ঢাকা প্রতিনিধি: তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘অনেকের মতেই নির্বাচনের বছর বলে বিশ্ববেনিয়াদের প্রেসক্রিপশনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতি সূচকে বাংলাদেশকে একধাপ নামানো হয়েছে। এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
আজ বুধবার (০১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর পান্থপথে বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানের পূর্বে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
৩১ জানুয়ারি মঙ্গলবার প্রকাশিত ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের বিশ্ব দুর্নীতি সূচক ২০২২ প্রতিবেদনে বাংলাদেশের এক ধাপ পিছিয়ে পড়া নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই বলছেন, এটা তো নির্বাচনের বছর, এ জন্য বিশ্ববেনিয়াদের প্রেসক্রিপশনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল এক পয়েন্ট কমিয়ে দিয়েছে। নির্বাচনের আগে তো আর কোনো প্রতিবেদন হবে না। আগামী বছর আবার জানুয়ারিতে বা ফেব্রুয়ারিতে যখন প্রতিবেদন হবে তখন নির্বাচন হয়ে যাবে।’
‘ইদানিংকালে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের কার্যক্রম অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে’ উল্লেখ করে উদাহরণ দিয়ে ড. হাছান বলেন, ‘পদ্মা সেতু নিয়ে যখন মিথ্যা অভিযোগ উপস্থাপন করা হলো, তখন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল আগ বাড়িয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে দুর্নীতি হয়েছে বলে। পরে দেখা গেল যে, দুর্নীতি তো হয়ই নি বরং কানাডার আদালতে বিশ্বব্যাংক হেরে গেছে। বিশ্বব্যাংক আবার এসে প্রস্তাব করেছে যে, তারা অর্থায়ন করতে চায়। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা নেননি। কিন্তু ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল তাদের বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চায়নি। এভাবে করোনার টিকা নিয়েও এবং আরও নানা বিষয়ের ওপর ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের নানা বক্তব্য ছিলো, যেগুলো অনেকটাই মনে হয়েছে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের মতো সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশন থাকা এবং তাদের কার্যক্রমকে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু তাদের কার্যক্রম যদি বিশ্ব বেনিয়াদের প্রেসক্রিপশনে হয় বা তাদের কারো কারো সহায়ক হিসেবে হয় কিম্বা কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয় সেটা অত্যন্ত দু:খজনক। আগে বিএনপির সময় পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে দেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, চারবার এককভাবে একবার যুগ্মভাবে আফ্রিকার একটি দেশের সাথে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতি দমন করার জন্য জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করছেন। বাংলাদেশে দুর্নীতি কমেছে।’
এ সময় বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে বিএনপির সমালোচনা প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব তো শিক্ষক ছিলেন, ঢাকা কলেজে পড়াতেন। তাকে বলবো, আগে পড়াতেন এখন সম্ভব হলে পড়তে হবে। কারণ ইউরোপের সব দেশে জ্বালানী তেলের মূল্য বাড়ানো হয়েছে। যুক্তরাজ্যে জ্বালানীর মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের বেশি। আমেরিকাসহ সমস্ত উন্নত দেশে বিদ্যুতের মূল্য বেড়েছে কারণ জ্বালানী তেল ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এরপরও বাংলাদেশ সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহের চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু কত ভর্তুকি দেওয়া যায়! ভর্তুকিরও তো একটা মাত্রা আছে। আমাদের অর্থনীতিকে তো টিকিয়ে রাখতে হবে। সে জন্য মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে।’
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.