মটরশুঁটি ত্বকের উজ্জ্বলতা ও চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়ায়

 

বিটিসি নিউজ ডেস্ক : মটরশুঁটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী একটি সবজি। ত্বকের উজ্জ্বলতা ও চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়িয়ে তুলে। পেট পরিষ্কার করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। যাদের কঠিন পায়খানা হয় বা পায়খানা নিয়মিত হয় না তারা মটরশুঁটি খেলে খুবই উপকার পাবেন। রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় মটরশুঁটি। ফলে হৃদরোগ সারাতে সাহায্য করে। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শরীরের বৃদ্ধি করে। মটরশুঁটি তে ভিটামিন কে থাকে যা শরীরের হাড় শক্ত করতে সাহায্য করে। ফলিক এসিড থাকে যা গর্ভবতী মায়ের জন্য খুবই উপকারী। মটরশুঁটি টাইপ-২ ডায়াবেটিস কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। উদ্ভিদ জগতে মটরশুঁটির বৈজ্ঞানিক নাম Pisum Sativum বাংলা নাম মটরশুঁটি (মটর) Papilionceae গোত্রের উদ্ভিদ। মটরশুঁটিতে নিয়াসিন নামক খাদ্য উপাদান থাকায় রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল দূর করে উপকারী কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে।

মটরশুঁটি একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর সবজি। আমাদের দেশে যে মটরশুঁটি ফলানো হয় তা সাধারণত ডাল জাতীয় খাবার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তা আবার মটর নামে পরিচিত। কাঁচা অবস্থায় মাছ-গোশতের সাথে রান্না করা একটি সুস্বাদু খাবার। এর বীজ সবজি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তা ছাড়া ডাল, চটপটি ও অন্যান্য মুখরোচক খাবার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এর পাতা শাক হিসেবে খাওয়া যায়।

পাকা ও সবুজ ফল এবং বীজে থাকে স্টার্চ, অ্যালবুমিনয়েডস, তেল, গ্যালাকটো লিপিট, ট্রাইগোনেলিন ও দ্রবনীয় কার্বোহাইড্রেট। মটরশুঁটি নানা খাদ্য উপাদানে ভরপুর। দেহের রোগ প্রতিরোধে এ খাদ্যটি বিরাট ভূমিকা পালন করে। মটরশুঁটিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি, সি,  ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম,  খনিজ লবণ ও জিংক পাওয়া যায়। মটরশুঁটি একটি আমিষসমৃদ্ধ খাবার। এতে সব শাক ও সবজি এবং ফলের চেয়ে বেশি আমিষ বা প্রোটিন বেশি থাকে। মটরশুঁটি গাছের শিকড়ে নডিউল সৃষ্টি হয়। এই নডিউলে রাইজোবিয়াম ব্যাকটেরিয়া থাকে। এই ব্যাকটেরিয়া বাতাস থেকে নাইট্রোজেন গ্রহণ করে গাছে সরবরাহ করে। এই নাইট্রোজেন অ্যামাইনো এসিডের একটি উপাদান।

অ্যামাইনো এসিড আবার আমিষের উপাদান। আর এ কারণে মটরশুঁটিতে আমিষের পরিমাণ বেশি থাকে। মটরশুঁটিতে যে অ্যামানো এসিড থাকে তা মানব শীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। মাছ ও গোশতের বিকল্প হিসেবে মটরশুঁটিতে আমিষের অভাব পূরণ করতে পারে। এতে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটরি ফাইবার থাকে। যা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় খুবই উপকার। ফলিক এসিডের একটি অন্যতম উপাদান হলো মটরশুঁটি। এতে ক্যারোটিন, লুটেইন, জিয়ানথ্যানিনসহ বিভিন্ন এন্টি অক্সিডেন্ট ফ্যানভনয়েড থাকে। যা দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। প্রতি ১০০ গ্রাম খাবার উপযোগী মটরশুঁটিতে পুষ্টি উপাদান হলো: খাদ্য শক্তি ১২৭ কিলোক্যালরি, শর্করা ২৩০ গ্রাম, চিনি ৫.৭ গ্রাম, আঁশ ৫.১ গ্রাম, চর্বি ০.৪ গ্রাম, আমিষ ৭.৪ গ্রাম, ভিটামিন এ ৮৩ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি-১ ০.৩ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-২- ০.১২ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-৩- ২.১ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-৬- ০.২ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-৯- ৬৫ মাইক্রোগ্রাম, বিটা ক্যারোটিন ৪৪৯ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন সি ৪০ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৬ মিলিগ্রাম, কর্বোহাইড্রেট ১৪.৫ গ্রাম, আয়রন ১.৫ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ২৪৪ মিলিগ্রাম, জিংক ১.২ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১০৮ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ৩৩ মিলিগ্রাম।

উপকারী সবজি গাছটি বাড়ির আশেপাশের জমিতে লাগান অথবা বাসা বাড়ির ছাদে লাগান। পরিবারের পুষ্টির চাহিদা পূরণে এগিয়ে আসুন। #

 

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.