প্রশাসনকে দুষলেন আব্দুল ওদুদ: জেলা আ. লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আব্দুল ওদুদ’র বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর

বিশেষ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের দুইবারের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদের বাসভবনে হামলা হয়েছে।
সোমবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে জেলা শহরের পুরাতন জেলখানা মোড়স্থ বাসভবনে এই হামলার ঘটনা ঘটে। তবে এতে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এঘটনায় ভবনের কয়েকটি স্থানের কাঁচ ভেঙ্গে যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা আওয়ামীলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. মনিরুল ইসলাম জানান, রাত ১০টার দিকে মোটরসাইকেলযোগে তিনজন আরোহী এসে হঠাৎ ভবনের দিকে ইটপাটকেল মেরে পালিয়ে যায়। এতে দ্বোতলার কাঁচ ভেঙে যায়। বাসভবনে হামলার সময় সাবেক এমপি আব্দুল ওদুদ বাসাতেই ছিলেন। হামলার পর পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে তারা এসেছে। হামলার খবর পেয়ে সাবেক এমপির বাসভবনের নিচে ছুটে যান নেতাকর্মীরা।
ভবনের নাইট গার্ড ও দ্বিতীয় তলায় থাকা বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের শাখা ব্যপস্থাপক মো. সাইফুল্লাহ জানান, হঠাৎ করে এসে এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল মেরে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এতে কাঁচ ভেঙে যায়। এসময় ভেতরে ও বাইরে কাঁচের টুকরো ভেঙে পড়ে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম বলেন, কৃষকলীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করেই রাতে এই হামলা হয়েছে। সন্ত্রাসীদের কারনে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক যেখানে নিরাপদ নয়, সেখানে আমাদের মতো কর্মীরা কিভাবে আওয়ামীলীগ করব? সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে এঘটনার প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায়।
সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদ বলেন, এই ধরনের নোংরা রাজনীতি এর আগে ছিল না, কৃষকলীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করেই রাতে হামলা হয়েছে।
গতকাল রাত (সোমবার রাত) ১০টার পর কে বা কারা আমার বাড়িতে ককটেল হামলা করে। এখনো জানতে পারিনি, তবে চেষ্টা করছি তারা কারা। গতকালের কৃষকলীগের সম্মেলনকে ঘিরেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে আমি মনে করি। এই ককটেল হামলা পুর্বকল্পিত এবং সম্মেলনকে ঘিরেই ঘটছে। যা চাঁপাইনবাবগঞ্জে কোনদিন ছিলনা। ইতিপুর্বেও এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছিল। অল্প কিছুদিন থেকে দেখা যাচ্ছে-এধরনের নোংরা কাজ শুরু হয়েছে। সাধারন মানুষ এবং দলীয় কর্মীরা এমন ঘটনায় ক্ষুব্ধ হচ্ছে। অনেকেও আবার এসব ঘটনায় প্রশাসনকেও দোষারোপ করছে। তিনি বলেন, প্রকৃত ঘটনা
সাংবাদিকদের খুঁজে বের করা উচিৎ। কার নেতৃত্বে, কার সহযোগিতায় বা কোন নেতার সহযোগিতায় বা কোন কর্মকর্তার সহযোগিতায় এমন ন্যাক্কারজনক ঘটছে কিনা, সেটাও আমাদের খতিয়ে দেখা উচিৎ। বিশেষ করে প্রশাসনের উচিৎ বিষয়টি খতিয়ে দেখা। কারণ প্রশাসনকে ব্যবহার করে কেউ যদি এধরনের কর্মকান্ড চালাতে থাকে, তাহলে এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা বিঘিœত হয় এবং কখনোও মানুষ শান্তিতে থাকতে পারেনা।
আমি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এবং সাবেক দুইবারের সংসদ সদস্য হিসেবে রাতে আমার বাড়িতে যে এধরনের ঘটনা ঘটেছে, গোপনে হোক বা প্রকাশ্যে হোক এটি প্রশাসনের খতিয়ে দেখা উচিৎ। আমি আশা করবো প্রশাসন দোষীদের খুঁজে বের করবেন। প্রশাসন যদি আইনগত ব্যবস্থা না নেয়, সেক্ষেত্রে আমি সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সভানেত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করবো।
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে আব্দুল ওদুদ জানান, ঘটনার পর প্রশাসনকে জানালে তারা এসে দেখে গেছে। আসলে বর্তমানে মানুষ যে কোন কারনে প্রশাসনের প্রতি আস্থাশীল নয়, আমিও না। ঘটনার পর উনারা দেখে গেছেন, আমি পর্যবেক্ষন করছি প্রশাসন কি করছে।
তিনি জানান, সদর মডেল থানার ওসি তদন্ত মাহফুজ সাহেব এসেছিলেন। এসব ঘটনা দলের প্রতি বিরুপ প্রতিক্রিয়া পড়বে মন্তব্য করে আব্দুল ওদুদ বলেন, এ সব ন্যাক্কারজনক ঘটনায় সাধারন মানুষ আওয়ামীলীগের প্রতি ক্ষুব্ধ হচ্ছে। মানুষ সবচেয়ে বেশী ক্ষুব্ধ হচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশের ভুমিকা নিয়ে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে জেলার পুলিশের উপর সাধারণ মানুষের ভরসা নেই এবং আমারও পুলিশের কাজে ভরসা নেই। প্রশাসনের সহযোগিতায় ঘটনাগুলো ঘটেছে। কে বা কারা এই ধরনের নোংরা রাজনীতির পিছনে আছে, তা আপনারা (সাংবাদিকরা) তথ্য সংগ্রহ করে প্রকৃত ঘটনা বের করুন।
হামলার বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার-ইন-চার্জ এ কে এম আলমগীর জাহান বলেন, তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করা হয়েছে। এবিষয়ে থানায় কোন লিখিত অভিযোগ বা মামলা হয়নি। এব্যাপারে আইনি প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.