পঞ্চগড়ে সেতু সংস্কারের নামে অর্থ লুটপাটের অভিযোগ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি: পঞ্চগড়ে সেতু সংস্কারের নামে অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে নন্দিতা কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও এলজিইডি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। গাইট পোস্ট,ঝাড়ে মুছে রং করেই তুলে নেয়া হয়েছে সরকারের লাখ লাখ টাকা। কর্তৃপক্ষ বলছে কাজ বুঝে নিয়ে বিল পরিশোধ করা হচ্ছে।
জানা যায়,প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রীজেস এর আওতায় বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ২০২১-২২ অর্থ বছরে পঞ্চগড় সদর উপজেলায় দুটি প্যাকেজের একটিতে ৫ টি সেতু। কাজীর হাট, হাজীরহাট, জিন্নাত পাড়া, বজরা পাড়া, বিশমন বরাদ্দ ৫৮ লাখ ৮৭ হাজার ৫৩০, অন্য একটি প্যাকেজে দুটি সেতু হাড়িভাসা সড়কে বরাদ্দ ১২ লাখ ৯০ হাজার ৬২৫ টাকা। সেতু সংস্কারের কাজ হাতে নিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বিভাগ।
এরিমধ্যে কাজ শেষ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নন্দিতা কনস্ট্রাকশন জমা দিয়েছেন চুড়ান্ত বিল।
স্থানীয়দের অভিযোগ,নামে মাত্র সেতু সংস্কার শুধু ঝাড়ে মুছে রং করেই তুলে নেয়া হয়েছে সরকারের লাখ লাখ টাকা।
পানি মাছ পুকুরির মনির হোসেন, সাইদুর রহমান, কাজীরহাট এলাকার হাবিব জিন্নাত পাড়ার মজিবর রহমান ফুটকি বাড়ির আনোয়ারসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, কালভার্ট সংলগ্ন সড়কের দুই ধারে ছয়ফুটের কিছু খুঁটি বসিয়ে, খসেপরা পলেস্তারার জায়গায় আবার পলেস্তারা করে রং করা হয়েছে।
এছাড়া আর কোন কাজ করতে দেখেননি। এ সময় সেতুতে ৬-৭ দিন, বক্স কালভার্টে ৩-৪ দিন কাজ করতে দেখেন তারা।যদিও কাজের প্রাক্কলনে ইঞ্জিনিয়ারের জন্য পিপি, গ্লোবস,হ্যান্ড স্যানিটাইজার সররবরাহ, চশমা,মাস্ক, সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা সরবরাহ ও স্থাপন, কোভিট সচেতনতার জন্য সাইনবোর্ড, লিফলেট, থার্মাল স্কীনার, পানি সরবরাহের জন্য ওয়াটার ট্যাংক,শ্রমিকদের জন্য নারী পুরুষ ভেদে দুটি টয়লেট,ওয়াটার পাম্প স্থাপনসহ নামে বেনামে কাজ দেখানো হয়েছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,হাড়িভাসা সড়কে ৮.১০ মিটার দীর্ঘ বক্স কালভার্ট সংস্কারের জন্য বরাদ্দ ৫ লাখ ১৪ হাজার। সেখানে শুধু ছয় ফুট উঁচু খুঁটি ৪০টি সড়কের দুই পাশে বসিয়ে দিয়ে সেতুসহ রং করে দিয়েছেন। একই ভাবে ৫ লাখ ৯৪ হাজার টাকা ব্যয়ে ১০ মিটার দীর্ঘ সেতুতে ৬০ টি খুঁটি দিয়ে রং করা হয়েছে।
বিশমনিতে ১১.৩৫ মিটার বক্স কালভার্ট বরাদ্দ ১৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা। সেখানে খুঁটি বসিয়ে,প্লাসাইডিং নির্মাণ করে রং করা হয়েছে। এভাবেই বজরা পাড়া এলাকায় ৯.২৫ মিটার দীর্ঘ কালভার্ট সংস্কারে বরাদ্দ ৯লাখ ৫৭ হাজার, কাজীর হাট সেতুতে ৭ লাখ ৫৭ হাজার, হাজীরঘাটে ১০ লাখ ৮৬ হাজার,জিন্নাতপাড়ায় ৬ লাখ ২০ হাজার টাকা সংস্কারের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় বোদা উপজেলায় পাঁচটি বক্স কালভার্টের দৈর্ঘ্য ৪৬ মিটার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৭ লাখ ৪২ হাজার টাকা।
সম্প্রতি কাজ সমাপ্ত করেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শেখ ট্রেডার্স। অভিযোগ উঠেছে এলজিইডি বিভাগের কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারের সাথে চুক্তি করেই সেতু সংস্কারের নামে লুটপাট করছেন তারা।
নন্দিতা কনস্ট্রাকশনের প্রোপাইটর পরিমল দে (পমিল) বিটিসি নিউজকে জানান,কাজের প্রাক্কলনে যা দেয়া আছে তাই কাজ করা হয়েছে।শুধু রং আর খুঁটির জন্যই এতবেশি টাকা বরাদ্দ জানতে চাইলে বলেন, সেটা জানিনা আমি সাইটে যাইনি, আর বরাদ্দ দুই, আড়াই লাখ টাকা করে। মিস্ত্রি পাঠিয়েছি কাজ করে দিয়েছেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর পঞ্চগড় জেলা কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম আকন্দ বিটিসি নিউজকে জানান, কাজ বুঝে নিয়ে বিল পরিশোধ করা হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর পঞ্চগড় প্রতিনিধি শেখ সম্রাট হোসাইন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.