ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আহমদীয় হওয়ায় কবর থেকে শিশুর লাশ রাস্তায়!

বিশেষ প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাইকিং করে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের (কাদিয়ানী) এক শিশুর লাশ কবর থেকে তুলে রাস্তায় ফেলে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (০৯ জুলাই) সকালে সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের ঘাটুরা গ্রামে এই ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি জানাজানি হয় রাতে।
পরবর্তীতে পুলিশী প্রহারায় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার কান্দিপাড়ায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের নিজস্ব কবরস্থানে ওই শিশুর লাশ পুনরায় দাফন করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফেনী জেলার সদর উপজেলার বাসিন্দা সাইফুল ইসলামের স্ত্রী স্বপ্না বেগম গত ৭ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের খ্রীস্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। স্বপ্নার বাবার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ঘাটুরা গ্রামে। গত কয়েক মাস ধরে তিনি তার বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। নির্ধারিত সময়ের আগে শিশুটি ভূমিষ্ঠ হওয়ার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ায় শিশুটিকে হাসপাতালে ইনকিউবেটরে রাখা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে শিশুটি মারা যায়। ধর্মীয় রীতি মেনে সকাল ৭টার দিকে শিশুটির লাশ ঘাটুরা গ্রামের একটি কবরস্থানে দাফন করা হয়। কিন্তু আহমদীয়া সম্প্রদায়ের হওয়ায় দাফনের ঘণ্টা দেড়েক পর আহমদীয়া বিদ্বেষীরা মাইকিং করে লোকজন জড়ো করে ওই শিশুর লাশ কবর থেকে তুলে কবরস্থানের বাইরের রাস্তায় ফেলে রেখে যায়।
শিশুর বাবা সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, মাইকিং করে আহমদীয়া সম্প্রদায় বিদ্বেষীদের জড়ো করা হয়। এরপর লাশ কবর থেকে তুলে কবরস্থানের সীমানা প্রাচীরের বাইরে রাস্তায় ফেলে রাখা হয়। তিনি বলেন, কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে সেটি আমরা জানি না। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছলে বেলা ১১টায় পুলিশি পাহারায় ওই শিশুর লাশ পৌর এলাকার কান্দিপাড়ায় আহমদীয়া সম্প্রদায়ের নিজস্ব কবরস্থানে দাফন করা হয়।
সাইফুল ইসলাম আরো বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, ঘাটুরার কবর স্থানটিতে আমাদের সম্প্রদায়ের লোকজনের মরদেহ দাফন নতুন নয়। অনেক আগে থেকেই এখানে দাফন হয়ে আসছে। যদি তাদের কোনো আপত্তি থাকতো তাহলে আমাদের বলতে পারতো পরবর্তীতে আর যেন কাউকে এই কবরস্থানে দাফন করা না হয়। কিন্তু দুইদিনের একটা শিশুর লাশ কবর থেকে তুলে ফেলে দিবে এটা কল্পনাও করা যায় না।
এ ব্যাপারে সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন হাজারী আঙ্গুর বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, গ্রামের বাসিন্দা এবং হুজুররা বাঁধা দিয়েছেন- আহমদীয়া সম্প্রদায়ের কাউকে কবর দেওয়া যাবে না। আমরা গিয়ে দেখি লাশ কবরস্থানের বাইরে। পরে কান্দিপাড়া এলাকায় তাদের সম্প্রদায়ের কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিলো। দুই পক্ষ বিষয়টি সমাধান করে ফেলে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি মোঃ লোকমান হোসেন পলা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.