উচ্চ মাত্রার এন্টিবায়োটিক ও স্টেরয়েড ব্যবহার : অপ্রয়োজনীয় টেষ্ট দেয়ার অভিযোগ


                          (বড়াইগ্রাম হাসপাতালে শিশু রোগীর চিকিৎসা দেন মেডিকেল উপ সহকারী !)

নাটোর প্রতিনিধি: ৫০ শয্যাবিশিষ্ট বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ম অমান্য করে মেডিকেল অফিসারের পরিবর্তে শিশু রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন শাহাবউদ্দিন নামে একজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো)।
স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ায় চিকিৎসক থাকলেও তিনি প্রভাব খাটিয়ে নিয়মিত রোগী দেখেন এবং প্রেসক্রিপশন করেন। সরকারীভাবে নিরুৎসাহিত করা হলেও এসব প্রেসক্রিপশনে ৬-৭ মাসের শিশু বাচ্চাদেরও তিনি উচ্চ মাত্রার এন্টিবায়োটিক ও স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ লিখছেন-যা শিশু স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর।
একই সঙ্গে কমিশন বাণিজ্য করতে অপ্রয়োজনে প্রায় সব শিশুকে একাধিক টেস্ট দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, প্রায় ৩ বছর যাবৎ হাসপাতালে শিশু রোগী দেখছেন শাহাবউদ্দিন। নিয়মানুযায়ী তার প্রেসক্রিপশন লেখার কথা না। কিন্তু তিনি তা না মেনে ছাপানো প্যাডে নামের আগে ডাক্তার ব্যবহার করে প্রেসক্রিপশনতো করেনই, আবার প্রতিটি প্রেসক্রিপশনে উচ্চ মাত্রার ডাবল স্টেন্থ এন্টিবায়োটিক ও স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ লিখেন।
সেই সাথে সেফটিএক্সোন ইনজেকশনের ব্যবহার তো আছেই। তিনি কোন প্যাথলজিক্যাল টেষ্ট লেখার নিয়ম না থাকলেও প্রায় রোগীকে টেস্ট দেন, একজনকে সর্বোচ্চ ৮ টি পর্যন্ত টেস্ট করতে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। কোন রোগী টেস্ট করাতে না চাইলে বা হাসপাতালের অন্য চিকিৎসকের কাছে যেতে চাইলে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন তিনি। এসব উচ্চ মাত্রার এন্টিবায়োটিক ও স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ সেবন করে শিশুদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়াসহ ঘন ঘন রোগাক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটছে। একই সঙ্গে অতিরিক্ত টেস্টে রোগীদের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বড়াইগ্রামের সাব্বির (০১) নামে এক শিশুকে ব্লাড গ্রুপ, সিবিসি, আরবিএস, ইউরিনসহ মোট আটটি এবং লক্ষীকোলের সুরভী নামে এক রোগীকে ৬টি টেস্ট দিয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে উপলশহর গ্রামের আব্দুর রহমান বিটিসি নিউজকে জানান, হাসপাতালে শাহাবউদ্দিনের কাছে কিছুদিন চিকিৎসা করিয়ে বাচ্চা উল্টো রোগাটে হয়ে গেছে। পরে একজন শিশু বিশেষজ্ঞের স্মরণাপন্ন হলে তিনি প্রেসক্রিপশন দেখে এসব ওষুধ খেয়েই বাচ্চার স্বাভাবিক বৃদ্ধি থেমে গেছে এবং রোগাটে হয়ে গেছে বলে জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ডাক্তার বিটিসি নিউজকে জানান, তিনি ডাক্তারদের সহযোগিতা করার দায়িত্ব থাকলেও হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার (শিশু) নেমপ্লেট লাগানো একটি কক্ষে বসে নিয়মিত শিশু রোগী দেখেন। আমরা হাসপাতালে থাকলেও তিনিই রোগী দেখেন যা দুঃখজনক।
শাহাবউদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি রোগীর সুস্থতার জন্য কিছু ওষুধ লিখলেও কমিশন বাণিজ্যের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. পরিতোষ কুমার রায় বিটিসি নিউজকে বলেন, শিশু চিকিৎসক না থাকায় উপ-সহকারীকে বসাতে হচ্ছে। তবে কিছু অভিযোগ পেয়ে তাকে সতর্কীকরণ নোটিশ দিয়েছি। সেখানে একজন মেডিকেল অফিসার বসানোর চেষ্টা করবো।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.