বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সঙ্গে ফোনালাপকালে তাকে এক সপ্তাহের মধ্যে পদত্যাগ করে নিজ দেশ ছেড়ে সপরিবারে পছন্দ মতো কোনো চলে যেতে বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। বলেছিলেন, এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র তাকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেবে। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে।
গত কয়েক মাস ধরে ভেনেজুয়েলার ওপর চাপ বাড়িয়ে চলেছেন ট্রাম্প। যর অংশ হিসেবে ক্যারিবীয় সাগরে মাদক চোরাচালানের অভিযোগ নৌকায় অব্যাহতভাবে হামলা চালানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে বারবার সামরিক অভিযানের হুমকি দেয়া হচ্ছে।
কার্টেল দে লস সোলস নামে একটি গোষ্ঠীকে বিদেশি ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, মাদুরো গোষ্ঠীটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তবে এই চাপের মুখেও অনড় অবস্থানে রয়েছে কারাকাস।
মাদুরো ও তার সরকার সর্বদা যুক্তরাষ্ট্রের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে এবং বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার তেলসহ বিশাল প্রাকৃতিক সম্পদের নিয়ন্ত্রণ নিতে শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন চাইছে। এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে গত ২১ নভেম্বর মাদুরোর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন ট্রাম্প।
রয়টার্স মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ট্রাম্প ও মাদুরোর মধ্যে মাত্র ১৫ মিনিট কথা হয়। ওই সময় ট্রাম্পের কাছে মাদুরো শর্তসাপেক্ষে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যেতে চান বলে জানান। তবে ট্রাম্প তার বেশিরভাগই প্রত্যাখ্যান করেন।
একাধিক সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ফোনালাপকালে মাদুরো ট্রাম্পকে বলেছেন, তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা ভেনেজুয়েলা ছাড়তে ইচ্ছকু যদি তাকে ‘পূর্ণ আইনি দায়মুক্তি’ দেয়া হয়। এছাড়া তার ওপর আরোপিত যুক্তরাষ্ট্রের সব নিষেধাজ্ঞা এবং তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে চলমান মামলা তুলে নেয়ার দাবি জানান তিনি।
এছাড়া ভেনেজুয়েলার আরও ১০০ কর্মকর্তার ওপর থেকেও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানান মাদুরো। যাদের বেশিরভাগের বিরুদ্ধ মানবাধিকার লঙ্ঘন, মাদক চোরাচালান অথবা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। প্রতিবেদন মতে, ট্রাম্প তার বেশিরভাগ দাবি প্রত্যাখ্যান করেন এবং বলেন, তার হাতে এক সপ্তাহ সময় আছে। এর মধ্যে পরিবার নিয়ে নিজের পছন্দের গন্তব্যে চলে যেতে হবে।
এই এক সপ্তাহের আল্টিমেটাম গত শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) শেষ হয়। পরদিন শনিবারই (২৯ নভেম্বর) ট্রাম্প অবৈধভাবে ভেনেজুয়েলার আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেন। এরপন রোববার (৩০ নভেম্বর) ট্রাম্প স্বীকার করেন যে, মাদুরোর সঙ্গে তার টেলিফোনে কথা হয়েছে। কিন্তু তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি।
ভেনেজুয়েলায় ‘পরবর্তী পদক্ষেপ’ নিয়ে সোমবার (২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় হোয়াইট হাউসে জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। এদিকে এদিন নিকোলাস মাদুরো কারাকাসে হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণে এক সমাবেশে আবারও শান্তির আহ্বান জানান এবং তার জনগণের প্রতি ‘নিরঙ্কুশ আনুগত্য’ প্রকাশ করেন। #

















