বানিয়াচংয়ে ট্রাক থেকে কন্যাসন্তানকে নদীতে ছুড়ে হত্যা করল পাষণ্ড বাবা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে ট্রাক থেকে নদীর পানিতে ফেলে নিজের দেড় বছরের শিশুকন্যাকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন পাষণ্ড বাবা ইমরান আহমেদ। আজ সোমবার বিকেলে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ঝুমু সরকারের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে তিনি এই স্বীকারোক্তি প্রদান করেন।
বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ রঞ্জন দে বিটিসি নিউজকে জানান, রবিবার রাতে সুনামগঞ্জের দুয়ারা বাজারে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে পুলিশ ইমরান আহমেদকে গ্রেপ্তার করে। তিনি সিলেটের সারিঘাট এলাকার বাসিন্দা এবং পেশায় ট্রাকচালক।
গ্রেপ্তারের পর ইমরান আহমেদ পুলিশকে জানান, তিনি চারটি বিয়ে করেছেন।
তিনি আরো জানান, ইমরান জানান, বানিয়াচং উপজেলার কাগাপাশা এলাকায় নদী থেকে উদ্ধারকৃত শিশুকন্যা এনির মা ইয়াসমিন আক্তার অন্য পুরুষদের সাথে মেলামেশা করায় তাঁর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। পরে সালিসে শিশু এনিকে মাসে দুই হাজার টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরই মধ্যে এনি অসুস্থ হয়ে পড়লে ২৯ জানুয়ারি রাতে ইমরান ইয়াসমিন ও কন্যাশিশুকে চিকিৎসার কথা বলে ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছিলেন।
এ সময় তাঁদের সঙ্গে ইয়াসমিনের আগের স্বামীর ঘরের তিন বছরের শিশুপুত্র সাফি আহমদও ছিল।
ইমরান ট্রাক চালিয়ে হাসপাতালের দিকে না গিয়ে অন্যদিকে যেতে শুরু করলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। পরে গভীর রাতে বানিয়াচং উপজেলার কাগাপাশা বাজারে পশ্চিমে ব্রিজের কাছে গাড়ি থামিয়ে ইয়াসমিনের কোল থেকে শিশুকন্যা এনিকে ছিনিয়ে নিয়ে পানিতে ফেলে দেন ইমরান।
এ সময় শিশুপুত্র সাফিকেও হত্যার চেষ্টা করেন ইমরান উল্লেখ করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, এ সময় ইয়াসমিন তাঁর পায়ে ধরে শিশুপুত্রকে রক্ষা করেন।
পরদিন ভোরে নবীগঞ্জ উপজেলার কোনো এক স্থানে ইয়াসমিন ও তাঁর শিশুপুত্রকে ট্রাক থেকে নামিয়ে দিয়ে চলে যান ইমরান ও হেলপার বাদল মিয়া। পরদিন এনির লাশ উদ্ধার করে বানিয়াচং থানার পুলিশ। শুরুতে শিশুটিকে উদ্ধার করে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে হবিগঞ্জ শহরের রাজনগর কবরস্থানে দাফন করা হলেও পরে শিশুর মা এনি লাশ শনাক্ত করেন।
এ ঘটনায় শিশু এনির মা ইয়াসমিন আক্তার বাদী হয়ে পিতা ইমরাম আহমেদ ও হেলপার বাদল মিয়াকে আসামি করে বৃহস্পতিবার বিকেলে বানিয়াচং থানায় হত্যা মামলা করেন। এরপর ওই শিশু হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন হয়।
তিনি আরো জানান, ইমরান মাদকাসক্ত। তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট ঘটনা স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করেন। পরে সন্ধ্যায় তাঁকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন বিজ্ঞ বিচারক।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর হবিগঞ্জ প্রতিনিধি মো. জুনাইদ চৌধুরী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.