নওগাঁ-১ আসনে ধানের শীষ মোস্তাফিজুরকে দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ

নওগাঁ প্রতিনিধি: নির্বাচনের নয়দিন আগে নওগাঁ-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তন হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ডা: ছালেক চৌধুরীর পরিবর্তে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানকে ধানের শীষ প্রতীক দেয়ার নির্দেশ প্রদান করেছেন হাইকোর্ট। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় চলছে নানান গুঞ্জন। এতে করে তৃনমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা পেড়েছেন বিভ্রান্তের মধ্যে। শুরু হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রীয়া। আর এভাবে চলতে থাকলে বিএনপি এ আসনটি হারাতে পারে বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা।

জেলা সার্ভার স্টেশন সূত্রে জানা যায়, তিনটি উপজেলায় (সাপাহার-পোরশা-নিয়ামতপুর) ২০ টি ইউনিয়ন নিয়ে এ আসনটি গঠিত। যেখানে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ২ হাজার ৬২২ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৩ হাজার ৭৩৩ এবং পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯৮ হাজার ৮৮৯ জন।

জানাগেছে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নওগাঁ-১ আসন (সাপাহার-পোরশা-নিয়ামতপুর) ধানের শীষ প্রতীকে মোস্তাফিজুর রহমানকে মনোনীত করেন। কিন্তু ৯ ডিসেম্বর প্রার্থীতা প্রতাহারের শেষ দিনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে মোস্তাফিজুর রহমানের পরিবর্তে সাবেক সাংসদ নিয়ামতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ডা: ছালেক চৌধুরীর নাম আসে।

আদালতে রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টরে এক আদেশে ডা: ছালেক চৌধুরীর পরিবর্তে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানকে ধানের শীষ প্রতীক দেয়ার নির্দেশ প্রদান করেছেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু। আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন, অ্যাডভোকেট আশরাফ আলী, ফারজানা শারমিন পুতুল ও ব্যারিস্টার আবু বকর সিদ্দিক। আদালতের নির্দেশে এ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করতে মোস্তাফিজুর রহমানের আর কোন বাধা থাকল না।

এ আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের হেভিওয়েট প্রার্থী সাধনচন্দ্র মজুমদার এ আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী। শুরু থেকেই তিনি একক ভাবে প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগ করছেন। এতে করে তিনি অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন। কিন্তু বিএনপি শুরু থেকে ডা: ছালেক চৌধুরী ও মোস্তাফিজুর রহমানের মধ্যে রদবদল হচ্ছে। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ পর্যায়ে ডা: ছালেক চৌধুরীকে মনোনীত করা হয়। প্রতীক পাওয়ার পর থেকে তিনি মাঠে প্রচার প্রচারণা শুরু করেছিলেন। কিন্তু আবারও এ আসন থেকে প্রার্থীর পরিবর্তন হয়ে মোস্তাফিজুর রহমানকে ধানের শীষ প্রতীক দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে বিএনপির তৃনমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীা পেড়েছেন বিভ্রান্তের মধ্যে। শুরু হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রীয়া। কার পক্ষে প্রচারণা করবে বিএনপির তৃনমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। আর এভাবে চলতে থাকলে বিএনপি এ আসনটি হারাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন নেতারা। ফলে জয়ের সম্ভবনা ক্ষীণ।

পোরশা উপজেলা বিএনপি নেতা ইসকরাফ হোসেন বলেন, এভাবে প্রার্থী পরিবর্তনে তৃনমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে অনেক বিভ্রান্ত শুরু হয়েছে। কার পক্ষে প্রচারনা করবে তা বুঝে উঠতে পারছেন না। এটা পরিস্কার হয়ে না উঠা পর্যন্ত কি হবে বুঝাও যাচ্ছেনা। এভাবে চলতে থাকলে জয়ের আশা আর কতটুকু বা করা যায়।

ধানের শীষ প্রতীক পাওয়া মোস্তাফিজুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে ডা. ছালেক চৌধূরী বলেন, দলের মনোনয়ন দেয় দল। হাইকোর্ট দেয়না। এখন পর্যন্ত আমিই আছি। দল যদি মনোনয়ন দেয় তাহলে আমি আছি। আর হাইকোর্ট যদি সব মনোনয়নের মালিক হয় তাহলে হাইকোর্ট।

নওগাঁ জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব নাজমুল হক সনি বলেন, প্রতীক হচ্ছে দলীয় হাইকমান্ডের বিষয়। সেখানে প্রার্থী পরিবর্তন করা হয়েছে। শুরুতে মোস্তাফিজুর রহমানকে মনোনীত কর হয়। তিনি মাঠ বেশ গুছিয়ে নিয়েছিলেন। পরবর্তিতে আবার ডা. ছালেক চৌধূরীকে মনোনীত করা হয়। এভাবে প্রার্থীর রদবদলে নেতাকর্মীরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন। এতে করে নির্বাচনে জয়লাভে কিছুটা বিঘœ সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করছেন তিনি।

উল্ল্যেখ, এ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী ছাড়াও আরো চারজন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তারা হলেন, আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে সাধন চন্দ্র মজুমদার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশর হাত পাখা প্রতীকে মোস্তাফিজুর রহমান, জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে আকবর আলী কালু এবং বাসদের মই প্রতীকে মঙ্গল কিস্কু।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নওগাঁ প্রতিনিধি মো: আব্বাস আলী।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.