পলাশবাড়ীতে পানির দরে চামড়া বিক্রি, ক্রেতা-বিক্রেতা হতাশ

গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ  গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলায় জমে উঠেছে চামড়া বাজার।  চামড়া ক্রয়ে ব্যস্ত ছোট বড় চামড়া ব্যবসায়িরা। চামড়ার দাম কম হওয়ায় হতাশায় ভোগেন মৌসুমি ও ফরিয়া চামড়া ব্যবসায়িরা।
ঈদ উল আযহা এলেই মৌসুমী ব্যবসায়ীদের উত্থান ঘটে। এটি নতুন কিছু নয়। এবার আবহাওয়া কিছুটা উষ্ণ হওয়ার কারণে সকালের দিকেই পশু কোরবানী দিয়েছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। তাই ঈদের দিন সকাল থেকে পশুর চামড়া সংগ্রহে ব্যস্ত সময় কাটছে চামড়া ব্যবসায়ীদের। এ ব্যস্ততা থাকবে ঈদের দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত। কারণ অনেকেই ঈদের দ্বিতীয় দিন পশু কোরবানী করে থাকেন।
ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী কোরবানীর পশুর চামড়ার টাকা দুস্থ ও গরীবদের। আর সে কারণে অনেক ধর্মপ্রাণ মুসলমান কোরবানীর পশুর চামড়া দান করেছেন এতিমখানা কিংবা মাদ্রাসায়।
সরেজমিন দেখা গেছে, এতিমখানা এবং মাদ্রাসার কর্মীরা ব্যস্ত দানের চামড়া সংগ্রহে। সারাদিন সংগ্রহের পর নিলামে বিক্রি হবে এসব চামড়া। এছাড়াও পাড়া মহল্লায় সংখ্যায় কম হলেও মৌসুমি ব্যবসায়ীদেরও ব্যস্ত সময় কাটাতে দেখা গেছে।
মৌসুমি ব্যবসায়ীরা জানালেন আকার ভেদে ষাড়ের চামড়া ৪শত থেকে ১৫ শত  টাকায় ও গাভীর চামড়া ১৫০ হতে ৩ শত টাকা দরে এসব কোরবানীর পশুর চামড়া সংগ্রহ করছেন তারা। বাড়ি বাড়ি ঘুরে সংগ্রহ করা এসব চামড়া সামান্য লাভেই বিক্রি করছেন ফড়িয়াদের কাছে। প্রতিবারের ন্যায় গরম আবহাওয়ায় চামড়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকায় চামড়া জমিয়ে না রেখে দ্রুত বিক্রির প্রবণতা দেখা গেছে উপজেলা জুড়ে ।
উপজেলার অন্যবারের তুলনায় এবার কোরবানীর পশুর চামড়া কেনার মৌসুমি ব্যবসায়ীদের দৌড়-ঝাঁপ কিছুটা কম লক্ষ্য করা গেছে। অন্যান্য বছর নামাজের আগে থেকেই বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় অসংখ্য মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীদের ভিড় দেখা গেলেও এবার তাদের সংখ্যা অনেকটাই কমে এসেছে। অন্যান্য বছর মাদরাসার লোকজন দান করা চামড়া সংগ্রহের পাশাপাশি চামড়া কিনলেও এবার তারাও আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
ঈদের দিন সোমবার সকালে উপজেলা বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা ঘুরে দেখা গেছে, কোরবানী করা বেশির ভাগ পশুর চামড়া বাসাবাড়িতে পড়ে আছে। দুপুর ১২ টা পর্যন্ত বহু সংখ্যক গরু ছাগল কাটাকাটির কাজ শেষ হলেও তখন পর্যন্ত চামড়াগুলো কেনার জন্য কেউ আসেননি। পরে অনেকে এসব চামড়া গুলো শহরে এনে বিক্রি করেছেন।
উপজেলার সদরের বাসিন্দারা বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘এ বছর চামড়া কেনার জন্য হাতে গোনা লোক । আর চামড়া দামও পানির দরে এ ব্যাপারটা খুব আশ্চর্যের।
স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ী ও আড়তদারগণ বিটিসি নিউজকে বলেন, ট্যানারি মালিকগণের চামড়া ক্রয়ে আগ্রহ কম। বড় বড় চামড়া ব্যবসায়ীরা এবার আগে থেকে সাবধান করে দিয়েছে যে গরমের কারণে চামড়া নষ্ট হয়ে যাবে। তাই বুঝে শুনে না কিনলে ধরা খেতে হবে। এছাড়া দুপুর ১২টার পর চামড়া নিয়ে যেতে না পারলে দামও পাওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, সরকার প্রতি ফুট চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিলেও ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে চামড়ায় ত্রুটি দেখিয়ে দাম কম দেয়।
এ জন্য এত ঝুঁকি নিয়ে এবার চামড়া কেনার মৌসুমি ব্যবসায়ীদের সংখ্য কিছুটা কম। আর কোরবানী পশুর চামড়ার বাজার পানির দরে হচ্ছে বেচাকেনা।
পলাশবাড়ী সদরে কালীবাড়ী বাজার এবং বাজারে  পূর্বরোড,উত্তরে সাদুল্যাপুর রোড,ঢাকা রংপুর মহাসড়কের জনতা ব্যাংক মোড়,সাথী হলের সামনে ও রংপুর বাসষ্ট্যান্ডে চামড়ার আড়ত গুলো ছাড়াও সড়কে পাশে চামড়া ক্রয় বিক্রিয়ে ব্যস্ত বড় ছোট চামড়া ব্যবসায়ীরা।
এছাড়াও ক্রয়কৃত চামড়ায় লবন দিয়ে সংরক্ষণে দল বেধে কাজ করছেন রবিদাস সম্প্রদায়ের শ্রমিকগণ। এসব চামড়া বাজারে নগদ টাকার কারবার হওয়ায় যে কোন ধরণের আপত্তিকর ঘটনা রোধে কাজ করছে পলাশবাড়ী থানা পুলিশ।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর গাইবান্ধা প্রতিনিধি মোঃ শাহরিয়ার কবির আকন্দ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.