ও গতিবেগ আছে স্বাভাবিক। কোথাও কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া না গেলেও জনজীবন হয়ে পড়েছে বিপর্যস্থ।

আতংকিত কৃষক কাটছেন আধাপাকা ইরি ধান। সম্ভাব্য যে কোন ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত আছে বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসন।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের অবজারভার অজিত কুমার রায় আজ শনিবার বেলা ৩ টায় এ প্রতিবেদককে জানান, গত ২৪ ঘন্টায় রংপুর অঞ্চলের বিভিন্নস্থানে ২৬ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

গুড়ি গুড়ি এই বৃষ্টিপাতে জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। ফণীর প্রভাবে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই চলছে হিমেল হাওয়া। বাতাসের আদ্রতা আছে ৯১ শতাংশ। তবে বাতাসের গতিঊেস স্বাভাবিক আছে। ৭ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইছে। তিনি জানান, ফণী বিকেল তিনটায় ময়মনসিংহ অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ফণী দুর্বল হয়ে পড়ে এখন নিম্নচাপে পরিনত হয়েছে।

এদিকে ফণীর প্রভাবে রংপুর বিভাগের মানুষের জীবন যাত্রা বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। খেটে খাওয়া মানুষদেও ভোগান্তি উঠেছে চরমে। রাস্তাঘাটে মানুষের উপস্থিতি নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও উপস্থিতি কম। বেসরকারী অফিসেও একই দশা। লোক নেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মার্কেটে। সব জায়গায় একটা শূণ্যতা বিরাজ করছে।

ফণীর প্রভাব সব থেকে বেশি আতংকিত এই অঞ্চলের কৃষক। ফণী থেকে উঠতি ইরি ধানকে বাঁচাতে আধাপাকা অবস্থাতেই ধান কাটা শুরু করে দিয়েছেন রংপুরের আতংকিত কৃষক। সরেজমিনে রংপুরের বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা গেছে এই দৃশ্য। নগরীর চার নং ওয়ার্ডের আমাশু কুকরুল এলাকার মাঠে দেখা গেলো আধাপাকা ধান কর্তনের হিড়িক।

জানতে চাইলে কৃষক আব্দুল ওয়াহাব বিটিসি নিউজকে জানান, ফণীর কারনে আজকে দুইদিন থেকে আকাশ মরা। বাতাস হচ্ছে। কখন কি হয় বলা যাচ্ছে না। সেকারণে আধাপাকা ধান করা শুরু করে দিয়েছি। এতে ষোলআনা ফলন পাবো না। তারপরেও যতটুকু পাই সেটাই ভরসা।

এদিকে ফণী দুর্বল হয়ে উত্তরাঞ্চল দিয়ে আবারও ভারতে যাওয়ার আবহাওয়ার পুর্বাভাষের কারণে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসন সতর্ক আছে। বিভাগীয় প্রশাসনের তরফে সকল ডিসিদের কাছে প্রয়োজনীয় বার্তা পাঠানো হয়েছে।

প্রত্যেকটি জেলা ও উপজেলায় খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। রংপুর ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকেও খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।

রংপুর জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, ফণীর প্রভাব মোকাবেলায় ৯৮ টি মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, জেরিকেন। ১৫০ জন রেড ক্রিসেন্ট সদস্য ছাড়াও ফায়ার সার্ভিসের সাথে আনসার-ভিডিপি সদস্যদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ফণীর বিষয়ে জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমের নম্বও ০৫২১-৬৩৩২৭।

অন্যদিকে রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়রের একান্ত ব্যক্তিগত সহকারী জাহিদ হোসেন লুসিড বিটিসি নিউজকে জানান, মেয়রের নির্দেশনায় করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর ছাড়াও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রস্তুত আছেন যে কোন ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায়।

সকল ধরনের উদ্ধার তৎপরতার সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মেডিক্যাল টিম, স্বেচ্ছাসেবক টিমসহ বিভিন্ন টিম তৈরি করা হয়েছে। মেয়র নিজেই পুরো বিষয়টি তদারকি করছেন। সিটি করপোরেশনে ফণীর যে কোন বিষয়ে জানাতে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। যার নম্বর ০৫২১-৬৫৬৯৯ ও ০১৭৩৫-৬৭৯৪০১।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর রংপুর ব্যুরো প্রধান সরকার মাজহারুল মান্নান। #

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.