প্রথম পাল্টা আঘাত যুক্তরাষ্ট্রের, ১৮ ইরানপন্থি যোদ্ধা নিহত

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সিরিয়া ও ইরাকে ইরান সমর্থিক সশস্ত্র গোষ্ঠীর সামরিক স্থাপনায় সিরিজ হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) অন্তত ৮৫টি স্থাপনা লক্ষ্য করে চালানো হয় হামলা। এতে অন্তত ১৮ ইরানপন্থি যোদ্ধা নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
সিরিয়ার মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারী ব্রিটেন-ভিত্তক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের বরাতে শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশোধমূলক হামলায় ১৮ ইরানপন্থি যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া এই হামলায় দেশটিতে ইরানপন্থি দলগুলোর আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহৃত স্থাপনাসহ অন্তত ২৬টি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাও ধ্বংস করা হয়েছে। তবে ইরাকে হামলার হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। গত সপ্তাহে সিরিয়া সীমান্তবর্তী জর্ডানের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলার জবাবে যুক্তরাষ্ট্র এই হামলা চালাল।
ওই হামলায় ৩ মার্কিন সেনা নিহত এবং আরও অন্তত ৪০ জনেরও বেশি সেনা আহত হয়েছিলেন। এই হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এর আগে ইরান-সমর্থিত বাহিনীকে দায়ী করেছিল। পরে গত রোববারের ড্রোন হামলায় সৈন্যদের মৃত্যুর প্রতিক্রিয়ায় ওয়াশিংটন থেকে ব্যাপক বিমান হামলার নির্দেশ দেওয়া হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমাদের প্রতিক্রিয়া আজ থেকে শুরু হয়েছে। এটি (প্রতিক্রিয়া) আমাদের পছন্দের সময়ে এবং জায়গায় চলতে থাকবে। মধ্যপ্রাচ্য বা বিশ্বের অন্য কোথাও সংঘাত চায় না। তবে যারা আমাদের ক্ষতি করতে চায় তাদের সবাইকে এটি জানাতে হবে: আপনি যদি একজন আমেরিকানকেও ক্ষতি করেন তবে আমরা জবাব দেব।’
তবে, যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালানোর ঘোষণা দেয়া পরপরই এর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল তেহরান। এমনকি দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম রাইসি সতর্ক করেছিল যে, ইরান আগে হামলা না চালালেও আক্রমণ হলে পাল্টা জবাব দেবে।
এদিকে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, হামলায় ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের কুদস ফোর্স এবং সেইসাথে তাদের সংশ্লিষ্ট মিলিশিয়া গোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে ৮৫টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করেছে। এই হামলায় বহু যুদ্ধবিমান অংশ নিয়েছে, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে উড়ে আসা দূরপাল্লার বোমারু বিমানও রয়েছে।
সেন্টকম বলেছে, বিমান হামলায় ১২৫টিরও বেশি নির্ভুল অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। ইরানি বাহিনী ও তাদের সমর্থিত মিলিশিয়াদের যারা মার্কিন বাহিনীর ওপর হামলায় সহায়তা করেছিল তাদের কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার এবং গোয়েন্দা কেন্দ্রের পাশাপাশি রকেট, মিসাইল এবং ড্রোন স্টোরেজ অবকাঠামোতেও হামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টকম।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে দেইর এজর শহর থেকে ৬২ মাইল (১০০ কিলোমিটার) ইরাকি সীমান্তের কাছে আলবু কামালের কাছ পর্যন্ত বিস্তৃত পূর্ব সিরিয়ার বিশাল অংশে চলমান অভিযানে অস্ত্রের ডিপোসহ ইরানপন্থি গোষ্ঠীগুলোর আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহৃত অন্তত ২৬টি গুরুত্বপূর্ণ স্থান ধ্বংস করা হয়েছে। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় অন্তত ১৮ জন ইরানপন্থি যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.