নাগেশ্বরীতে টাকা দিতে না পারায় প্রসূতিকে ভর্তি নেয়নি হাসপাতাল, বাড়ি ফিরে ৩ কন্যার জন্ম

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: গভীর রাতে প্রসব ব্যাথা নিয়ে সরকারি হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকে টাকা দিতে না পেরে বাড়ি ফিরে তিনটি মেয়ে সন্তান জন্ম দিলেন গৃহবধূ।

অভিযোগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীকে নিয়ে গেলে কাছে আসেনি কেউ। রোগীর অবস্থা খারাপ বলে সদর হাসপাতাল যেতে বলে। সেখানে ১৪ হাজার টাকা চাওয়া হয়।

পরে ৫০টাকা দিয়ে রোগী নিয়ে কয়েকটি বেসরকারি ক্লিনিকে কথা বললে চিকিৎসক নেই জেনে বাড়ি ফিরে ভোর রাতে স্বাভাবিকভাবেই তিনটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ওই প্রসূতি। একটি নবজাতক মারা গেছে। বর্তমানে দুইটি শিশু ও মা অসুস্থ রয়েছে।

স্বজনরা জানান, উপজেলার বেরুবাড়ী ইউনিয়নের ওয়াব্দাবাজার গাছপাড়ী এলাকার ভ্যানচালক আয়নাল হোসেনের অন্তঃস্বত্তা স্ত্রী আর্জিনা বেগম গত ১১ অক্টোবর রাতে প্রসব বেদনা উঠলে নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ক্রিটিক্যিাল বলে সদর হাসপাতালে যেতে বলে। সেখানে ৫০টাকা দিয়ে রোগি নামিয়ে উপজেলা শহরের কয়েকটি ক্লিনিকে যোগাযোগ করলে চিকিৎসক নেই জানিয়ে ভর্তি নিতে নেয়নি।

পরে অসুস্থ আর্জিনাকে তার বাবার বাড়ি নাগেশ্বরী পৌরসভার হাসেমবাজার তেলিটারীতে নেয়া হয়। ওই বাড়িতে ভোরবেলা তিনটি মেয়ে সন্তান জন্ম দেয় আর্জিনা। দুপুরে একটি নবজাতক মারা যায়।

রোগীর স্বজন নাজিনা বেগম, আব্দুর রহমান, আবুবক্কর সিদ্দিক ও শেফালী বেগম জানায়, গভীর রাতে অসুস্থ্য রোগী নিয়ে নাগেশ্বরী হাসপাতালে গেলে ডাক্তার-নার্স কেউ ছুইয়ে দেখেননি। পরে সেখানে একজন বলেন ১৪হাজার টাকা হলে চিকিৎসা করা হবে। পরে টাকা নাই বললে ৫০টাকা দিয়ে রোগী নিয়ে আসি। জনতা, উত্তরণসহ কয়েকটি ক্লিনিকে যোগাযোগ করলে সবাই ডাক্তার নেই বলে রোগি ভর্তি না করে ফিরিয়ে দেন।

আর্জিনার বাবা কাছু মিয়া ও মা আমিরন বেগম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, সরকারি হাসপাতালে গিয়েও চিকিৎসা পাইনি। বাড়িতে এসে ভোরে বাচ্চা হয়। একটি মেয়ে মারা গেছে ডাক্তারের অবহেলার কারণে। হাসপাতালে নিলে এমনটা হতো না। রাতে হাসপাতালে উত্তরণ ক্লিনিকের ম্যানেজার আব্দুর রউফ ছিলেন।

উত্তরণ ক্লিনিকের ম্যানেজার আব্দুর রউফ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, রোগীর অবস্থা খারাপ থাকায় হাসপাতালের লোকজন সদরে নিয়ে যেতে বলেন। হাসপাতালের কেউ টাকার কথা বলেছে কি না তা আমার জানা নেই। তারা আমার প্রতিবেশি বলে আমাকে সাথে নিয়ে গেছে। যখন জানতে চেয়েছে কি করা যায়, বলেছি বাইরে সিজার করালে ১৩/১৪হাজার টাকা লাগবে।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবুবক্কর সিদ্দিক বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, এরকম ঘটনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঘটার সুযোগ নেই। এরপরও লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। অভিযোগ পেলে ক্ষতিয়ে দেখা হবে। কারও অবহেলা থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি মো. হাফিজুর রহমান হৃদয়। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.