নাটোর প্রতিনিধি: আগে যেখানে দেখা যেত দিগন্ত জোড়া সবুজ ফসলের মাঠ। এখন সেখানে দেখা মেলে শুধু পুকুর আর পুকুর। উর্বর তিন ফসলী কৃষি জমি কেটে তৈরি করা হয়েছে মাছ চাষের পুকুর। এতে নাটোরের গুরুদাসপুরে উদ্বেগজনক হারে কমছে ফসলি জমি। যত্রতত্র পুকুর খননের ফলে ফসলের মাঠে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। ফসলী জমিতে ধ্বংসযজ্ঞ চললেও প্রশাসন বাস্তবভিক্তিক কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।
২১ জুন প্রকাশিত জাতীয় ভুমি ব্যবহার নীতিমালা ২০০১ এর গেজেটে (১৭.১) বলা হয়েছে কৃষি জমি যতটুকু সম্ভব কৃষি কাজে ব্যবহার করতে হবে এবং যথাযথ কতৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কৃষিজমির প্রকৃতগত কোন পরিবর্তন করা যাবে না। বিদ্যমান জলাশয় উন্মুক্ত রাখতে হবে এবং তা ভরাট করা যাবে না। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এ আইন লঙ্ঘন করলে সংশি¬ষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী বা সহায়তাকারীকে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদন্ডে বা সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়দন্ডে দন্ডিত হবে।
আইন থাকলেও তার তোয়াক্কা না করে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলাজুড়ে বাঁধাহীনভাবে পুকুর খনন উৎসব চলছে। উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের জ্ঞানদা নগর সুইসগেট এলাকার হাড়িভাঙ্গা মাঠে পুকুর খনন করছেন সিন্ডিকেট নেতা রবিউল করিম রবি। একই এলাকায় সরোয়ার হোসেন ও আব্দুল মান্নান ও ইউনুছ আলী নামে দুই কৃষক আরও একটি পুকুর খনন চালু রেখেছেন।
পুকুর খনন সিন্ডিকেট রবিউল করিমসহ সবার বক্তব্য বিটিসি নিউজকে জানান, প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই তারা পুকুর খনন করছেন। তবে তারা কেউই কোন লিখিত অনুমতিপত্র দেখাতে পারেননি।
নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের হিসাবমতে, বিগত ৪ বছরে জেলায় আবাদি জমি কমেছে সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর। তিন ফসলি ও চার ফসলি এসব আবাদি জমি এমন আশঙ্কাজনক হারে কমে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কৃষি বিভাগ।
উপজেলা কৃষি কর্মকতা হারুনর রশীদ বিটিসি নিউজকে জানান, পুকুর খনন বন্ধে তিনি কৃষকদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। গত ৫ বছরে গুরুদাসপুরে পুকুর খননের কারনে কৃষি জমি কমেছে ২২০ হেক্টর। তবে উচ্চ ফলনশীল জাতের বিভিন্ন ফসল উৎপাদনের কারনে খাদ্য ঘাটতে রোধ করা সম্ভব হচ্ছে।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.তমাল হোসেন বিটিসি নিউজকে জানান,পুকুর খননরোধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে ব্যক্তি সচেতনতা ছাড়া পুকুর খনন বন্ধ করা সম্ভব নয়।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.