মালের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলো ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স

বিশেষ (ঢাকা) প্রতিনিধি: মালদ্বীপের রাজধানী মালের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলো ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। দেশের অন্যতম  বেসরকারি এই এয়ারলাইন্সটির দশম আন্তর্জাতিক গন্তব্য মালে।
আজ শুক্রবার সকালে (১৯ নভেম্বর) বিমানবন্দরে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের প্রথম ফ্লাইট উদ্বোধন করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মালদ্বীপে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে ইউএস-বাংলা আকাশ পথে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। তাদের এই ফ্লাইটের মাধ্যমে বন্ধুপ্রতিম দুই দেশে শ্রমিকরা সহজে যাতায়াত করতে পারবেন। দুই দেশের যাত্রীদের যাত্রা হবে সহজ ও আরামদায়ক। দুই দেশের পর্যটন শিল্পের প্রসারে এই ফ্লাইট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।
ইউএস-বাংলা তাদের সক্ষমতার মাধ্যমে দেশের এভিয়েশন মার্কেটের একটি বড় অংশ (যাত্রী) বহন করে দেশীয় এয়ারলাইন্স শিল্পের প্রবৃদ্ধি ঘটাবে এমন প্রত্যাশা করে মাহবুব আলী বলেন, ইউএস-বাংলাসহ সবাইকে (সব এয়ারলাইন্স) অনুরোধ করছি, আপনারা মালদ্বীপের নাগরিকদের বাংলাদেশে ভ্রমণের জন্য আকর্ষণীয় প্যাকেজ বানান। এই উদ্যোগ দেশের এভিয়েশন ও পর্যটন শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
অনুষ্ঠানে মালদ্বীপের হাইকমিশনার শিরুজিমাথ সামির বলেন, ইউএস-বাংলা দ্বিতীয় এয়ারলাইন্স হিসেবে মালেতে সরাসরি ফ্লাইট শুরু করলো। সারা বিশ্বে করোনার প্রকোপের মধ্যেও এটি তাদের অত্যন্ত ভালো উদ্যোগ। মালদ্বীপ খুবই চমৎকার একটি রাষ্ট্র। আমি চাই ইউএস-বাংলা সাশ্রয়ী প্যাকেজ দিয়ে বাংলাদেশিদের মালদ্বীপে যাওয়ার সুযোগ করে দেবে।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বর্তমানে মালদ্বীপে যাতায়াত করা ৯০ ভাগ যাত্রীই শ্রমিক এবং ১০ ভাগ ব্যবসায়ী। আমার শ্রমিক ভাইয়েরা এতদিন ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে মালদ্বীপের ওয়ানওয়ে টিকেট কাটতো। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এখন তাদের সর্বনিম্ন ২৫ হাজার টাকায় ওয়ানওয়ে টিকেট দেবে। এটা আমাদের জন্য আনন্দের বিষয়। আমরা জানি, যখন কোন বিদেশি এয়ারলাইন্স বাংলাদেশের যাত্রীদের বহন করে তখন আমাদের দেশের রেভিনিউ বিদেশে চলে যায়। এই রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে ইউএস-বাংলা ফরেন কারেন্সি রিটেইন করবে।
ইউএস-বাংলা জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে তিনটি ফ্লাইট চালু করলেও পর্যায়ক্রমে সপ্তাহে সাতটি ফ্লাইট চালু করা হবে। সপ্তাহে তিন দিন মঙ্গলবার, শুক্রবার ও রবিবার ফ্লাইট পরিচালনা করবে এয়ারলাইন্সটি। মঙ্গলবারের ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে সকাল ১১টা ১০ মিনিট মালদ্বীপের রাজধানী মালের উদ্দেশে উড্ডয়ন করবে এবং স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে মালেতে অবতরণ করবে। একই দিন বিকাল ৩টা ৩৫ মিনিটে মালে থেকে উড্ডয়ন করে রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।
শুক্রবারের ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিট মালের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে এবং স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে মালেতে অবতরণ করবে। একই দিন বিকাল ৩টা ১৫ মিনিটে মালে থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসবে এবং রাত ৮টা ১৫ মিনিটে ঢাকায় অবতরণ করবে। এছাড়া প্রতি রোববার ঢাকা থেকে সকাল ৯টা ৩০ মিনিট মালের উদ্দেশে উড্ডয়ন করবে এবং স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে মালেতে অবতরণ করবে। একই দিন দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে মালে থেকে উড্ডয়ন করে সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।
এই রুটে সকল প্রকার ট্যাক্স ও সারচার্জসহ ওয়ানওয়ের ন্যূনতম ভাড়া ২৯ হাজার ৫০৮ টাকা এবং রিটার্ন ভাড়া ৪৫ হাজার ৫৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০০৮-০৯ সালে এই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করেছিল দেশি এয়ারলাইন্স বেস্ট এয়ার। তবে বর্তমানে এয়ারলাইন্সটির কার্যক্রম বন্ধ।
ফ্লাইটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বেবিচকের সদস্য (পরিচালনা ও পরিকল্পনা) এয়ার কমডোর সাদিকুর রহমান চৌধুরীসহ বেবিচক কর্মকর্তারা।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ (ঢাকা) প্রতিনিধি মো: ফারুক আহম্মেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.