ভেজাল কীটনাশকে সয়লাব চাঁপাইনবাবগঞ্জ, প্রতারিত হয়ে দিশেহারা কৃষক

ফাইল ছবি
বিশেষ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি: ভেজাল কীটনাশকে ভরে গেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা। আর এসব ভেজাল কীটনাশক জমিতে দিয়ে প্রতারণায় পড়ে দিশেহারা জেলার কৃষকরা। কৃষি সমৃদ্ধ দেশ বাংলাদেশ আর এই কৃষি ও অসহায় কৃষককে নিয়ে চলছে যত প্রতারণার ফাঁদ। আমন মৌসুমকে ঘিরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভেজাল সার, কীটনাশক কারবারিরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। জেলার প্রান্তিক হাট বাজারগুলোতে চলছে অসাধু এ কারবার।
নাম সর্বস্ব কোম্পানির সার কীটনাশক কিনে জমিতে প্রয়োগ করে কোন ফল না পাওয়ায় আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির শিকার হচ্ছেন কৃষকরা। কৃষি বিভাগ বলছে অসাধু এসব কারবার রোধে জোর অভিযান চালানো হচ্ছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থানার আমলাইন এলাকার কৃষক হান্নান হোসেন বলেন, এবার ৭ বিঘা জমিতে ধান রোপণ করেছেন। লাগানো ধানের জমিতে আগাছা দমনের জন্য বাজার থেকে কীটনাশক কিনে প্রয়োগ করেও কোনো কাজ হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি। নজরকাড়া মোড়কে নাম সর্বস্ব কোম্পানির কীটনাশক ও সার কিনে জমিতে একাধিকবার প্রয়োগে হান্নানের মতো অনেক কৃষকই প্রতারিত হচ্ছেন।
হান্নান আরও বলেন, সার দিলে কোনো কাজ হচ্ছে না। জমিতে সার দেয়ার পর দুই-চার দিন কাজ করছে বলে মনে হলেও সেটা স্থায়ীভাবে কাজে লাগছে না। ভাল মানের ঔষধ পাবো মনে করে পাশের গ্রামে টাকা হারায় একটি ডিলারের কাছে কীটনাশক কিনলে সে ডিলার আমাকে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া কীটনাশক দেন। বাড়িতে এসে আমার ছেলে বুঝতে পারেন মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। আমি অশিক্ষিত কৃষক কোথায় ভালো কীটনাশক পাব বুঝে উঠতে পারছিনা। অন্য এক কৃষক বলেন, সব ওষুধ দুই নম্বর। এক নম্বর ওষুধ একটাও নেই।
এদিকে, এক বিক্রেতা বলেন, আমরা কোম্পানির কাছ থেকে কিনে এনে বিক্রি করছি। নিজেরা তো আর তৈরি করছি না। মৌসুমকে টার্গেট করে তৃণমূল পর্যায়ে মোড়ে মোড়ে গড়ে উঠেছে সার কীটনাশক কেনা বেচার কারবার। ব্যবসায়ীরা বলছেন, নিম্ন মানের সার, কীটনাশকে কাজ না হওয়ায় তারাও বেকায়দায় পড়ছেন।
কৃষি উপকরণের দামের তুলনায় উৎপাদিত পণ্যের দাম নিয়ে কৃষকের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। এ অবস্থায় প্রতারণা রোধে কঠোর নজরদারি ও শক্ত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জনপ্রতিনিধি ও পরিবেশবিদদের।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থানার নাচোল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, মোড়ক দেখে আকৃষ্ট হয়ে কৃষকরা এসব কীটনাশক কেনেন। অনেক সময় এগুলো কাজ করে না বলে তারা অভিযোগ করেন। পরিবেশবিদ
চন্দন কুমার দেব বলেন, এসব কীটনাশক ব্যবহারে অনেক ঝুঁকি রয়েছে। বিষয়গুলো প্রশাসনের নজরে আনা উচিত। চলতি আমন মৌসুমে জেলায় ৫৩৯৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষের জন্য ২০ হাজার মেট্রিক টন সার ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে কৃষি বিভাগ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.