পত্নীতলায় মানববন্ধনে ঘোলাদিঘী গ্রামকে মাদকমুক্ত করার শপথ

 

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার দিবর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গ্রাম ঘোলাদিঘী। সীমান্তবর্তী হওয়ায় গ্রামটি মাদকের আখড়া হিসেবে পরিচিত পেয়েছে। ফলে মাদকের ভয়াবহতা অনেক বেড়ে গেছে। এ কারণে স্থানীয় উড়তি বয়সি যুবকরা বিপথে চলে যাচ্ছে। থানা পুলিশ যথাযথ উদ্যোগ না নেয়ায় দেদারছে মাদক কেনাবেচা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

মাদকের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পেতে এবং ঘোলাদিঘী গ্রামকে মাদকমুক্ত করার দাবীতে রাস্তার দুই ধারে দাঁড়িয়ে আজ রোববার দুপুরে স্থানীয় সচেতন ‘যুব সমাজ সংঘের’ ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়েছে। মানবন্ধনে গ্রামের স্কুল-কলেজ পড়–য়া কিশোর-তরুণ সহ প্রায় দুই শতাধিক গ্রামবাসী অংশগ্রহণ করে। মানববন্ধনে নিজে এবং নিজের পরিবারকে মাদক থেকে দূরে রাখার শপথ নেন সবাই। এছাড়া মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে সোচ্ছার হওয়ার প্রতিশ্রুতি নেওয়া হয়।

ঘোলাদিঘী যুবসমাজ সংঘের আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, পত্নীতলা থানার অফিসার ইনচার্জ পরিমল চন্দ্র, পুলিশ পরিদর্শক জহুরুল ইসলাম, উপজেলার দিবর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ সরকার, ইউপি সদস্য নাদিরা বেগম, যুব সমাজের সোহেল মনির প্রমুখ।

যুবসমাজ সংঘের আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন বলেন, গ্রামটি সীমান্তবর্তী গ্রাম হওয়ায় ভারত পাচার হয়ে আসা মাদক সহজেই ঢুকে পড়ায় মাদকের ভয়াবহতা অনেক বেড়ে গেছে। গ্রামে মান-সম্মান নিয়ে থাকাটাই কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রশাসন মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়েছে কয়েক বার। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। এ অবস্থায় গ্রামবাসীকে মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন করতে এবং মাদক ব্যবসায়ীদের প্রতিরোধ করতে আমাদের এই উদ্যোগ। যে কোনো মূল্যে আমরা এই গ্রামকে মাদকমুক্ত করতে চাই। এটা আমাদের যুদ্ধ।

ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ বলেন, কয়েক মাস আগে এই গ্রামের ৩০-৩৫ জন মাদক ব্যবসায়ী পুলিশের কাছে আত্মসমর্পন করে মাদক ব্যবসা করার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু বাস্তবে সেটা ছিল লোক দেখানো প্রতিশ্রুতি। কিছু দিন না যেতেই তারা আবার মাদক ব্যবসা শুরু করেছে। থানা পুলিশ যথাযথ উদ্যোগ না নেওয়ায় দেদারছে মাদক কেনাবেচা হচ্ছে এই গ্রামে। পুলিশ র‌্যাব মাঝে মাঝে অভিযান চালিয়ে মাদক সহ দুই-একজন গ্রেপ্তার করলেও আইনের ফাঁক গলিয়ে তারা বের হয়ে এসে আবার ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে। গ্রামটিকে মাদকমুক্ত করতে পুলিশ প্রশাসনকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

পতœীতলা থানার অফিসার ইনচার্জ পরিমল চন্দ্র বলেন, এই গ্রামে গুটিকয়েক মানুষ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তাদের জন্য ঘোলাদিঘী গ্রাম সহ আশপাশের গ্রামের যুব সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তবে আশার কথা, সচেতন যুব সমাজ এগিয়ে এসেছে। সমাজের সচেতন মানুষেরা এগিয়ে এলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ আরও সহজ হয়। সেই সাথে মাদকমুক্ত গ্রাম গড়তে মাদক ব্যবসায়ীদের ব্যাপারে পুলিশে তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করার জন্য যুব সমাজের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.