বড়াইগ্রামে কাঁটাখালি খাল নিয়ে দু’পক্ষের টানাটানি, সংঘর্ষের আশঙ্কা


নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের গড়মাটি এলাকার সংস্কারকৃত দীর্ঘ তিন কিলোমিটারের কাঁটাখালী খাল দখলের চেষ্টা করছে স্থানীয় দুটি গ্রুপ। ওই খালটি নিজেদের আওতায় আনতে দুটি পক্ষ বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করছে বলে পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।

একটি পক্ষ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের ভুয়া আদেশনামা তৈরী করে কাঁটাখালটি দখলের চেষ্টা করছে। অপর একটি পক্ষ গ্রাম প্রধানদের সাথে নিয়ে খাল দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। খাল নিয়ে দুই পক্ষের এই টানাটানি কোন এক পর্যায়ে সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে বলে ধারণা করছে এলাকাবাসী।

আজ রবিবার সকালে সরেজমিনে উপজেলার গড়মাটি কাঁটাখালী খাল এলাকায় গেলে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বিটিসি নিউজকে বলেন, গ্রাম পরিচালনা কমিটি খালটি নিজেদের দখলে রাখতে চায়। অপরদিকে সরকারি নিবন্ধনকৃত গড়মাটি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সদস্যরা খালটি দখল ও এর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মৌখিক অনুমতি পায় বলে দাবি করে।

গ্রাম পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবু আসলাম ওরফে বাবুল ডাক্তার বিটিসি নিউজকে জানান, কাঁটাখালি খালটি এতোদিন গ্রাম পরিচালনা কমিটি দেখভাল করতো। কিন্তু হঠাৎ করে গড়মাটি মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির লোকজন খালটি দখল ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ইউএনও অফিস তাদেরকে দিয়েছে বলে জানায়। পরবর্তীতে ইউএনও অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে যে এ ধরনের দায়িত্ব কোন সমিতি বা কাউকে দেওয়া হয়নি।

ওই সমিতির সভাপতি আব্দুস সামাদ বিটিসি নিউজকে জানান, আমাদেরকে হেয় করে ইউএনও’র কাছে অপরাধী করতে কে বা কাহারা ইউএনও অফিসের ভুয়া আদেশ নামা তৈরী করে তা সাংবাদিকদের দিয়েছেন তা তিনি জানেন না। তিনি এ জাতীয় ঘৃণ্য কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করে ইউএনও’র কাছে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেন।

বড়াইগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার পারভেজ বিটিসি নিউজকে জানান, ওই খালটি কোন প্রতিষ্ঠান বা সমিতি বা কোন ব্যক্তিকে লীজ দেয়া হয় নাই। লীজের আদেশনামাটি ভুয়া। খালটি সকলের জন্য উম্মূক্ত। স্মারক নাম্বারসহ ওই কাগজটি অমার অফিসের নয়। এই ঘটনার সাথে কে কে সম্পৃক্ত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রমাণ পেলে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একই সাথে দু’পক্ষকে ডেকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান সাপেক্ষে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরীর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৯ মাস আগে গড়মাটি বড়ধার স্লুইস গেইট হতে পদ্মবিলের মাথা পর্যন্ত দীর্ঘ ৩ কিলোমিটারের ওই খালটি প্রায় ৭৭ লক্ষ টাকা ব্যয় ৬ ফুট গভীর ও ৪৭ ফুট চওড়া করা হয়। খালটি খনন ও সংস্কার কাজের উদ্বোধন করে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুস কুদ্দুস। খালটি প্রাণ ফিরে পাওয়ার পর তা নিজেদের দখলে নেয়ার জন্য স্থানীয় দুই পক্ষ উঠে-পড়ে লাগে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.