পলাশবাড়ীতে জাতীয় মহাসড়ক চার লেন উন্নতিকল্পে জমি অধিগ্রহণ ও উচ্ছেদের ক্ষতিপূরণের আশায় নতুন নতুন স্থাপনা নির্মানের হিড়িক

 গাইবান্ধা প্রতিনিধি:  সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প। এলেঙ্গা – হাটিকামরুল – রংপুর মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের আওতায় ১৯০,৪ কিমি রাস্তা প্রশস্তকরনে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতি পুরুণ পাবেন।
মালিকানা ছাড়া প্রকল্প এলাকার সরকারী / সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের জমিতে বসবাসকারী বা ব্যবসারত প্রকৃত ব্যক্তিগণ ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো, ব্যবসা, কাজের মজুরি, অবকাঠামো ভাড়া দেওয়া, ইত্যাদি বাবদ ক্ষতিপুরুণ পাবেন। জমির মালিকানাবিহীন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিগণ অনুমোদিত পুর্ণবাসন পরিকল্পনা অনুযায়ী ক্ষতিপুরণ ও অনুদান পাবেন।
ভূমি অধিগ্রহণ ও পুর্নবাসন পরিকল্পনা নির্ঝাঞ্জাট বাস্তবায়নের জন্য সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর ২০১৭ সালের মে মাসে “সমাহার” নামক একটি এনজিওকে নিয়োগ প্রদান করেছে।
সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর আশা করে যে, স্থানীয় জনগন, সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ, সংগঠনের নেতা/নেত্রীবৃন্দ, স্থানীয় প্রশাসন, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি ও স্থানীয় সংগঠন সমূহ পুনবাসন কাজে নিয়োজিত এনজিও “সমাহার” কে পুর্নবাসন পরিকল্পনা সফলভাবে বাস্তবায়নে সার্বিক সহযোগিতার জন্য লিফলেট বিতরণ করলেও কিছু অসাধু জমির মালিক তিন নম্বর ইট আর কাদার মিশ্রণ দিয়ে, কেহ সিমেন্টের পরিমান কম দিয়ে, উপরে নরমাল চালের টিন লাগিয়ে নিজের আত্নীয় স্বজনদের ব্যবসায়ী বানিয়ে তালিকায় নাম অন্তভুক্ত করেছেন।
পলাশবাড়ীতে এখনও দোকানগুলোতে কোন মালামাল উঠানো হয়নি। কিছুদিন আগেও দোকানগুলো ফাকা মাঠ ছিল। ছিল পরিত্যক্ত। সড়ক ও  জনপদ কিছুদিন আগে এসব দোকান পাট ভেঙ্গে দিয়ে ফাঁকা করে রেখে গিয়েছিল।
এখন এসব জায়গায়, গড়ে উঠেছে চায়ের দোকান, ফার্নিচারের দোকান, নস্ট ফ্রিজ রেখে তা মেরামতের দোকান, আর নতুন নতুন সাইন বোর্ডের প্রদর্শনী চলছে।
দক্ষিণবন্দর নার্সারীর সামনে, দক্ষিণবন্দর হরিণমাড়ী রোডে, পানি উন্নয়ণ বোর্ডের সামনে, ইক্ষু ক্রয় কেন্দ্রের সামনে, জুনদহ বাজারের আশেপাশে, রাইগ্রামের মোড় মসজিদ সংলগ্ন স্থানে, পলাশবাড়ী – ধাপের হাট মহাসড়কের দুই পার্শ্বে এসব স্থপনা গড়ে উঠেছে।
 অপরদিকে চৌমাথায় সৈয়দ প্লাজার ব্যাংকের  ঋণ থাকায় সেটি গত রোজায় সিলগালা করে মালিকের নিকট থেকে স্থাপনাসহ বাজেয়াপ্ত করে নিয়েছেন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। শোনাযাচ্ছে এই স্থাপনাটিও নাকি তালিকা ভুক্ত হয়েছে। ঢাকা কাউন্টারের সামনে পশ্চিম পার্শ্বেও নতুন স্থাপনা উঠানো হয়েছে। দক্ষিণবন্দর খলিলের বিল্ডিংয়ের নিচে তার সমন্ধি নাহার ট্রেডার্স  নামে একটি ভুয়া ঘর দেখিয়ে তালিকায়  অন্তভুক্ত করেছেন।
