নবীগঞ্জে নাদাম পুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষই প্রধান শিক্ষিকার, বাসভবন 

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি: নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের নাদাম পুর  উচ্চ বিদ্যালয়ের দুটি শ্রেণিকক্ষকে আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহার করছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষিকা। তবে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার দাবি, পরিবার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষিকা মিসেস মরিয়ম বেগম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে বসবাস করলেও বিষয়টি তার জানা নেই।
স্থানীয়দের অভিযোগ, শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের মাধ্যমেই তিনি সেখানে বসবাস করছেন। ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয় ভবনটির দ্বিতীয় তলায় দুটি শ্রেণিকক্ষে মা-সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন মিসেস মরিয়ম বেগম। দুটি শ্রেণিকক্ষের ভিতরে প্লেট বাসার মত দামি খাট আসবাবপত্র সহ অনেক দামি মালামাল রয়েছে। ঘর সাজানোর জন্য নানান রকমের আসবাবপত্র নিজের বাসার মতো তৈরি করে নিয়েছেন তারা।
এছাড়া গ্যাস সিলিন্ডার ছাড়া বিদ্যুৎ, কারেন্ট প্রতিষ্ঠানের ভাল প্রজাতির গাছের ডালপালা ব্যবহার হচ্ছে রান্নার চুলার আগুনের কাজে। ছাত্রীদের ব্যবহারের টয়লেটও দখলে নিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষিকা বলেন, গত ৫ বছর যাবৎ তিনি স্পেশাল থাকার রুম  হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন এবং তিনি জানান প্রতিমাসের রুম ভাড়া বাবদ ম্যানেজিং কমিটিকে টাকা দিয়ে আসছেন।
তিনি আরো বলেন বিগত ১৮ সাল থেকে ঐ দুটি শ্রেণীকক্ষে বাসস্থান হিসেবে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন উক্ত প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি খালেদ আহমেদ পাঠান সহ কমিটির সকল নেতৃবৃন্দ। আমি বিদ্যালয়ের অব্যহৃত কক্ষেই বসবাস করি, এটা সবাই জানে। আপনি শিক্ষা অফিসারকে জিজ্ঞাস করেন।
একপর্যায়ে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বিটিসি নিউজকে বলেন, ‘আমি এইখানে থাকি, আপনাদের সমস্যা কী? আপনারা যা পারেন করেন। ওই এলাকার একাধিক অভিভাবক জানান, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সাহায্য নিয়েই দীর্ঘদিন ধরে মিসেস মরিয়ম বেগম  বিদ্যালয়ের কক্ষ দুটি দখল করে বসবাস করছেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা হওয়ায় কেউ তাকে কিছু বলার সাহস পায় না।
ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নোমান আহমেদ বিটিসি নিউজকে বলেন, ওই প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে পরিবার নিয়ে থাকছেন। তার জন্য আসলে আলাদা করেও বাসভবনের ব্যবস্থা নেই।
তবে বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটিকে জানিয়ে অনুমতি নেয়া উচিত। আর এবিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সহ কয়েকজনের সাথে আলাপ করছি বিষয় টি দেখব।
এক অভিভাবক বিটিসি নিউজকে জানান প্রধান শিক্ষকের থাকার জন্য বিদ্যালয়ে কোনো কক্ষ বরাদ্দ দেয়া নেই। ওই শিক্ষক অনেক আগে থেকেই বিদ্যলয়ে বসবাস শুরু করেছিলেন। পরে আমরা তাকে নেমে যেতে বলার পর তিনি কক্ষ ছেড়ে যান নি।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি খালেদা আহমেদ পাঠান তার ব্যাবহৃত মোবাইল ফোনে বার বার কল দিলেও ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ আলম বিটিসি নিউজকে বলেন, আমার জানামতে প্রধান শিক্ষিকা শ্রেণিকক্ষে  নিজ বাসভবন বানিয়ে থাকবেন এটা এখতিয়ারে নেই। শ্রেণিকক্ষ দখল করে থাকার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এ  ব্যপারে আপনি লিখিত ভাবে অভিযোগ করেন। খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনুপম দাস অনুপ বিটিসি নিউজকে বলেন, বিষয়টি আমারও জানা নেই। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলব সরেজমিনে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি মো: আলাল মিয়া। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.