নাক ডাকলে কী করবেন?

বিটিসি নিউজ হেল্থ ডেস্কনাক ডাকার এই সমস্যা থাকলে অনেক সময় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। যিনি নাক ডাকেন তিনি ঘুমিয়ে থাকেন বলে বিরক্তিটা বুঝতে পারেন না। কিন্তু অন্যের জন্য খুবই অস্বস্তির কারণ এটি।

ঘুমের মধ্যে অনেকের শ্বাস-প্রশ্বাসে অস্বাভাবিক শব্দ হয়।  নাক ডাকার এই সমস্যা রয়েছে এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়।

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, মাঝবয়সীদের মধ্যে ৪০ শতাংশ পুরুষ ও ২০ শতাংশ নারী ঘুমের মধ্যে নাক ডাকে। সম্প্রতি গবেষণায় উঠে এসেছে, গড়ে প্রতি দু’জন ব্যক্তির মধ্যে একজন নাক ডাকেন।

দীর্ঘদিন নাক ডাকার সমস্যা থাকলে সেটি ধীরে ধীরে শরীরে রোগ ব্যাধির জন্ম দেয়। জার্মানির মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক বলছেন, দীর্ঘ দিনের নাক ডাকার সমস্যায় হৃদপিণ্ডের ডান এবং বাঁ দিকের ভেন্ট্রিকুলারের মারাত্মক ক্ষতি হয়। বেড়ে যায় স্লিপ অ্যাপনিয়ার (Sleep Apnea) ঝুঁকি। ফলে ঘুমের মধ্যেই ঘটে যেতে পারে হার্ট অ্যাটাক।

নাক ডাকার কারণ:
# তাদের মতে, কোনও কারণে ঘুমের মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাসের গতিপথ বাধাপ্রাপ্ত হলে শ্বাসনালীতে প্রবেশ করা বাতাস শ্বাসযন্ত্রে কাঁপুনির সৃষ্টি করে। ফলে নাক ডাকার শব্দ হয়।

# আবার শরীরের ওজন মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি পেলে পেট ও বুকের উপর চাপ সৃষ্টি হয়। এতে নাক ডাকার সমস্যা হয়। অনেক সময় চিৎ হয়ে শুয়ে থাকলে জিহ্বা মুখের মধ্যে পিছনে চলে গিয়ে শ্বাসনালী বাধাগ্রস্ত করে। ফলে নাক ডাকার শব্দ হয়।

# অতিরিক্ত মদ্যপান, ধূমপান বা ঘুমের ওষুধ খেলে নাক ডাকার সমস্যা হতে পারে। থাইরয়েডের সমস্যাও নাক ডাকার অন্যতম কারণ।

কী করবেন?
নাক ডাকার সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।

# আপনার যদি নাক ডাকার সমস্যা থাকে তাহলে আপনি মাখন গরম করে গলিয়ে নিয়ে নাকের দুই ছিদ্রে ১ ফোঁটা করে দিতে পারেন। প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার সময় ও সকালে ঘুম থেকে উঠে কিছুদিন এটা করলে উপকার পাওয়া যাবে।

# রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ১ গ্লাস উষ্ণ পানিতে আধা চামচ এলাচের গুঁড়ো মিশিয়ে খেয়ে নিলে নাক ডাকার সমস্যা দূর হতে থাকে।

# খাবার গ্রহণে একটু সাবধান হউন। রাত ৮ টার পর ভারি খাবার একেবারে পেট ভরে খাবেন না। সাধারণত সন্ধ্যার পর মানুষের পাচনযন্ত্রের গতি মন্থর হয়ে যায়। অতিরিক্ত খাবার খেলে সমস্যা সৃষ্টি হয় এবং নাক ডাকা শুরু হয়।

# নাক ডাকার সমস্যা দূর করতে জীবনযাপনে কিছুটা সচেতন হতে হবে। রাতে বা অন্য কোনও সময়ে খাওয়ার ঠিক পরেই শোবেন না। একটু সময় নিয়ে বা কিছুক্ষণ হাঁটাচলা করে তারপর ঘুমানো ভাল। এতে হজমের সমস্যা দূর হয় এবং শ্বাসকষ্টের ঝুঁকি কমায়।

# শোয়ার সময় চিৎ হয়ে না শুয়ে বরং এক পার্শে কাঁত হয়ে শোয়ার অভ্যাস করুন। এতে নাক ডাকা অনেকটাই কমে যাবে। তবে নাক ডাকার আওয়াজ অস্বাভাবিক হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.