যৌতুক-পরকীয়ার বলি স্ত্রী ও চার মাসের কন্যা

ক্রাইম (ঢাকা) রিপোর্টার: আট বছর আগে মো. সোলেমান হোসেনের (৩৫) সঙ্গে পারিবারিকভাবে খাগড়াছড়ির খালেদা আক্তার পিংকির (২৫) বিয়ে হয়। তাদের সংসারে জন্ম নেয় ৫ বছর বয়সী এবং ৪ মাস বয়সী দুই শিশুসন্তান। পিংকির পারিবারিক অবস্থা ভালো হওয়ায় সম্প্রতি যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে সোলেমান। একপর্যায়ে যৌতুকের টাকা না পেয়ে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন তিনি।
এই সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় নিজের স্ত্রী ও চার মাসের কন্যাসন্তানকে গলা কেটে হত্যা করেন সোলেমান।
গতকাল সোমবার (১০ জানুয়ারি) দিনগত রাতে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংস্থাটির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ (এসএসপি) সুপার মুক্তা ধর।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার সোলেমান গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার একটি টেক্সটাইল মিলে অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০১৩ সালে পারিবারিকভাবে তার সঙ্গে পিংকির বিয়ে হয়। বিয়ের পর সোলেমান গ্রামের বাড়িতে থেকে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। তাদের ১০ বছরের সংসারে ফারিয়া সুলতানা নামের ৫ বছর বয়সী ও সালমা আক্তার জান্নাত নামের ৪ মাস বায়সী দুই কন্যাসন্তান ছিল।
পিংকিদের পারিবারিক অবস্থা ভালো হওয়ায় সম্প্রতি সোলেমান হোসেন কাজ না করে মোটা অঙ্কের যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকেন পিংকিকে। একপর্যায়ে পিংকি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সোলেমান পার্শ্ববর্তী এলাকার এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এটা জানার পর স্ত্রী পরকীয়া থেকে সোলেমানকে সরে আসার জন্য চাপ দেন। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে গৃহস্থালির কাজে ব্যবহৃত ধারাল অস্ত্র দিয়ে প্রথমে পিংকিকে এবং পরে চার মাস বয়সী শিশুসন্তানকে গলা কেটে হত্যা করেন সোলেমান।
বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর আরও বলেন, গলা কেটে হত্যার পর কম্বল দিয়ে মুড়িয়ে ঘরের মেঝেতে রেখে তালা দিয়ে অন্যত্র পালিয়ে যান সোলেমান। হত্যাকাণ্ডের পর পিংকির বাবা আব্দুল খালেক দুলাল বাদী হয়ে রামগড় থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ঘটনাটি এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বেশ গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার হয়।
ঘটনার পরপরই সিআইডি ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সোমবার (১০ জানুয়ারি) রাতে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট এলাকা থেকে সোলেমান হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডাবল মার্ডারে সোলেমানের সঙ্গে আর কেউ জড়িত রয়েছে কি না জানতে চাইলে সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিকভাবে সোলেমান হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। এই হত্যাকাণ্ডে তিনি একাই জড়িত ছিলেন বলেও স্বীকার করেছেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ক্রাইম (ঢাকা) রিপোর্টার স্বপন বালমেকী / ঢাকা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.