নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীর প্রচারণায় সরব রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান!


নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোহা: মোকবুল হোসেনের আপন বড়ভাই আবুল হোসেন ২০১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ভোটে অংশ নেন। ওই নির্বাচনে স্বয়ং রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান তার ভাইয়ের পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় মাঠে সরব ছিলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত নৌকার প্রার্থীর কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন বিএনপি প্রার্থী।
আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার স্বাক্ষরিত প্রত্যয়ন পত্রের একটি কপি সাংবাদিকদের হাতে এসেছে। প্রত্যয়ন পত্র থেকে এমনটাই জানা গেছে। এসবের পরও প্রফেসর মোকবুল হোসেন রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান পদে বহাল থাকায় ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
জানা গেছে, রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোহা: মোকবুল হোসেনের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের ফুরশেদপুর গ্রামে। পারিবারিকভাবে তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।
প্রফেসর মোকবুল হোসেনের আপন বড়ভাই আবুল হোসেন ২০১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ফতেপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে অংশ নেন এবং শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন।
সূত্র জানায়, ওই নির্বাচনে স্বয়ং রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান ভাইয়ের পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় সরব ভূমিকা পালন করেছিলেন। ইউনিয়নের ফুরশেদপুর, মাধবপুর, মির্জাপুর, ভাসুরা, আলিসাহাপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করেন প্রফেসর মোকবুল হোসেন। তবে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকার প্রার্থী ইসরাইল হকের কাছে পরাজিত হতে হয় তার ভাইকে।
সূত্র আরো জানায়, প্রফেসর মোকবুল হোসেনের ভাই আবুল হোসেন নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পরই আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করার অপচেষ্টা চালান তারা। তবে এর পূর্বে তাদের কয়েকবার দল পরিবর্তন করার অভ্যাস থাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দলে নেন নি। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, প্রফেসর মোকবুল হোসেন বংশীয়ভাবে স্বাধীনতার মতাদর্শ বিরোধী। তার ছোটভাই তোফাজ্জল হোসেন বুলবুলও নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। তবে গা ঢাকা দেয়ার জন্যই আওয়ামী লীগের সাথে সম্পৃক্ত হতে চেষ্টা করছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খাইরুল ইসলাম জানান, প্রফেসর মোকবুল হোসেন ও তার ভাইয়েরা ২০১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রত্যেক ওয়ার্ডে বিএনপির পক্ষে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। তবে সম্প্রতি আওয়ামী লীগে যোগ দেয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছেন তারা।
নেজামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, “আমি হলফ করে বলতে পারি, প্রফেসর মোকবুল বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। তবে রহস্যজনকভাবে তিনি শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান হয়ে গেছেন তিনি। এতবড় পদে তিনি কীভাবে গেলেন, আমরা বুঝতে পারছি না।” নাচোল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা বলেন, “আগাগোড়া বিএনপির সাথে জড়িত সম্পৃক্ত থেকে এখন আওয়ামী লীগার হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন প্রফেসর মোকবুল হোসেন। তবে এ অপচেষ্টা সফল হবে না।”
এর আগে গত মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারী) বেলা পৌনে তিনটার সময় সাংবাদিকদের নিয়ে দম্ভোক্তি প্রদর্শন করায় রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোহা: মোকবুল হোসেনের বিরুদ্ধে সর্বমহলে সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠে।
এরইমধ্যে তাকে অপসারণের দাবিতে প্রতিবাদী কর্মসূচি ঘোষণা করে রাজশাহী প্রেসক্লাব ও জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদ। প্রতিবাদী কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী মঙ্গলবার (০২ ফেব্রয়ারী) বেলা ১১টায় রাজশাহী মহানগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট প্রেসক্লাব চত্বরে এক বিরাট মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হবে।
রাজশাহী প্রেসক্লাব ও স্মৃতি পরিষদ সভাপতি সাইদুর রহমানের সভাপতিত্ব এবং সাধারণ সম্পাদক আসলাম-উদ-দৌলার সঞ্চালনায় এ মানববন্ধনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, আইনজীবী, চিকিৎসক, সমাজসেবকসহ বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেবেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি আমানুল্লাহ আমান, রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.