মোখার প্রভাবে বেশি ক্ষতির শঙ্কা মিয়ানমারে, আতঙ্কে ঘর ছেড়েছেন লাখো মানুষ

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ফলে রাখাইনের উপকূলীয় শহর সিত্তওয়েসহ কয়েকটি শহরে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছে আবহাওয়া বিভাগ। এরই মধ্যে মিয়ানমার উপকূলের কয়েক লাখ বাসিন্দা বাড়ি-ঘর ছেড়েছেন। আতঙ্কে সময় কাটছে তাদের।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রাখাইনে ঝোড়ো বাতাসের সঙ্গে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। রাখাইন রাজ্যের সিত্তওয়ে, কিয়াউকফিউ, মংডু, রাথেডাং, মাইবোন, পাউকতাও এবং মুনাং শহরগুলোতে দুর্যোগ সতর্কতা জারি করেছে বেসামরিক জাতীয় ঐক্য সরকার। উপকূলবর্তী শহরগুলোর কাছ দিয়ে মোখা তাণ্ডব চালাবে, এমন আভাস দিয়ে বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে জান্তা সরকার।
এ বিষয়ে আরাকান আর্মির (এএ) মুখপাত্র খাইং থু খা বলেন, ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার খবরে গত বুধবার থেকে প্রায় এক লাখের বেশি বাসিন্দাকে সরিয়ে নিয়েছি আমরা। দুর্গত এলকার মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা ও খাবারও পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
তবে আরকান আর্মির সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে তিনি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকা লেখক ওয়াই হিন অং মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরাবতীকে জানান, সিত্তওয়ে শহরে প্রায় ১ লাখ বাসিন্দা বাস করেন। মোখার কারণে এখানকার ৭৫ শতাংশ বাসিন্দাকে ঘর ছাড়তে হয়েছে।
আশ্রয়ের স্থানের অভাবে অনেকে সাগর থেকে দূরের খোলা মাঠে অবস্থান নিয়েছেন। ওয়া হিন আরও বলেন, এসব বাসিন্দাদের জরুরিভিত্তিতে খাবার, ওষুধ এবং টয়লেটের প্রয়োজন। এখন পর্যন্ত কোনও আন্তর্জাতিক সংস্থা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।
সামরিক শাসন জারি এবং দেশটির সংবাদমাধ্যমের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছে জান্তা সরকার। ফলে দেশটিতে থেকে খবর পাওয়া জটিল হয়ে পড়ে। ঘূর্ণিঝড় মোখায় মিয়ানমারের উপকূলবর্তী মানুষের কী পরিস্থিতি এ বিষয়ে তথ্য জানাচ্ছে না জান্তা সরকার।
রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাংলাদেশের আবওহাওয়া বিভাগের বিশেষ বুলেটিনে জানানো হয়েছে, উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও এর আশপাশের এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আজ রবিবার (১৪ মে) সকাল ৯টার দিকে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল। এটি বর্তমানে কক্সবাজার এবং উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করছে। ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা কমিয়ে আনতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.