বড়াইগ্রামে তালাবদ্ধ ঘর থেকে কিশোরীর লাশ উদ্ধার

নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের বড়াইগ্রামের মাঝগাঁও ইউনিয়নের দক্ষিণ মালিপাড়া গ্রামের নিজ বাড়ির তালাবদ্ধ একটি ঘর থেকে আঁখি খাতুন (১৫) নামে এক কিশোরীর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে তালাবদ্ধ ঘর খুলে পরিবারের সদস্যরা কিশোরীর লাশ উদ্ধার করে দ্রুত কবর দেয়ার চেষ্টা করলে প্রতিবেশীরা এতে বাধা দেয়। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। নিহত কিশোরী আঁখি দক্ষিণ মালিপাড়া গ্রামের আব্দুল আলেক মিয়াজীর মেয়ে।

প্রতিবেশীরা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানায়, আঁখি খাতুনকে রহস্যজনক কারণে তার বাবা-মা গৃহবন্দি করে রাখে। দীর্ঘ ছয় মাস আঁখিকে একটি পরিত্যক্ত ঘরে আটকে রেখে বাইরে থেকে তালা দিয়ে রাখা হয়। ওই ঘরে কোন লাইট বা ফ্যান ছিলো না। সার্বক্ষণিক জানালা-দরজা বন্ধ রেখে আঁখিকে সকলের চোখের আড়ালে রাখতো। খাবার হিসেবে পাউরুটি, শুকনা রুটি অথবা যত সামান্য ভাত দরজার চৌকাঠের নিচ দিয়ে দিতো। ধারণা করা হচ্ছে খাবার না পেয়ে ও ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে সে মুত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

আঁখির সাথে বাবা-মা’র এই আচরণ কেন করতো জানতে চাইলে প্রতিবেশী রাজিয়া বেগম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, বিষয়টি তাদের কাছে পরিস্কার নয়।

মেয়েটি ব্রাক স্কুলে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ার পর মালিপাড়া মাদ্রাসায় ৫ম শ্রেণীতে ভর্তি করা হয়েছিলো। কিন্তু সেখানে তাকে আর পড়তে দেয়া হয়নি। আঁখিকে তার বাবা-মা সব সময় ঘরে তালাবন্দি করে রাখতো। গ্রামে কারো বাড়িতে বা কারো সাথে কথা বলতে দিতো না।

আঁখি খাতুন মানসিক প্রতিবন্ধি ছিলো কিনা জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি সদস্য মফিজুল ইসলাম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, যতদূর জানি ও দেখেছি মেয়েটি সুস্থ ছিলো।

তবে আঁখির মা নাসিমা বেগম এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আঁখি অসুস্থ ছিলো তাই মারা গিয়েছে।

বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ তৌহিদুল ইসলাম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, বিষয়টি রহস্যজনক হওয়ায় লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.