বাগেরহাটে ৩৯৬০ হেক্টর সুপারি বাগান, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও লাভবান হচ্ছে সিন্ডিকেট

বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটের সুপারির বাম্পার ফল হলেও দাম পাচ্ছেন না কৃষকেরা। প্রত্যেক হাটে সক্রিয় রয়েছে সিন্ডিকেট। তাই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও লাভবান হচ্ছে সিন্ডিকেট। গেল বছর কুড়ি সুপারি (২৩১) টি ৮০০ টাকায় বিক্রি হলেও এবার সেই সুপারির দাম নেমে এসেছে ২৫০ থেকে ৫০০ টাকার ভিতরে।
গত বছরের তুলনায় দাম অর্ধেকে নেমে আসায় হতাশ কৃষকেরা। বাগেরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের তথ্য অনুযায়ী বাগেরহাটের সুপারির বাগান রয়েছে ৩৯৬০ হেক্টর জমিতে। ২২-২৩ অর্থ বছরে সুপারির উৎপাদন হয়েছিলো ২৬ হাজার ১২৩ মেট্রিকটন। এবছর তার থেকে বেশি উৎপাদন হবে বলে আশা কৃষি বিভাগের।
বাগান মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফলন বেশি হওয়ায় মৌসুমের শুরুতেই বাজার বেশি থাকলেও কয়েক সপ্তাহ পর থেকে কমতে থাকে সুপারির দাম। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সুপারি কিনে বাইরে পাঠাতে থাকে তারা। তাই বাজারে সুপারির অনুপাতে বাইরের ক্রেতা কম। এখনও দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকারি ব্যবসায়ীরা বাধাল, কচুয়া, মাজারসহ বড় বড় হাটগুলোয় আসায় কম দমে বাধ্য হয়ে স্থানীয় পাইকারদের কাছে কমদামে সুপারি বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের।
কচুয়া উপজেলার সাংদিয়া গ্রামের গ্রামের সুপারি চাষী আবুল হোসেন খান জানান, গত বছরের তুলনায় এবছর সুপারির দাম অনেক কম। বাজারে আসছেনা বাইরে পাইকাররা। স্থানীয়রা সিন্ডিকেট এর মাধ্যমে সুপারি বিক্রি করছে। যার ফলে খুব অল্প দামে বিক্রি করতে হচ্ছে সুপারি। যে সুপারি গত বছর ৮০০ টাকা কুড়ি ছিল এবছর সেই সুপারি এখন ২৫০ থেকে ৫০০ টাকা। কেউই বেশি দাম বলেনা। নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি সিন্ডিকেট কাজ করছে সুপারির হাটগুলোতে।
একই গ্রামের আরেক কৃষক ভাস্কর ব্যানার্জি বিটিসি নিউজকে জানান, একটি গাছ থেকে একছড়া সুপারি পেড়ে আনতে দশ টাকা দিতে হয়। তারপর ছড়া থেকে সুপুরি ছাড়ানো, গণনা করা, হাটে নেওয়াও অনেক খরচ। তারপর যদি ৮০০ টাকার সুপারি আড়াই শো থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি করতে হয় সেটা খুব দুঃখ জনক। আমরা হতাশ কি করবো জানিনা। কোন ব্যবসায়ী বেশি দাম বলেনা। আমাদের মনে হয় সিন্ডিকেট কাজ করছে।
কচুয়া উপজেলার সবচেয়ে বড় সুপারি ব্যবসায়ী নারায়ণ চন্দ্র বাওয়ালি বিটিসি নিউজকে বলেন, আমরা সুপারি কিনে রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠাই। আড়াই শো থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত সুপারি কিনছি।
শহিদ খান নামে আরএক ব্যবসায়ী বিটিসি নিউজকে বলেন, বাজারে সুপারি আমদানি বেশি তাই দাম কম। আমরা তো কোন সিন্ডিকেট দেখছি না।
বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শংকর কুমার মজুমদার বিটিসি নিউজকে জানান, বাগেরহাটে ৩৯৬০ হেক্টর সুপারি বাগান রয়েছে। ২২-২৩ অর্থ বছরে ২৬ হাজার ১৩৩ মেট্রিক টন সুপারি উৎপাদিত হয়েছে। আশা করি গত বছরের থেকে এবছর আরো সুপারি উৎপাদন বেশি হবে। তবে দাম ও সিন্ডিকেটের ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেননি এই কর্মকর্তা।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগেরহাট প্রতিনিধি মাসুম হাওলাদার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.