অসাধু ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য মহাসড়কের দু’ধারে আবাদি ও পতিত জমিতে নিন্মমানের সামগ্রী দিয়েই নতুন করে দোকান ঘর, মার্কেট নির্মাণে উঠে-পড়ে লেগেছেন। পুরাতন ও নবনির্মিত স্থাপনা গুলোর জন্য নতুন করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়ে সাইনবোর্ড লাগানোর হিড়িক পড়েছে।
ব্যবসায়ীদের  ক্ষতিপূরণ এবং দোকান ঘর ভাঙ্গার ক্ষতিপূরণ নেওয়ার জন্য এ নির্মাণ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন মহাসড়কের দু’ধারের পতিত জমির মালিকগণ। এমনকি বসতবাড়ি ভেঙ্গে তৈরি করা হচ্ছে মার্কেট।
 ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের দু’পার্শ্বে প্রতিদিন নতুন করে জেগে উঠা স্থাপনা চোখে পড়ছে। এমনকি কয়েকদিন আগেও যে জায়গা গুলো ফাঁকা পড়ে ছিল সেই জায়গাগুলোতেও তৈরি করা হয়েছে দোকান ঘর। অনেকেই কাগজে-কলমে দোকান ঘর ভাড়া নিচ্ছেন স্বার্থ হাসিলের আসায়।
 ফলে সচেতন মহলের মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া, চলছে চায়ের দোকানে আলোচনা কে কতো টাকা পাবে? দোকান ঘর ভাড়া নেওয়া ও দেওয়ার জন্য চুক্তিনামা তৈরি এবং চুক্তিনামা না থাকলে চুক্তির আওতায় আশার জন্য ভাড়াটিয়া ও ঘর মালিকের মাঝে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সচেতন মহল বলছেন, ঘর ভাঙ্গার টাকা ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতিপূরণ নেওয়ার জন্য এ পরিকল্পনা গ্রহণ করছেন। ইতিপূর্বে যে জায়গা গুলো ছিল অধিকাংশই ফাঁকা ও আবাদি জমি তা দ্রুত গতিতে ফসলহানী করে দোকান ঘর নির্মাণ করছেন। উপজেলা সদরে মহাসড়কের দু’ধারে ব্যবসা ছেড়ে দেওয়া ব্যবসায়ীগণ নতুন করে দোকান ও প্রতিষ্ঠান খুলে ঘুরে বসেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রোডস এন্ড হাইওয়ের এক কর্মকর্তা বিটিসি নিউজকে জানান, যারা নতুন করে কোন স্থাপনা নির্মাণ এবং নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তৈরি করছেন তাহারা ক্ষতিপূরণ হিসাবে কোন অর্থ পাবেনা। কারণ কাজ শুরুর পূর্বেই মহাসড়কের দু’ধারের স্থাপনার ছবি ও ভিডিও সংরক্ষিত করা আছে, প্রকৃত ব্যক্তিরা সেই অনুপাতেই ক্ষতিপূরণ পাবে।
নতুন করে অবকাঠামো নির্মাণ চিত্রে তিনি আরও বলেন, আপনার জায়গায় আপনি ঘর তুলছেন আমরা বাঁধা দেবো কেনো? যেহেতু সীমানা নির্ধারণ ও কোন প্রকার নোটিশ প্রদান করা হয় নাই। এ বিষয়ে ৬টি দপ্তর কাজ করছেন এবং বিচার বিশ্লেষণ করে জমি অধিগ্রহণ করা হবে।
যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য নতুন করে দোকান ঘর নির্মাণ ও ব্যবসায়ী হিসেবে ক্ষতিপূরণ নেওয়ার পায়তারা করছেন এদের বিষয়ে ভালোভাবে খোঁজখবর নিয়ে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দৃষ্টিআকর্ষণ ও জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সচেতন মহল।
এ বিষয়ে ২১ সেপ্টেম্বর গত শনিবার জেলা প্রশাসক কর্তৃক এক সতর্কতামুলক গণমাইকিং করে নতুন স্থাপনাগুলো নিজ খরচে সরে নিতে বলা হয়েছে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর গাইবান্ধা প্রতিনিধি মোঃ শাহরিয়ার কবির আকন্দ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.