নাটোরের লালপুরে এসএসসি ফরম পূরণে অতিরিক্ত ফি আদায় করা হচ্ছে

নাটোর প্রতিনিধি:  নাটোরের লালপুর উপজেলার কদিমচিলান ইউনিয়নের চাঁদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এসএসসি ফরম পূরণের অতিরিক্ত ফি আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ফেসবুকে এ সংক্রান্ত খবর ভাইরাল হয়েছে। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজমল শেখ এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিজেই প্রায় দ্বিগুণ ফি আদায় করেছেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এমন তথ্য দিয়েছে। এ সব টাকার কোন রশিদ প্রধান শিক্ষক কাউকে দেননি। এদিকে স্বেচ্ছাচারিতার মধ্য দিয়ে মোটা অংকের ফি আদায়ের বিষয়ে ইউএনও বা ডিসি বরাবর অভিযোগ দিয়েও কোন লাভ হবে না বলে ওই প্রধান শিক্ষক সাংবাদিকদের প্রকাশ্যে জানিয়েছেন।

পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা জানিয়েছেন, বিজ্ঞান শাখায় ২৫ জন পরীক্ষার্থীদের কাছে থেকে নির্ধারিত ১৯৭০ টাকার বদলে ৩১৫০ টাকা ও মানবিক শাখার ৭৮ জন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ১৮৭০ টাকার বদলে ৩০৫০ টাকা আদায় করেছেন । এছাড়া ফরম পূরণের তারিখ শেষ হওয়ার পরে অতিরিক্ত সময়ের জন্য জরিমানা সহ ৩৫৫০ টাকা আদায় করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ওই প্রধান শিক্ষক প্রায় দেড় লাখ টাকা অতিরিক্ত টাকা আদায় করেছে।

বিজ্ঞান শাখায় এবারের পরীক্ষার্থী ও ঘাটচিলান গ্রামের দরিদ্র কৃষক মুকুল হোসেনের মেয়ে রাহিমা আক্তার মনি বিটিসি নিউজকে জানান, ফরম পূরণের সময় প্রধান শিক্ষক পরিস্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন ৩১৫০ টাকা দিতে হবে, ওই ব্যাপারে কোন কথা বলা যাবে না। ফি দিলে ফরম পূরণ হবে, অন্যথায় হবে না।

পরীক্ষার্থী আশা খাতুনের বাবা আছেদ আলী বিটিসি নিউজকে জানান, অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষ করে কোন মতে সংসার চালান তিনি। তিনি মেয়েকে শিক্ষিত করে ভালো ঘরে বিয়ে দেয়ার স্বপ্ন দেখেন। সমিতি থেকে সুদে টাকা এনে মেয়ের ফরম পূরণের ৩১৫০ টাকা দিয়েছেন তিনি। ঠিক এরকমই পরীক্ষার্থী সুমাইয়া, নুজবা, আবৃত্তি, আমিরুল, জিতু, মেহেদি ফরম পূরণে অতিরিক্ত ১১৮০ টাকা, সাথী আক্তার লতা ও হোসনে আরা অতিরিক্ত ১৬৮০ টাকা করে প্রধান শিক্ষককে প্রদানের কথা স্বীকার করেছেন।

এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক আজমল শেখ বিটিসি নিউজকে বলেন, যে সকল পরীক্ষার্থী অতিরিক্ত ফি দিয়েছে বলে যে অভিযোগ জানিয়েছে তা সত্য নয়। তবে টাকা নেওয়ার রশিদ কেন শিক্ষার্থীরা পেলো না জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

পক্ষান্তরে তিনি আরও বলেন, এ ব্যাপারে শিক্ষা অফিসার, ইউএনও বা ডিসি সাহেবের কাছে অভিযোগ করে আপনাদের (সাংবাদিকদের) কোন লাভ হবে না।

কদিমচিলান ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম রেজা মাস্টার বিটিসি নিউজকে বলেন, আমি নিজে একজন অতি দরিদ্র পরীক্ষার্থীর জন্য মানবিক শাখার নির্ধারিত ১৮৭০ টাকা নিতে প্রধান শিক্ষককে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু এই অনুরোধও তিনি রাখেননি। তিনি ৩০৭০ টাকা থেকে ১টি টাকাও কম নেননি।

লালপুরের ইউএনও উম্মূল বাণী দ্যুতি বিটিসি নিউজকে জানান, অতিরিক্ত ফি আদায় করলে অবশ্যই প্রধান শিক্ষক অন্যায় করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

জেলা শিক্ষা অফিসার রমজান আলী আকন্দ বিটিসি নিউজকে জানান, এ বিষয়ে অভিযোগের সত্যতা মিললে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.