পাকিস্তানে বোমা হামলা : আইএসআইএল-এর দায় স্বীকার

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে একটি কট্টরপন্থী ইসলামিক দলের রাজনৈতিক সমাবেশে রবিবার বোমা বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪ জনে। এ ছাড়া এই ঘটনায় কয়েক ডজন আহত হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান। অবশেষে এই ঘটনার দায় স্বীকার করেছে আইএসআইএল (আইএসআইএস) সশস্ত্র গোষ্ঠী।
আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী খার শহরে ৪০০ জনেরও বেশি সদস্য এবং সমর্থক একটি তাঁবুর নিচে জড়ো হওয়ার সময় বিস্ফোরণটি ঘটানো হয় জমিয়ত উলামা-ই-ইসলাম-এফ দলকে লক্ষ্য করে।
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবারপাখতুনখোয়া প্রদেশের বাজাউরে জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলাম-ফজলের (জেইউআই-এফ) সমাবেশে ভয়াবহ আত্মঘাতী বোমা হামলার পেছনে জড়িতদের সন্ধান পেতে কাজ শুরু করে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। প্রথম দিকে সন্দেহের তীর ছিল তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) দিকে।
কারণ সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানে বেশ কয়েকবার সহিংস হামলা চালিয়েছে তারা। তবে দেশটির নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ধারণা করেছিল, এই হামলার সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) শাখা আইএস-খোরাসানের (আইএস-কে) সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
সেই ধারণাই এখন সত্য প্রমাণিত হলো। 
সশস্ত্র গোষ্ঠীর সংবাদ সংস্থা আমাক এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ইসলামিক স্টেট (আইএসআইএল)-এর একজন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী… ভিড়ের মাঝখানে দাঁড়িয়ে বিস্ফোরক জ্যাকেটের বিস্ফোরণ ঘটায়।’
বাজাউরের তেহসিল খার এলাকার হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নাসিব গুল জানিয়েছেন, হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৬ হয়েছে। এখানে ৯০ জনকে আহত অবস্থায় আনা হয়েছিল।
৩৬ জনের মরদেহ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে পাঁচটি শিশুও রয়েছে।
এদিকে পাকিস্তানের একটি সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, নিহতের সংখ্যা ৫৪ জনে পৌঁছেছে। মাওলানা ফজলুর রহমানের নেতৃত্বাধীন জেইউআই-এফ দলটি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বে পরিচালিত জোট সরকারের অন্যতম শরিক। মাওলানা ফজলুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) জোট সরকারের অংশ হয়ে কাজ করছে।
পাকিস্তানি রাজনীতিতে চাউর রয়েছে, কট্টর ইসলামপন্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলে জেইউআই-এফ।
সমাবেশে নির্দিষ্ট কাউকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছিল। প্রাথমিক তদন্তে বিষয়গুলো স্পষ্ট হয়েছে। হামলায় ব্যবহৃত বোমায় ১০ থেকে ১২ কেজি বিস্ফোরক ছিল। এর আগের প্রতিবেদনগুলোতে বাজাউর জেলায় আইএস-কের উপস্থিতির ইঙ্গিত মিলেছিল।
গত জুনে দেশটির কাউন্টার টেররিজম বিভাগ (সিটিডি) জানায়, তারা বাজাউরে আইএস-কের তিন সদস্যকে নিবৃত্ত করেছে। এ ছাড়া আফগানিস্তানের বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাসী আক্রমণের জন্য আইএস-কে ভূমিকা রেখেছিল। তাদের সঙ্গে আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন শাসক তালেবানের বিরোধ রয়েছে।
পাকিস্তানের প্রাদেশিক পুলিশ প্রধান আখতার হায়াত খান  নিশ্চিত করেছেন, আত্মঘাতী বোমা হামলার কারণে বিস্ফোরণটি ঘটেছে। বোমা হামলাকারীকে শনাক্ত করার জন্য ডিএনএ পরীক্ষা করা হচ্ছে। স্থানীয় পুলিশ প্রধান নাজির খান বলেছেন, অন্তত তিনজন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গোয়েন্দা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে। (সূত্র: আল জাজিরা)। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.