বরেন্দ্র অঞ্চলের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে কাজ করছে বিএমডিএ 

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশের শস্য ভান্ডার উত্তরা লের তথা বরেন্দ্র  অঞ্চলের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে কাজ করছে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। আশির দশকে শুধুমাত্র বৃষ্টি নির্ভর ফসলকে কেন্দ্র করে বরেন্দ্র অ লেল জনগণ জীবন যাপন করতো। বরেন্দ্র অঞ্চলের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ১৯৮৫ সালে বিআইএডিপি প্রকল্প গ্রহণ করেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষি জমিতে সেচের সুব্যবস্থা করা হয়। বর্তমানে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা  বিএমডিএ বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষি ও কৃষকদের উন্নয়নে কাজ করছে ।  বরেন্দ্র অ লে গভীর নলকুপের মাধ্যমে  কৃষকরা সেচ সুবিধা পাওয়ায় অতিরিক্ত ফসল উৎপাদিত হচেছ ।

বরেন্দ্র অঞ্চলে  বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের খাল- খাড়ী খনন ও জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্প ক্রসড্যাম প্রকল্প, পাতকুয়া স্থাপন  প্রকল্প, ড্রেন, স্লুইচ গেট নির্মাণ, ভু-গর্ভ’ সেচ নালা নির্মাণ, বনায়ন প্রকল্প এই অ লের লাখ লাখ কৃষকের সৌভাগ্যের দ্বার খুলে দিয়েছে। বর্তমানে সঠিক সময়ে বোরো চাষ  হচ্ছে ।  আর শুষ্ক মৌসুমে আমন, আউশ বোরো ধান চাষের জন্য কৃষকদের বৃষ্টির উপর নির্ভর করতে হয়না। বরেন্দ্র  অঞ্চলের রাজশাহী , নওগাঁ, নাটোর , পাবনার কৃষকরা বলছে খাল ও জলাবদ্ধতা দূরীকরণে  তাদের ফসল উৎপাদনে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।

গত দুই বছর আগেও রাজশাহীর ৩ টি ও  নওগাঁর ৬ টি উপজেলার ১০টি বিলের পানি নামতো দেরীতে। ফলে এই অঞ্চলের প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার হেক্টর জমি তলিয়ে থাকায়  জমিতে কৃষকদের বোরো ধানের চারা রোপন করতে বিলম্ব হতো এক থেকে দেড়মাস। আর এর ফলে বোরো মৌসুমে  ধান কাটার সময় বন্যার পানিতে তলিয়ে যেতো পাকা ধান। মারাত্বক ভাবে ক্ষতির শিকার হতো কৃষকরা কিš‘ ৯২ কিলোমিটার খাল কাটার পর  আর এই সমস্যা নেই ।  খাল খনন ও জলাবদ্ধতা দূরীকরণের কল্যানে এই অ লের কয়েকটি উপজেলার দেড় লক্ষাধিক মানুষ এর সুফল পাচ্ছে। কৃষকদের পানির সমস্যা দুর হয়েছে। হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।

নওগাঁয়  সেচ সুবিধা সম্প্রসারণ ও জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্পের পরিচালক নিবার্হী প্রকৌশলী এ টি এম মাহফুজুর রহমান বিটিসি নিউজকে জানান, নওগাঁ জেলার নওগাঁ সদর উপজেলাসহ রাণীনগর, আত্রাই, মান্দা, পত্নীতলা ও ধামুরহাট উপজেলাসহ বিল ও বিল সংলগ্ন এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ করে অতিরিক্ত ফসল উৎপাদনের জন্য ২০১৫-১৬ অর্থবছর হতে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত  ৪ বছর মেয়াদে ৭৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নওগাঁ সদর উপজেলার দুবলহাটি, বলিহার, হাঁসাইগাড়ী, শিকারপুর ইউনিয়নের মনসুর বিল, পাকুড়িয়া বিল, বারোমাসিয়া বিল গুলি জলাবদ্ধতা দূরীকরণের জন্য খাল পুনঃখনন প্রকল্পের ৯২ কিলোমিটার খাল খনন ও ১৪ একর জলাশয় পুনঃ খননের কাজটি গত জুন মাসে শেষ  হয়েছে ।

এর ফলে নওগাঁ সদর উপজেলার প্রায় ৯ হাজার হেক্টরসহ প্রকল্প এলাকায় ১৫হাজার হেক্টরের অধিক জমিতে অতিরিক্ত প্রায় ৯০ হাজার  মেঃ টন ফসল উৎপাদিত  হচ্ছে। বর্তমান বাজার দর হিসেবে যার বাজার মূল্য প্রায় ২শ, ২৫ কোটি  টাকা।

রাজশাহীর বাঘা ও চারঘাট উপজেলার  সেচ সুবিধা সম্প্রসারণ ও জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক নিবার্হী প্রকৌশলী মো. নাজিরুল ইসলাম বিটিসি নিউজকে জানান, রাজশাহীর বাঘা , চারঘাট, পুঠিয়াও পবা উপজেলায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের কাজ চলছে । এই প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ২শ৫০ হেক্টর জমির জলাবদ্ধতা দুর হবে, ৩শ৫০ হেক্টর জমি সেচ সুবিধার আওতায় আসবে । এর ফলে ১ হাজার ৬শ হেক্টর জমিতে অতিরিক্ত ৮ হাজার ৮শ, মে টন ফসল উৎপাদন হবে। যার বাজার মুল্য প্রায় ২,২০ কোটি টাকা। শুধু তাই নয় প্রকল্প এলাকায় ২৪ কিলোমিটার খাল খনন করা হয়েছে ।

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী মো. আব্দুর রশীদ বিটিসি নিউজকে জানান, আশির দশকে শুধুমাত্র বৃষ্টি নির্ভও  ধান বা  ফসলকে কেন্দ্র করে বরেন্দ্র অঞ্চলের জনগণ জীবন যাপন করতো। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ১৯৮৫ সালে বিআইএডিপি প্রকল্প গ্রহণ করেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষি জমিতে সেচের সুব্যবস্থা  করা হয়। এরপর ১৯৮৭ সালে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা  বিএমডিএ বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ শুরু করে । বরেন্দ্র এলাকার ৮০ দশকের এক ফসলি জমি  থেকে উন্নতি হয়ে এখন তিন ফসলি বা চার ফসলি জমিতে পরিনত হয়েছে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর স্টাফ রিপোর্টার আমানুল্লাহ আমান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.