বরিশালে সাড়ে ৮ মেট্রিক টন খয়রাতি চাল ভাগবাটোয়া

বরিশাল ব্যুরো: বরিশালের গৌরনদী উপজেলার সরকারি কতিপয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঈদুল ফিতরের সাধারন রিলিফের (জিআর) বরাদ্দকৃত অসহায় ও দুস্থ পরিবারের সাড়ে ৮ মেট্রিক টন চাল ভাগবাটোয়ারা করে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উপজেলা প্রকল্প কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ত্রাণ ও দূর্যোগ মন্ত্রনালয় পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ১ হাজার ৩৩৩ টি হতদরিদ্রে পরিবারের জন্য ৩০ কেজি করে সাধারন রিলিফ (জিআর) হিসেবে ৪০ মেট্রিক টন খয়রাতি চাল বিশেষ বরাদ্দ দেয়া হয়।

স্থানীয় সংসদ সদস্য ৭টি ইউনিয়নের তালিকা অনুমোদন দেন। উপজেলা প্রকল্প অধিদপ্তর ঈদের আগের দিন ১ হাজার ৩৩টি দুস্থ পরিবারের মধ্যে ৩০ কেজি করে ৩১ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করেন। ওই দিন ৩শ’ টি পরিবার অনুপুস্থিত থাকায় তাদের নামে বরাদ্দকৃত ৯ মেট্রিক টন চাল (১৮০ বস্তা) উপজেলা হলরুমে (অস্থায়ী গোডাউন) রাখা হয়। ঈদের পরে ওই চাল বিতরণের কথা ছিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানান, গত বৃহস্পতিবার তালিকাভূক্ত সুবিধাভোগী পরিবারের লোকজন চাল নেয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপস্থিত হলে অনুপুস্থিত থাকার কারণে তাদের নামে বরাদ্দকৃত চাল অন্যদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে বলে জানানো হয়। তালিকাভূক্তরা চাল না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা ত্রাণ ও দূর্যোগ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, অনুপুস্থিত ৩শ পরিবারের চাল অন্য কাউকে দেয়া হয়নি। ওই ৯মেট্রিক টন (১৮০বস্তা) চাল উপজেলা পরিষদের হলরুমে অস্থায়ী গোডাউনে রাখা ছিল।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সাড়ে ৮মেট্রিক টন (১৭০ বস্তা) চাল কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী ও প্রভাবশালীরা ভাগাভাগি করে নিয়ে আত্মসাত করেছে। গুদামে এখনো ১০ বস্তা চাল মজুদ রয়েছে। ওই ঘটনার ফলে ৩শ পরিবার ঈদ উপলক্ষে বিশেষ বরাদ্দের চাল প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

তালিকাভূক্তরা চাল না পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে শরিকল ইউপির চেয়ারম্যান মো. ফারুক হোসেন মোল্লা বলেন, ঈদের আগের দিন চাল আনতে না পারায় আমার ইউনিয়নের ২৫টি পরিবার ওই চাল প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

স্থানীয় খাঞ্জাপুর ইউপির চেয়ারম্যান মো. নুর আলম সেরনিয়াবাত বলেন, আমার ইউনিয়নে ২০টি পরিবার চাল আনতে গিয়ে না পেয়ে ফিরে এসেছে। চাল না দেয়াকে কেন্দ্র করে আমার পরিষদের সদস্য কবির হোসেনের সঙ্গে কর্মকর্তাদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। একই অভিযোগ করেন, নলচিড়া ইউপির চেয়ারম্যান গোলাম হাফিজ মৃধা।

গৌরনদী উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা (পিআইও) মো. কবির হোসেন বলেন, শুনেছি ঈদের আগে চাল বিতরণ করা হয়েছে। আমি ঢাকায় ছিলাম, এর বেশী কিছুই বলতে পারবো না। গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদা নাছরিন বলেন, জি.আরের চাল বিতরণে অনিয়ম হয়ে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.