নাটোরে ২ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা

নাটোর প্রতিনিধি: কার্যাদেশের চুক্তি ভঙ্গ করে নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের ‘রাইট অব ওয়ে’ থেকে মাটি উত্তোলন করে দীর্ঘ মেয়াদে সরকারি সড়কের মারাÍক ক্ষতি সাধন, সরকারি অর্থ আÍসাৎ করতে সরকারের সঙ্গে বিশ্বাস ভঙ্গ ও প্রতারণার দায়ে নাটোরে দুই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
গতকাল রোববার ঠিকাদার মীর হাবিবুল আলম এবং ঠিকাদার মো. আলমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করেছেন নাটোরের অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এএফএম গোলজার রহমান।
একই সঙ্গে ঠিকাদারদের এই কার্যক্রমের সঙ্গে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে কি না, তা তদন্ত করার জন্য এবং জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে আদালতকে অবহিত করার জন্য সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
গ্রেপ্তারী পরোয়ানা প্রাপ্ত আসামি ঠিকাদার মীর হাবিবুল আলম ওরফে বখতিয়ার (৪৮) নাটোর পৌরসভার উত্তর বড়গাছা এলাকার মীর ফখরুল আলমের ছেলে এবং মীর হাবিবুল আলম ফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
অপর আসামি মো. আলম (৫৭) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ধানমন্ডি এলাকার আব্দুল গফুরের ছেলে এবং রানা বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
আদালত সূত্রে জানা যায়, মামলার নথি পর্যালোচনা করে আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয় যে, ঠিকাদার মীর হাবিবুল আলম এবং মো. আলম কার্যাদেশের চুক্তি ভঙ্গ করে সড়কের ‘রাইট অব ওয়ে’ থেকে মাটি উত্তোলন করে দীর্ঘ মেয়াদে সরকারি সড়কের মারাÍক ক্ষতি সাধন করেছেন। আসামি মীর হাবিবুল আলম এবং মো. আলম সরকারি অর্থ আÍসাৎ করার নিমিত্তে সরকারের সঙ্গে বিশ্বাস ভঙ্গ ও প্রতারণা করেছেন।
নাটোর-বগুড়া মহাসড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এবং রংপুর সড়ক জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান, পাবনা সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সমীরণ রায়, নাটোরের সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম, নাটোর সড়ক বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আমানউল্লাহ আমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত আছেন কি না, তা তদন্ত করতে এবং জড়িত থাকলে দোষীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আদালতকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘গ্রেপ্তারি পরোয়ানা হাতে পেয়েছি। আদালতের নির্দেশ মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’ এর আগে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে সড়কের রাইট ওয়ে থেকে গর্ত করে মাটি সম্প্রসারণ কাজ করেছেন ঠিকাদার।
এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হলে স্ব-প্রণোদিত হয়ে নাটোরের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পুলিশ সুপারকে তদন্তের নির্দেশ দেন নাটোরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সাঈদ।
পরে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপারকে গত ৩০ জুনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। তদন্ত কর্মকর্তা আদালত থেকে আরও সাত দিন সময় নিয়ে গত ৭ জুলাই আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে মীর হাবিবুল আলম ওরফে বখতিয়ার এবং মো. আলমকে অভিযুক্ত করে ৭৪ পাতার তদন্ত প্রতিবেদন দেন পিবিআই ইন্সপেক্টর মো. সোহেব হোসেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে সড়কের দুই পাশ থেকে মাটি কেটে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এক কোটি ৫২ লাখ ৭৮ হাজার ৯২৩ টাকার ক্ষতি করেছেন বলেও উলে­খ করা হয়। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগের অবহেলা বা কোনো কর্মকর্তাকে দায় দেওয়া হয়নি প্রতিবেদনে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.