বাংলাদেশ-ভারতের সাংস্কৃতিক বন্ধন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনে বিরাট ভূমিকা রাখবে – কৃষিমন্ত্রী

PRESS (PID) RELEASE: কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্র। সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে তাঁদের সঙ্গে আমাদের মিল আছে। তাঁরা সংস্কৃতিতে আমাদের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে আছে। সংস্কৃতির জগতে তাঁরা আমাদের চেয়ে সমৃদ্ধ। দুই দেশের মধ্যে যে সাংস্কৃতিক বন্ধন রয়েছে তা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনে বিরাট ভূমিকা রাখবে।
কৃষি মন্ত্রী আজ দুপুরে রাজশাহী মহানগরীর নগর ভবনের গ্রীন প্লাজায় বাংলাদেশ-ভারত ৫ম কালচারাল মিট উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
কৃষি মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে সীমারেখা রয়েছে তা কখনো বাঁধা হতে পারে না। আমরা হিন্দু-মুসলমান- বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবাই একই মানুষ। আমাদের সাংস্কৃতিক ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। আজকে যে সাংস্কৃতিক মিলনমেলা হচ্ছে এর গুরুত্ব অপরিসীম। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আগামী দিনেও চলার পথে দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর ও সুদৃঢ় হবে। এটি একটি মাইলস্টোন হিসেবে থাকবে। এটি একটি মহান উদ্যোগ।
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সীমানা প্রাচীর দুই দেশের মানুষের হৃদয়ের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করতে পারবে না, এটিই হল সাংস্কৃতিক মিলনমেলার মূল লক্ষ্য। অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ করে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে আমাদের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে হবে।
মন্ত্রী মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত আমাদেরকে আশ্রয় দিয়ে, খাদ্য দিয়ে, অস্ত্র দিয়ে, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সাহায্য করেছে। তখন ভারতের অর্থনীতি এতটা শক্তিশালী ছিল না। তবুও তাঁরা অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে আমাদেরকে দেখভাল করেছে। সেই ঋণ আমরা কোনো দিন ভুলতে পারব না।
কৃষি মন্ত্রী বলেন, ভারত বিভিন্ন পথ-প্রতিকূলতা পেরিয়ে আজ সারা পৃথিবীর মধ্যে সবদিক থেকে একটি উন্নত দেশ। পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ। গণতন্ত্র উন্নয়ন, মানবজাতির কল্যাণ ও বিকাশের জন্য অন্যতম ভূমিকা পালন করে থাকে। আমরা যারা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ ও সমৃদ্ধ ভারতবর্ষের চিন্তা করি তাদের কাছে এই অর্জনগুলো খুবই আনন্দের। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমি তা মনে করি।
সংস্কৃতিকে শক্তি হিসেবে তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্তে¡র ভিত্তিতে যে পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছিল সে রাষ্ট্রের দুই অংশের মানুষের জীবন-যাপন, সামাজিক আচার-আচরণ কোনোকিছুতেই কোনো বন্ধন ছিল না। একমাত্র বন্ধন ছিল ধর্ম। তারপর সংখ্যা গরিষ্ঠের ভাষাকে কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। বাঙালিদেরকে শোষণের চিরস্থায়ী পথ তৈরির চেষ্টা হয়েছিল। তারা বাঙালি জাতিকে একটি বন্ধ্যা জাতিতে পরিণত করতে চেয়েছিল। কিন্তু বাঙালি জাতি ভাষা আন্দোলন করেছিল। যার মাধ্যমে স্বাধীনতার ভিত রচিত হয়েছিল।
এসময় কৃষি মন্ত্রী দুই দেশের সাংস্কৃতিক বন্ধন মজবুত করার মাধ্যমে যে কোনো ধরনের অপশক্তিকে ধ্বংস করার আহ্বান জানান।
রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহ্রিয়ার আলম, রাজশাহী বিভাগের সংসদ সদস্যগণ, ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়ক এসএম সামছুল আরেফীন, ভাষা সৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
বিকেলে কৃষি মন্ত্রী রাজশাহীর তানোর উপজেলার কামারগাঁও ইউনিয়নের মালার মোড় ও হরিপুর গ্রামে কৃষকের আলুর মাঠ পরিদর্শন করেন।
NEWS FROM Regional Information Office (PID). Press Information Department. Ministry of Information. #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.