বিভিন্ন সমস্যায় বিপর্যস্ত বশেমুরবিপ্রবির ট্যুরিজম বিভাগ

বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি: চারিদিকে বড় ঘাস আর ঝোপঝাড়ের মাঝে ভগ্ন ছাউনিযুক্ত একটি টিনশেড ভবন। প্রথম দর্শনে এটিকে হয়তো একটি পরিত্যক্ত ভবন মনে হলেও এখানেই প্রায় তিনবছর ধরে চলছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের কার্যক্রম।
আজ শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিভাগটিতে তিনটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুম সহ, শিক্ষকদের রুম এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের জন্য মাত্র দুটি রুম বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি কক্ষ ক্লাসরুম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আর অপর কক্ষটিতে কাঠের পার্টিশন দিয়ে একাংশ ক্লাসরুম এবং অপর অংশ শিক্ষকদের কক্ষসহ প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ব্যবহার করা হয়।
এ বিষয়ে বিভাগটির চেয়ারম্যান তছলিম আহম্মদ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, “রুম সংকটের জন্য বিভাগটিতে শিক্ষকদের এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের জন্য কোনো আলাদা কক্ষ নেই। একটি রুমেই  সকলকে বসতে হয়। এছাড়া চারপাশের অবস্থার কারণে ক্লাস চলাকালীন সময়ে প্রায়ই ক্লাসরুমে কুকুর, গরু ছাগল এমনকি মাঝে মাঝে সাপও ঢুকতো৷ একবার শিক্ষার্থীরা ক্লাসরুম থেকে একটি বড় আকারের সাপ মেরেছেও। এরপর গত মার্চে আমরা নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম কিন্তু বিষয়টির কোনো সমাধান হয় নি।”
এসময় তিনি আরও বলেন, “এখানে শিক্ষক, শিক্ষাথীসহ কর্মকর্তা, কর্মচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিভাগের কার্যক্রম পরিচালনা করেন। যদি ক্লাসে এসে কিংবা অফিসিয়াল কার্যক্রম পরিচালনা করতে এসে সাপের কামড়ে কারো মৃত্যু হয় আমরা তখন কি উত্তর দিবো?
তবে শুধুমাত্র সাপ কিংবা গবাদি পশুর উপদ্রব নয় বিভাগটিতে রয়েছে চোরের উপদ্রব ও। বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনের অংশে অবস্থিত হওয়ায় নেই বিভাগটিতে নেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। আর এই দূর্বল নিরাপত্তাব্যবস্থার ফলে সম্প্রতি এই বিভাগ থেকে দুটি কম্পিউটার চুরি হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে বিভাগটি থেকে মাত্র দশ হাত দূরে একটি খোলা টয়লেট আর পাঁচ হাত দূরে নির্মাণশ্রমিকদের একটা ঝুপড়ি ঘর দেখতে পাওয়া গেছে।
বিভাগটির সভাপতি তছলিম আহম্মদ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, নিরাপত্তাহীনতার কারণে তারা বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) প্রিন্টার,ল্যাপটপ এবং শিক্ষার্থীদের সনদপত্রসহ বিভাগের মূল্যবান দ্রব্যাদি রেজিস্ট্রার দপ্তরে হস্তান্তর করেছেন।
এদিকে ক্লাসরুম সংকট ছাড়াও বিভাগটিতে রয়েছে শিক্ষক সংকটও। বিভাগটি থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী ১৭৬ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে বিভাগটিতে শিক্ষকের সংখ্যা মাত্র চারজন। যাদের মধ্যে দুজন শিক্ষাছুটিতে রয়েছেন। ফলে মাত্র দুজন শিক্ষকের পক্ষে এত অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকার্যক্রম চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবির উপাচার্য ড. এ. কিউ. এম মাহাবুব বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, “ তাদের সমস্যার বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মানাধীন ভবনসমূহ তৈরীর পর এবং নতুন শিক্ষক নিয়োগের পর এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এসময় তিনি আরো জানান, “ইতোমধ্যে বিভাগটির আশপাশের ঝোপঝাড় পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করা হয়েছে।  আগামীকাল শনিবার থেকে পরিচ্ছন্নতার কাজ আরো জোরদার শুরু হবে এবং টয়লেট ও ঝুপড়ি গুলো সরিয়ে ফেলা হবে হবে”।
প্রসঙ্গত, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে বশেমুরবিপ্রবিতে যাত্রা শুরু করে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বশেমুরবিপ্রবি (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি নওরীন বর্না। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.