পুঠিয়ার ১৫ ইটভাটার ধোঁয়ায় বিপাকে মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে ১৫ টি ইটভাটা। যার বেশীর ভাগ ইটভাটা গুলো অবৈধ। স্থানীয়রা বলছেন, ভাটা মালিকরা বিভিন্ন দপ্তরে মাসোহাততরা দিয়ে বছরের পর বছর তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছেন। আর এই ভাটা গুলোতে অতিনিন্মমানের কয়লা পোড়ানোর কারণে আশে-পাশের কৃষি জমিতে চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। কৃষকরা বলছেন, ভাটার ধোঁয়ায় ফসলহানী বিষয়টি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার হচ্ছে না। উল্টা ভাটা মালিকদের হয়রানীর শিকার হতে হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন এলাকায় ১৩ টি ও পৌরসভা সদরে একই স্থানে অবৈধ ভাবে দু’টি ইটভাটা গড়ে উঠেছে। যার বেশীর ভাগ ইটভাটার কোনো প্রকার বৈধ কাগজপত্র নেই। অপরদিকে ভাটা মালিকরা প্রতিবছর তাদের সমিতির মাধ্যমে উচ্চ আদালতে নামমাত্র একটি আবেদন দেখিয়ে ভাটার কার্যক্রম চালাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা মোট ১৫ হাজার ৫২ হেক্টোর ফসলী জমি রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৩ হাজার হেক্টোর জমিতে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন হয়। বাকি প্রায় দু’হাজার ৫২ হেক্টোর জমিতে বিভিন্ন ফলের বাগান গড়ে উঠেছে।
এলাকার চাষি সাইদুর ইসলাম বলেন, সরকারি নিয়মকে বৃদ্ধাগুলি দেখিয়ে পৌরসভার প্রানকেন্দ্র একই স্থানে দুটি ইটভাটা গড়ে উঠেছে। যা বছরের পর বছর ধরে চলছে। আর ভাটার ধোঁয়ায় সদর এলাকার পরিবেশ দূষিত হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, এই ভাটার কারণে একটি বিলের শতাধিক একর জমি বছরের বেশীর ভাগ সময় জলাবদ্ধতা থাকে। যার কারণে ওই এলাকার চাষিরা ফসল উৎপাদন করতে পারে না। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কৃষি অফিসসহ কয়েকটি দপ্তরে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ দিয়েও রহস্যজনক কারণে কোনো কাজ হচ্ছে না।
ধোপাপাড়া এলাকার অপর এক চাষি তাহের উদ্দীন বলেন, বিভিন্ন স্থানে ফসলী মাঠের মধ্যে অবৈধ ভাবে যত্রতত্র ইটভাটা গড়ে উঠছে। আর ইটভাটার কালো ধোঁয়ার কারণে প্রতিবছর আমাদের এলাকায় বিভিন্ন ফল ও ফসলহানী হচ্ছে।
উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা গোলাম সাকলাইন বলেন, ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ার প্রভাব এখন কৃষি জমির উপর পড়েছে। এতে আশে পাশের কয়েক কিলোমিটার জুড়ে সকল ফসলী জমিতে বিরুপ প্রভাব দেখা দিয়েছে। আর কৃষকরা প্রতিনিয়ত ফসলহানীর মুখে পড়ছেন।
এ বিষয়ে পুঠিয়া উপজেলার ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নাসির মন্ডলের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিটিসি নিউজকে বলেন, সারাদেশের সবগুলো ইটভাটায় অবৈধ। আমরা সরকারকে প্রতিনিয়তই ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়ে আসি। আর সেজন্যই আমোদের সকল ইটভাটা গুলো অবৈধ নয় । যদি অবৈধ হতো, তাহলে সরকার আমাদের থেকে ভ্যাট ট্যাক্স নিতো না । তবে হ্যাঁ এটা সত্য যে, পৌরসভা ও স্কুল-কলেজের আশেপাশে যে সকল ইটভাটা রয়েছে সেগুলো সব অবৈধ।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাস্ পিএএ বিটিসি নিউজকে বলেন, যতদুর জানি যথাযথ নিয়ম অনুযায়ী এই উপজেলায় কোনো ইটভাটাই গড়ে উঠেনি। তবে অচিরেই এই ভাটা গুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো.মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.