পবায় থামছেনা কৃষি জমিতে অবৈধ পুকুর খনন, রহস্যজনক কারনে প্রশাসন নিরব

পবা ( রাজশাহী) প্রতিনিধি: পবায় সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কৃষি জমিতে অবাধে চলছে অবৈধ পুকুর খনন। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস (কোভিড – ১৯) সংক্রমণ মহামারী আকার ধারণ করায় বিশ্ববাসী আজ আতংকিত।

জীবন-মৃত্যুর মুখোমুখি দাড়িয়ে আছে বিশ্ববাসী। প্রতিনিয়ত দীর্ঘ হচ্ছে লাশের মিছিল, আক্রান্ত হচ্ছে অসংখ্য মানুষ। সারা পৃথিবীজুড়ে চলছে ‘লকডাউন’।

বাংলাদেশের করোনাভাইরাস সংক্রমণের ফলে প্রতিদিন বেড়ে চলেছে মৃতের সংখ্যা ও আক্রান্তের সংখ্যা, যার কারনে বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি রাজশাহী জেলাকেও সরকার পুরোপুরি ‘লকডাউন’ ঘোষণা করেছে।

আর এই ‘লকডাউন’ -এর সুযোগ নিয়ে পবা উপজেলার ভবানীপুরে তিন ফসলি জমিতে অবাধে চলছে অবৈধ পুকুর খনন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায় যে, ভবানীপরের বাসিন্দা মোঃ নাসির হোসেন ভবানীপুর বিলে প্রায় ৪০ বিঘা কৃষি জমি লিজ নিয়ে পুকুর খনন করছেন। ২ টি এস্কেভেটর (পুকুর খনন যন্ত্র) বসিয়ে পুকুর খনন চালিয়ে যাচ্ছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকাবাসী ‘বিটিসি নিউজ’ – এর প্রতিবেদককে জানান, রাজনৈতিক নেতাদের সহযোগীতায় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে একটি বিশেষ মহল পবা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষি জমিতে অবৈধ পুকুর খনন করে চলেছে।

পুকুর খননকারী ‘সিন্ডিকেট চক্র’ প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক ক্ষমতার বলে বলীয়ান হওয়ার কারনে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করতে পারছেন না এবং এদের ক্যাডার বাহিনীর ভয়ে কেউ মুখ খুলছেন না।

সরেজমিনে দেখা যায় পবা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জমির শ্রেণী তথা প্রকৃতি পরিবর্তনের দৃশ্য। কৃষি জমি গুলোর প্রকৃতি পরিবর্তন করে পুকুর খনন করা হয়েছে এবং এখনও অবৈধ পুকুর খনন অব্যাহত রয়েছে।

কৃষি জমি গুলোর প্রকৃতি পরিবর্তন করে এখন জলাশয় করা হচ্ছে। জলাশয়ের চারপাশে রয়েছে উঁচু পাড়। এতে বিলের পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা থাকছেনা এর ফলে বিলের অন্যান্য জমিগুলোও অনাবাদী হয়ে যাচ্ছে।

অথচ মন্ত্রনালয়ের নির্দেশ রয়েছে কৃষি জমিতে পুকুর খনন করা যাবে না, এবং জমির প্রকৃতি পরিবর্তন করা যাবে না। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে মন্ত্রনালয়ের এই নির্দেশনার কোন বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

উপজেলায় কৃষি জমিতে নির্বিচারে পুকুর খননের ফলে শত শত একর কৃষি জমি কমে গেছে। এতে করে শুধু কৃষি জমিই নষ্ট হচ্ছে না, কমে যাচ্ছে খাদ্যশস্য উৎপাদন।

এভাবে কৃষি জমিতে পুকুর খনন অব্যাহত থাকলে এ উপজেলার দুই-তৃতীয়াংশ কৃষি জমি কমে যাবে এবং খাদ্য সংকট সৃষ্টি হবে। এ সকল পুকুরের উর্বর মাটি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটায় সেই সাথে উপজেলার কাঁচা-পাকা রাস্তা এবং মহাসড়ক ব্যবহার করছে পুকুরের মাটি বহনকারী ট্রাক্টর।

পুকুরের মাটি বহনকারী ট্রাক্টর চলাচলের কারনে কাঁচা-পাকা রাস্তা এবং মহাসড়কের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে, ট্রাক্টরের চাকার আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছে রাস্তা – ঘাট, প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা, নষ্ট হচ্ছে এলাকার পরিবেশ।

দ্রুত এসব অবৈধ পুকুর খনন বন্ধ করা না হলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে, কৃষি জমি অনেকাংশে কমে যাবে এবং পবা উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্তার চরম অবনতি ঘটবে।

এদিকে কৃষি জমিতে অবাধে পুকুর খনন অব্যাহত থাকায় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিরব ভূমিকা পালনে বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী।

কৃষি জমিতে অবৈধ পুকুর খনন ও পুকুরের মাটি বহনকারী ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ করার জন্য এলাকাবাসী জেলা প্রশাসক মহোদয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর পবা (রাজশাহী) প্রতিনিধি মেরাজ মোল্লা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.