মমতার চ্যালেঞ্জ : ক্ষমতা থাকলে গ্রেফতার করুন, জেলে থেকেই বাংলাকে জেতাব

(মমতার চ্যালেঞ্জ : ক্ষমতা থাকলে গ্রেফতার করুন, জেলে থেকেই বাংলাকে জেতাব)
কলকাতা প্রতিনিধি: ক্ষমতা থাকলে গ্রেফতার করুন। জেলে থেকে বাংলাকে জেতাব। বাঁকুড়ার সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খোলা চ্যালেঞ্জ। পাল্টা কটাক্ষ বিজেপির। দিলীপ ঘোষের দাবি, এ সব আসলে সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টা।
লকডাউনের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম রাজনৈতিক সভা। বাঁকুড়ার শুনুক পাহাড়িতে। এই সভা থেকেই ভোটপ্রচারের ডঙ্কা বাজিয়ে দিলেন তৃণমূলনেত্রী। ছুঁড়ে দিলেন চ্যালেঞ্জ। বলেন, ‘চমকানিতে ভয় পাই না। ধমকানিতেও ভয় পাই না ৷ এখানেই শেষ নয়, বিজেপির উদ্দেশে নেত্রীর বার্তা, ‘ভোট এলেই তৃণমূলকে ভয় দেখানো। যাতে তৃণমূলের কিছু নেতা ভয় পেয়ে ওদের সঙ্গে চলে যায়। বলছে কী করবে। হয় ঘরে থাকো। না হয় জেলে থাকো। আমি বলছি, ক্ষমতা থাকলে আমায় গ্রেফতার করো। আমি জেলে থাকব। জেলে থেকে বাংলাকে জেতাব। চ্যালেঞ্জ করে গলাম৷
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় পাল্টা বক্তব্য বিজেপির ৷ রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘উনি এ সব কথা বলে সহানুভূতি নিতে চাইছেন। একবার-আধবার জেতা যায়। বারবার নয়। লোকসভায় পারেননি। পঞ্চায়েতে পারেননি। মানুষ বুঝে গেছে। তাই ভয় পাচ্ছেন। তাই তিন দিন ধরে জঙ্গলমহলে বসে আছেন৷’
বিজেপির বিরুদ্ধে টাকা ছড়িয়ে দল ভাঙানোর অভিযোগও করেন নেত্রী ৷ ভোটের আগে টাকা উড়ছে ৷ হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ওদের অনেক টাকা ৷ ফোন করে টাকা অফার করছে ৷ ফোন করে টিএমসি কর্মীকে বলছে ২ কোটি দেব। চলে এসো। বিধায়ককে বলছেন ১৫ লক্ষ দেব। অ্যাকাউন্টে টাকা ফেলে দেব। এটা কি একটা রাজনৈতিক দল। বলতেও লজ্জা লাগে ৷ আর সিপিআইএমকে দেখে লজ্জা হয় ৷ তারা বিজেপির পায়ে পড়েছে ৷ সিপিআইএমের হার্মাদরা এখন বিজেপির গুন্ডা ৷’
গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে টাকা ছড়ানোর অভিযোগে দিলীপ ঘোষ বলছেন, ‘উনিই তো টাকা ছাড়া কিছু বোঝেন না। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা কেন মানুষের কাছে পৌঁছতে দিচ্ছেন না। কেন গরিব ও কৃষকদের বঞ্চিত করছেন ৷’
জঙ্গলমহলের অন্যতম জেলা বাঁকুড়া। যেখানে গত লোকসভা ভোটে তৃণমূলের হাত খালি। বাঁকুড়ার ২টি লোকসভা আসনে জেতে বিজেপি ৷ বারোটি বিধানসভা আসনেই এগিয়ে পদ্ম শিবির ৷ সেই বাঁকুড়ায় দাঁড়িয়ে এ দিন রণংদেহী মমতা। তারপরই বিজেপির দিকে ঝুঁকে-থাকাদেরও সমালোচনায় বলেন, ‘কেউ কেউ ভাবছে এখন থেকে লাইন করে রাখি। বাই চান্স যদি চলে আসে। বাইচান্স আসবে না। চান্সই নেই তো ৷ বাঁকুড়ার একটি একটি করে আসন বুঝে নেব। একটাতেও সিপিএম থাকবে না। একেকটা করে বুঝে নিতে হবে ৷’
মমতার চ্যালেঞ্জ-হুঙ্কারের পাল্টা বিজেপির সুর সপ্তমে। দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘শুধু বাঁকুড়া নয়, সারা জঙ্গলমহলে তৃণমূল ঝান্ডা বাঁধার লোক পাবে না। ৬ মাস পরে মিলিয়ে নেবেন।’
এদিনের সভা থেকে একযোগে বিজেপি থেকে সমস্ত বিরোধীদের নিশানা করে বলেন, ‘সিপিএম লোভী, বিজেপি ভোগী, তৃণমূল ত্যাগী। বাঁকুড়ায় একটা আসনও পাবে না বিরোধীরা। বিজেপির পায়ে পড়েছে সিপিএম, লজ্জাও নেই! আপনার সব লুটে নেবে বিজেপি ৷’
নেত্রীর এমন বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি ও সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী ৷ দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘কে লোভী, কে ত্যাগী সে তো তৃণমূল নেতা মন্ত্রীদের বাড়ি ও সম্পত্তি দেখলেই বোঝা যায় ৷ তৃণমূলের ব্লক সভাপতিরও প্রাসাদ আছে ৷ পার্টি করে এত টাকা পায় কোথা থেকে থেকে! এই আমাকেই দেখুন, নিজের খড়ের বাড়ি ৷ পার্টি অফিসে থাকি, বাড়ি নেই ঘুরে ঘুরে বেড়াই ৷’ অন্যদিকে আক্রমণাত্মক সুজন চক্রবর্ত্তীও ৷
তিনি বলেন, আসলে উনি বুঝে গিয়েছেন যাবার সময় হয়ে গিয়েছে। মানুষ তৃণমূলের কাছ থেকে সরে যাচ্ছে। তাই ভুলভাল বকছেন। সিপিএমকে লোভী বলছেন! হিম্মত থাকলে তাঁর দলের নেতাদের সম্পত্তির হিসেব দিন মমতা। তৃণমূল সরকারে থাকাকালীন তাদের নেতারা কীভাবে ফুলেফেঁপে উঠছে তা রাজ্যের মানুষ দেখছে
ভোটের বাংলা ফুটছে। ধার বাড়ছে আক্রমণের ৷ ময়দানে নেমে যুযুধান এখন সব পক্ষই৷
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ (বাংলাদেশ) এর বিশেষ (কলকাতা) প্রতিনিধি রাজশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.