বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিহার বিধানসভা নির্বাচনে এনডিএ জোটের দুর্দান্ত অগ্রযাত্রা ভারতের জাতীয় রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করেছে। দুই দফার ভোট শেষে ২৪৩ আসনের মধ্যে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরে এসেছে বিজেপি–জেডিইউ নেতৃত্বাধীন এই জোট।
ফল ঘোষণার পর দিল্লিতে বিজেপির সদর দপ্তরে দেওয়া ভাষণে নরেন্দ্র মোদি বলেন, বিহারে এনডিএর এই বিপুল জয়ে পশ্চিমবঙ্গেও একই ফল পাওয়ার ভিত্তি তৈরি হয়েছে। তার ভাষায়, ‘গঙ্গা যেমন বিহার পেরিয়ে বাংলায় প্রবাহিত হয়, তেমনি বিহারের এই বিজয়ও বাংলায় আমাদের জয়ের পথ খুলে দিয়েছে।’
বিহারে এবারের নির্বাচনে ২৪৩ আসনের মধ্যে ২০২টির বেশি আসনে জিতে এনডিএ জোট প্রায় একতরফা জয় নিশ্চিত করে। সবচেয়ে বড় শরিক হিসেবে বিজেপি একাই উঠে এসেছে সর্ববৃহৎ দলে। দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে মোদি বলেন, ‘আপনাদের আশা-আকাঙ্ক্ষাই আমার অঙ্গীকার, আপনাদের স্বপ্নই আমার প্রেরণা। বিজেপির শক্তি তার কর্মীরাই।’
তিনি দাবি করেন, মহাগাঁটবন্ধনের ভরাডুবি প্রমাণ করেছে—বিজেপি যে ‘জঙ্গলের রাজত্ব’ ফিরে আসার আশঙ্কা তুলে ধরেছিল, তা জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। পাশাপাশি তিনি পশ্চিমবঙ্গের ভোটারদের আহ্বান জানান রাজ্য থেকেও ‘জঙ্গলরাজ’ উপড়ে ফেলার জন্য। মোদি আরও বলেন, বিহারের এই জয় শুধু বাংলাই নয়, দক্ষিণ ভারতেও বিজেপির কর্মীদের উজ্জীবিত করবে।
দিনের শুরুতে প্রবণতা পরিষ্কার হতেই বিজেপি নেতারা পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করতে শুরু করেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘সবচেয়ে খারাপের জন্য প্রস্তুত থাকতে’ বলেন। পরে বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের নেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, আগামী বছর রাজ্যে ‘অসাধারণ’ জয় পাবে বিজেপি। ‘মিশন বাংলা’ উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শুকান্ত মজুমদার বলেন, এখন সময় এসেছে ‘বাংলার জঙ্গল পরিষ্কার করার’।
বিজেপির এই চ্যালেঞ্জের জবাব দেয় তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলা হয়, ‘আসুক, দেখা যাবে।’ সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি পুরোনো ভিডিওও শেয়ার করা হয়, যেখানে তিনি বলছেন, ‘আমাদের সঙ্গে খেলতে এলেই কিন্তু সহজ হবে না।’
বিজেপিকে কটাক্ষ করে তৃণমূল আরও জানায়, বাংলাকে ‘বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের রাজ্য’ বলে অপমান করার পর ভোট চাইতে এসে ক্ষমা চাওয়ার বদলে ঔদ্ধত্য দেখানো লজ্জার বিষয়। তৃণমূলের ভাষায়, ২০২৬ সালের নির্বাচনে বাংলার মানুষ বিজেপির এই ‘অহংকার’ গণতান্ত্রিকভাবে পরাজিত করবে এবং ‘অসম্মানিত হয়ে ফিরে যেতে বাধ্য করবে’।
তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও দাবি করেন, বিহারের ফলাফল পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে কোনো প্রভাব ফেলবে না। তার ভাষায়, ‘ওটা বিহারের সমীকরণ। বাংলার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। ২৫০টির বেশি আসন পেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই আবার মুখ্যমন্ত্রী হবেন।’ #

















