বকশীগঞ্জে নদী ভাঙনে বিলীন হচ্ছে খানপাড়া গ্রাম, কাজে আসছে না জিও ব্যাগ!


বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি: জামালপুরের বকশীগঞ্জে কয়েক বছরের তীব নদী ভাঙনের কারণে মানচিত্র থেকে মুছে যাচ্ছে আইরমারী খান পাড়া। দশনী নদীর তীব্র ভাঙনে এই গ্রামের অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে। গত পাঁচ বছরে প্রায় ৫ শতাধিক বসত ভিটা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়নের আইরমারী খান পাড়া বেয়ে গেছে দশানী নদী।দশানী নদীর কড়াল গ্রাসে প্রতি বছরই নদী ভাঙন দেখা দেয় এই গ্রামে। শুধু খানপাড়া গ্রামই নয় পাশ্ববর্তী আইরমারী, খেওয়ারচর গ্রামের নদী ভাঙন দেখা যায়। বন্যার পানি আসলে দশানী নদী তার পুরনো চেহারায় ফিরে যায়। ধনী, গরিব , অসহায়, বীরমুক্তিযোদ্ধা সহ অনেকেরে বাড়ি ঘর খেয়ে ফেলেছে এই প্রমত্তা দশানী নদী। প্রতিদিনই বসত ভিটা সহ ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে এই নদীতে।
আইরমারী খানপাড়া গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা একেএম আসাদুজ্জামান খান খোকা জানান, এ পর্যন্ত আমার বাড়ি ঘর ৪ বার নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এবারও দশানীর পেটে গেছে আমার ভিটে মাটি । একারণে নতুন করে বাড়ি ঘর অন্যত্র সরিয়ে নুতন ঠিকানা খুঁজতে হচ্ছে।
স্থানীয়দের দাবি প্রতি বছর দশানীর ভাঙন অব্যাহত থাকলে আগামি দুই বছেেরর মধ্যে খানপাড়া গ্রাম বলে কোন গ্রাম মানচিত্রে থাকবে না। যদিও পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে দশানী নদী ভাঙন রোধে ৩ শ মিটার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। কিন্তু জিও ব্যাগ গুলো কোন কাজে আসছে না অভিযোগ করেছেন স্থানীয় এলাকার মানুষ।
নিম্ন মানের কাজ ও বন্যা আসার আগ মূহর্ত্বে জিও ব্যাগ গুলো ফেলার কারণে অল্প দিনের মধ্যেই তা পানির নিচে চলে গেছে। ফলে জিও ব্যাগ গুলো ফেলেও তেমন কাজে আসছে না।
এদিকে প্রতি বছর নদী ভাঙনের শিকার হলেও সরকারের পক্ষ থেকে ভাঙন রোধে স্থায়ী কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয় নি অভিযোগ করেছেন ভাঙনের কবলে পড়া পরিবার গুলো।
আইরমারী খানপাড়া গ্রামের আবদুর রহিম খান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, গত ৫ বছরে তার ২০ বিঘা জমি নদীতে চলে গেছে । এখন তিনি আর পারছেন না বলেও জানান।
স্থানীয় শাহীদা বেগম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, শুধু ভোটার কার্ড নিয়ে যায় কিন্তু কোন সহযোগিতা করে না কেউ।
খানপাড়া গ্রামের রেজাউল করিম, শান্তি বেগম, আফসার আলী,কালু মিয়া, জিয়াউল খান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, আইরমারী খান পাড়া হয়ে জব্বারগঞ্জ বাজার পর্যন্ত উচুঁ বাঁধ নির্মাণ করা না গেলে অচিরেই এই গ্রাম বিলীন হবে। তারা অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে চলতি দায়িত্বে থাকা বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মেহেদী হাসান টিটু বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, আইরমারী খানপাড়া গ্রাম সহ ব্রহ্মপুত্র নদ ও দশানীর তীরবর্তী আরো কয়েকটি গ্রামে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ২২০ টি বসত ভিটা ও বাড়ি ঘর নদীতে বিলীন ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই ক্ষতিগ্রস্তদের আমরা ক্ষতিগ্রস্থদের সহযোগিতা করা হবে।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, আইরমারী খান পাড়া গ্রামের নদী ভাঙনের বিষয়টি আমাদের নলেজে আছে। নদী ভাঙন রোধে যতদূর পর্যন্ত জিও ব্যাগ ফেলার দরকার ছিলো তা ফেলানো সম্ভব হয়নি। পরে এ বিষয়টি দেখব।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি জিএম ফাতিউল হাফিজ বাবু। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.