ভেজাল আগাছা নাশক ঔষধে পুড়ল ৬ কৃষকের ১১ বিঘা জমির ধান!


নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরে ভেজাল কীটনাশক প্র্রয়োগ করে ১১ বিঘা জমির ধান গাছ পুড়ে যাওয়ায় ৬ কৃষকের স্বপ্ন ধুলিসাৎ হয়েছে। নাটোর সদর উপজেলার দিঘাপতিয়া ইউনিয়নের গোয়ালদিঘী গ্রামের কৃষকরা সীমান্ত ঘেষা সিংড়া উপজেলার হাতিয়নদহ ইউনিয়নের কাজিপুরা ফসলি মাঠে বর্ষা মৌসুমে ওই আমন ধান রোপণ করে ছিলেন।
ধানের জমির ঘাস নিধনের জন্য ‘দীপন’ ঔষধ প্রয়োগ করার পর ছয় কৃষকের ১১ বিঘা জমির ধান পুড়ে বিবর্ণ হয়ে গেছে। ক্ষতি গ্রস্থ কৃষকসহ এলাকাবাসী ক্ষতিপুরনসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
জেলা প্রশাসন সহ কৃষিসম্প্রসারন বিভাগ বিষয়টি খতিয়ে দেখে দায়িদের বিরুদ্ধে আইন গত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন।
নাটোর সদর উপজেলার দিঘাপতিয়া ইউনিয়নের গোয়ালদিঘী গ্রামের কৃষকরা সীমান্ত ঘেষা সিংড়া উপজেলার হাতিয়নদহ ইউনিয়নের কাজিপুরা ফসলি মাঠে বর্ষা মৌসুমে আমন ধান রোপণ করেন। ফসলেরওই মাঠ জুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে সবুজের সমারোহ। বাতাসের দোলায় দোল খাচ্ছে ধান গাছ। কৃষকদের স্বপ্ন ছিল বর্ষা মৌসুমে রোপন করা এসব আমন ধানে ভরে উঠবে তাদের গোলা ঘর। কিন্তু ধানের জমির ঘাস নিধনে রজন্য ঔষধ বা কীটনাশক প্রয়োগ করার পর তাদের সেই স্বপ্ন দুঃস্বপ্নহ য়ে দেখা দিয়েছে। জমির ঘাস নিধনের জন্য ঔষধ প্রয়োগের পর ধান গাছ পুড়ে বিবর্ণ হয়ে গেছে।
সদর উপজেলার দিঘাপতিয়া ইউনিয়নের গোয়ালদিঘী গ্রামের কৃষক সবুজ হোসেন বিটিসি নিউজকে বলেন,বর্ষা মৌসুমে তিনি এবার লিজ নিয়ে ৩ বিঘা জমিতে বর্ষাকালীন আমন ধান রোপণ করে ছিলেন। ধান গাছগুলো দেখতেও সুন্দর ও তরতাজা হয়ে ছিল। কিন্তু বর্ষা কালরি এসব ধানের জমিতে ঘাস বেশী হয়। ওই ঘাস নিধনের জন্য এলাকার এক দোকান থেকে ঔষধ এনে জমিতে প্রয়োগ করি। দোকানি তাকে বলে ছিলেন তিনি নিজেও ওই ঘাস মারা ঔষধ ছিটিয়েছেন। কিন্তু জমিতে প্রতি বিঘা জমিতে তার খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকারও বেশী। ওই তিন বিঘা জমিতে এ পর্যন্ত সর্বসা কুল্যে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ‘দীপন’ নামের ওই ঔষধ জমিতে প্রয়োগ করার পর জমির তরতাজা ধান গাছ পুড়ে বিবর্ণ হতে শুরু করে। দোকানীকে জানালে আরও দুদফায় নতুন ঔষধ দিয়ে জমিতে দিতে বলেন। কিন্তু কোন কাজ হয়নি । উপরুন্তু জমির সব ধান পুড়ে গেছে।
একই এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক দুলাল হোসেন ও আকরাম হোসেন বিটিসি নিউজকে বলেন, তারাও একই মাঠে বর্ষালী আমন ধান রোপন করেন। তারা প্রায় ৪বিঘা জমিতে ধান রোপণ করে ছিলেন,ঘাস মারা ঔষদ দিয়ে তাদের জমির সব ধান পুড়ে গেছে। তারা স্থানীয় সার ও কীটনাশকের খুচরা ব্যবসায়ী জাহিদুলের দোকান থেকে ‘ভ্যালেন্ট টেক লিমিটেডের মোড়কের ‘দীপন’ নামের ওই ঔষধ জমিতে প্রয়োগকরার পর সব জমির তরতাজা ধান গাছ পুড়ে গেছে। ধার দেনাকরে তারা এসব ধান রোপণ করেন। এখন কিভাবে ঋন শোধ করবেন বা সংসারের খরচ জোটাবেন তানিয়ে দুঃশ্চিায় রয়েছেন। তারা ঔষধের দোকাণীর কাছে গেলে জানতে পেরেছেন দোকানীসহ তার ভাইয়ের জমির ধানও পুড়ে গেছে। তারা ক্ষতি পুরণসহ দায়িদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।
স্থানীয় ঔষধ বিক্রেতা জাহিদুল ইসলাম বিটিসি নিউজকে বলেন. তিনিও‘ দীপন’ নামের ওই ঔষধ জমিতে প্রয়োগ করার পর জমির ধান পুড়ে গেছে। সাইফুল নামে কোম্পাণীর একজন প্রতিনিধি তাকে এসব ঔষধ সরবরাহ করেছেন। দুবলা ঘাস নিধনের কথা বলে ‘ভ্যালেন্ট টেক লিমিটেডের মোড়কের ‘দীপন’ নামের ওই ঔষধ সরবরাহ করেন। সে তার পুর্ব পরিচিত এবং পুর্ব থেকেই বিভিন্ন কোম্পাণীর ঔষধ সরবরাহ করে থাকে। ডিলার সহ কোম্পাণীর প্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী পুনরায় কয়েক দফায় ঔষধ প্রয়োগ করেও সুফল পাওয়া যায় নি। খবর পেয়ে কোম্পানীর প্রকৃত প্রতিনিধি এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন এবং ক্ষতি গ্রস্থদের ক্ষতিপুরন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সময় চেয়ে নিয়েছেন।
নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ওবায়দুল হক বিষয়টি জানার পর সংশ্লিষ্ট উপজেলা কৃষি অফিসারকে দ্রুত ব্যবস্থ গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়। ভেজাল প্রমান মিললে দায়িদের বিরুদ্ধে আনইগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতিপুর্বে জেলায় ভেজাল কীটনাশক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভুঞাঁ বিটিসি নিউজকে বলেন, ঔষধ প্রয়োগের পর জমির ধান পুড়ে যাওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কৃষি বিভাগকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দায়ি ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইন গত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ক্ষতিপুরনের বিষয়টি ভেবে দেখা হচ্ছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.